বিবাহ না বর্বর প্রথা
বহু যুগ ধরে আমাদের সমাজে একটা বর্বর প্রথার প্রচলন আছে, যাকে ভদ্র সমাজ বিবাহ আখ্যা দিয়ে থাকেন।
হয়তো যখন এই প্রথা শুরু হয় তখন আত্মার সম্পর্কের
নিরিখে বিচার করা হয়েছিল।
তবে এই প্রথা আত্মার মিলনে সীমাবদ্ধ থাকেনি,
ক্রমে ক্রমে তা নিষ্ঠুর বর্বর প্রথায় পরিণত হয়েছে।
ঈশ্বর মানুষ সৃষ্টি করে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন, আর
মানুষ লিঙ্গ ভেদে নারী আর পুরুষকে আলাদা করেছে। আমাদের সমাজে পুরুষদের মানুষ হিসেবে দেখা হল
আর নারীদের শুধুই নারী, মানুষ তারা না।
সমাজ নারীদের শিক্ষার অধিকার, বেঁচে থাকার অধিকার
থেকে বঞ্চিত করেছে বহু যুগ ধরে
তাদের বিবাহ নামক প্রথার দ্বারা জোর পূর্বক অন্ধকূপের
মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়েছে,হত্যা করা হয়েছে তাদের
আনন্দ, হাসি, সুখ আর স্বপ্নকে।
জন্মের পর থেকে প্রতি মুহূর্তে তাদের বোঝানো হয়েছে
তাদের জীবন তাদের নিজের জন্য নয়,
তাদের স্বপ্ন দেখা বারণ আনন্দ -হাসি তাদের জন্য নয়
তাদের জীবনের সব কিছু অন্য একজন পুরুষকে ঘিরে।
তাদের ছোট থেকে শেখানো হয়, সবচেয়ে সেরা যে খাবার
সেটা তার ভাইয়ের জন্য, স্বামীর জন্য তার জন্য নয়,
কারণ সে একজন মেয়ে, ভালো খাবার খাওয়ার অধিকার তাদের নেই
রাজা রামমোহন রায় ,বিদ্যাসাগর মহাশয়ের মতো মহাপুরুষেরা প্রথম মেয়েদের বাঁচার স্বপ্ন দেখতে শিখিয়েছেন
তাই বর্তমান যুগের মেয়েরা শিক্ষিত হচ্ছে, চোখে অনেক
স্বপ্নের জাল বুনছে আর সেই স্বপ্ন পূরণ করার লক্ষ্যে
আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে প্রতিকূল পরিস্থিতির সঙ্গে
লড়াই করে।
ছোট বেলা থেকে শুনে আসছি বিবাহ একটা পবিত্র প্রথা
দুটি আত্মার মিলন,
কিন্তু সত্যি বলতে একটা মেয়ে জানে বা হৃদয় দিয়ে অনুভব করে বিবাহ পবিত্র প্রথা না।
বিবাহ একটা বর্বর প্রথা যেখানে মেয়েদের পণ্য করা হয়
তার রূপ দেখে, তার বাবার অর্থ দেখে
এই রকম একটা নিষ্ঠুর বর্বর প্রথার কি কোনোদিন অবসান হবে না?
মেয়েদের শুধুই নারী করে রাখা হবে মানুষ তাদের ভাবা হবে না?
বিবাহ নামক প্রথার প্রয়োজন আছে ঠিকই তবে তা কখনো
নিষ্ঠুরতা আর বর্বরতাকে ছাপিয়ে যাবে না
বিবাহ প্রথা হল দুটি আত্মার মিলন, তাই এই প্রথাকে আত্মার মিলনেই সীমাবদ্ধ রাখা উচিত।