ভাঙ্গা মনের পুরাণ – ছলন
জঙ্গলমহলের লালমাটিয়া আদিম পরিবেশের সঙ্গে লোক দেবদেবীর আটনের বড়ো আন্ত রিক যোগাযোগ।প্রকৃতি পরিবেশে যেখানেই একটু বিস্ময়ের,রহস্যের,আতঙ্কের ছোঁয়া….. সেখানে ই লোকদেবতা তাঁর আসন টুকু পেতেছেন । তাঁকে ঘিরে রয়েছে প্রকৃতির অনাবিল পরিবেশ…..অক্ষোদিত শিলাখন্ড , মাটির বেদী, পোড়া মাটির কিছু মূর্তি বা ”ছলন ”……এই তার আরাধনা র মন্দির ও উপাচার ।
প্রতিটি লোক দেব দেবীর ”থানে ‘ ‘ বা আটনে হাতির মুর্তির আধিক্য॥এই জঙ্গলমহলে হাতির উপদ্রব সেই প্রাচীন কাল থেকেই চলছে! দলমা র দামাল রা প্রতি বছরই আসে…ঝাড়খন্ড থেকে পশ্চিমবঙ্গ হয়ে ওড়িশা ……এই তাদের যাত্রাপথ।এই যাত্রা পথের দুপাশে যত লোকদেবতার আটন সবেই হাতিমুর্তির উপস্হিতি॥
কোন লোক দেবতাই আচ্ছাদনের নিচে আসন পাতেন নি ! ছাদ ঢাকা মন্দিরে তাঁদের অবস্হান ন ।গাছ তলায়, ডুঙ্গরি টিলা,টাড়ে …নদীর চরায় তাঁদের অবস্হান । প্রতিটি লোক দেব দেবীর পূজা পদ্ধতি লৌকিক ও ছলন বা ঢিল বেঁধে ”মানত” করার প্রথা॥হাতির মতই .ঘোড়া র ছলন ও দেখা
যায় । মানতের জন্য ঘোড়া র ছলন ই বাঁধা হয়।
ঘোড়া শক্তির প্রতীক । এই অঞ্চলে সম্পদশালী ব্যক্তি…রাজা বা জমিদার ছাড়া আর কারুর কাছে ঘোড়া থাকতো না ! তাই দুর্লভ বস্তুর প্রতি সহজ আকর্ষণ এবং কুমোরের চাকে সহজে বানানো যায়
তাই এই ঘোড় র ছলন এত প্রচলিত॥
মা সাঁতাই বুড়ি , দুয়ারসিনি বুড়ি , বাবা কালুয়া ষাঁড়,,মা সনকা ,কিংবা বাবা বাঁশিরায়জিউ ….সব জায়গাতেই ছলন বাঁধার রীতি॥
একই ভাবে এখান কার প্রাচীন দেব দেউল গুলি যেমন….রামেশ্বর শিব মন্দির , ,, মা সর্বমঙ্গলা মন্দির …কিংবা কর্ণ গড়ে র মা মহামায়া র দেউল সব জায়গাতেই মানত করার একই প্রথা….ঢিল বা
ছলন বাঁধা॥ মানুষএর আন্তরিক কামনা র বহিঃ প্রকাশ এগুলিই……..
নমি নমি চরনে …..॥