Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » কচ থেকে নিকচ || Samarpita Raha

কচ থেকে নিকচ || Samarpita Raha

একবার আন্নু ওরফে সমর্পিতা আর মিঠু ওরফে মৌসুমী দুই বান্ধবী… মিঠুর মাসির বাড়ি গড়িয়াতে বেড়াতে যাবে বলে ঠিক করল। আন্নুর সাজ আর মিঠুর সাজ পুরোই উল্টো। আন্নু আধুনিক পোশাক পরে ,চুল ছোট আর অপরদিকে মিঠু স্টাইলিশ,কিন্তু শাড়ি পরতে ভালোবাসে। সে নাকি রোগা তাই শাড়ি পরে। ঐ এখনকার মেয়েরা যাকে জিরো ফিগার বলে,ওটা হবার জন্য খাওয়া বন্ধ,জিম ইত্যাদি ইত্যাদি।
আজ থেকে পঁচিশ বছর আগে ঐ জিরো ফিগারকে বলে রোগা।স্লিম হলে কি হবে তার মত কেশবতী কন্যা কম দেখা যেত।

মিঠু আর আন্নু নর্থের ট্রেন চেপে শিয়ালদহে এসে সাউথের ট্রেন চেপেছে ,গড়িয়ায় নামবে।
ট্রেনে প্রচন্ড ভীড়,অফিস টাইম ছিল। ওরা জেনারেলেই উঠেছিল।
গড়িয়ায় ট্রেন থামতেই আধুনিক জামা পরা আন্নু নেমে যায়।মিঠুও অনেক কষ্টেই শাড়ির কুচি প্রায় খুলেই ট্রেন থেকে নামে।ট্রেন ছাড়ব ছাড়ব ,মিঠুর বিনুনিতে টান।আরে ওর চুল ,মানে ওর বিনুনি ট্রেনে রয়ে গেছে।
ও ঐ কুচি খোলা শাড়ি নিয়ে লাফাচ্ছে ও দা..দা ..আমার চুল।ওফ কি করুণ দৃশ্য।
ঊনিশ -কুড়ি বছরের মেয়ে বাঁদরের মতো লাফাচ্ছে…প্লাটফর্মে বেশ ভীড়।আমরা ট্রেনে ওঠতে চেষ্টা করলাম ..এত ভীড় উঠব কি! যাদের বিনুনি ট্রেন থেকে নামতে পারছে না।
তখন আমি বিরুনি টেনেই যাচ্ছি ঠিক ঘুড়ির সুতার মত। মিঠু যদি লাঠাই হয়,মনে করুন আমার ঘুড়ি কারর বাড়ির কার্নিশে আটকে গেছে।

ট্রেন চলতে শুরু করেছে …আমি যখন প্রায় প্ল্যাটফর্মের মাঝামাঝি …তখন চুলের তলার গার্ডার হাতে স্পর্শ হয়। আমি ছুটে ছুটে চুল বার করছে আর মিঠু আমার পিছন পিছন ছুটছে ,চুলে টান পরলেই বেচারী আ আ করছে।
শেষ পর্যন্ত ৫ফুট ৫ইঞ্চির চুল উদ্ধার হয়েছিল।

মিঠু খুব সুন্দর শ‍্যামবর্ণ,লম্বা বিশাল বড় বড় চোখ …।

সেই মুহূর্তে বিস্ফোরিত চোখে আমার দিকে চেয়ে বলল ..শোন আন্নু এই যাত্রায় বল আমার চুলটা রক্ষা পেল।

আমি মিঠুকে বলি…তোর চুল কি..??
একটু হলেই তুই লাঠাই থেকে ঘুড়িহয়ে ট্রেনের মাথায় উড়তিস। আর শোন মিঠু প্রাণ বাঁচাতে চাস তো বড় কাঁচি নিয়ে বার হবি। অবস্থা বুঝে কুচুত।

মাঝে বহু বছর কেটে গেছে ।দুজনেরই বিবাহিত জীবন।
হঠাৎ দেখা দুই সখির।ওমা ওকি সেই মিঠু এখন সুস্বাস্হ ,কিন্তু ঐ চুলে আধুনিকতার বপ ছাট।
আমি জিজ্ঞেস করি তোর চুল!!
ও বলল জানিস চুল না কাটলে অফিস ছেড়ে আমার চুল পাহারা দিতে হত তোর স্বপনদা কে।তাই কুচুত করে পার্লারে গিয়ে কেটে ফেলেছিলাম।
মেয়ে,সংসার দেখব, না আমার চুল দেখব।আমি বুঝদারের মত বললাম হুম।
আর বলল দেখ আমার মেয়ে কলেজে পড়ে তাও বয়কাট চুল।ঘাড়ে চুল থাকলেই অসুবিধা।
এই স্মৃতি একান্তে থাকলেই মনে পড়ে।আপনমনে স্মৃতিচারণ করে হাসি।
আর ভাবি কোথায় হারিয়ে গেল সেই সব বন্ধুত্বের দিন।তবে ফেসবুকে আবার বন্ধুকে খুঁজে পেয়েছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress