আহাম্মক
বাসে, জানলার ধারে বসে ছিলাম। হঠাৎ দেখলাম, বাইরে একটা লোক বুকে হাত চেপে কষ্টের মুখভঙ্গি করে, রাস্তায় লুটিয়ে পড়ল। বাসটা সবে চলতে শুরু করেছে, আমি কন্ডাকটারকে বাস থামাতে বলে নেমে পড়লাম।
লোকটার কাছে গিয়ে দেখি, অজ্ঞান হয়ে পড়েছে। রাস্তার লোকজন না দেখার ভান করে চলে যাচ্ছে। কয়েকজনকে ডাকলাম, কেউ সাড়া দিল না। শেষে নিজেই একটা ট্যাক্সি ডেকে সরকারী হাসপাতালে নিয়ে গেলাম। আগে লোকটাকে বাঁচানো দরকার, তারপর পরিচয় জানা যাবে।
হাসপাতালে অনেক অনুসন্ধানী প্রশ্নের পর, আমার ভাই পরিচয়ে ভর্তি করে নিল। আমার বাড়ির ঠিকানা ফোন নম্বর লিখে রাখল। বাড়ি ফিরলাম বিকেল পাঁচটা।
মাঝরাতে ফোনের আওয়াজে ঘুমটা ভেঙে গেল। একরাশ বিরক্তি নিয়ে ফোনটা ধরলাম।
– থানা থেকে বলছি।
– বলুন
– যে লোকটাকে আপনি হসপাতালে ভর্তি করিয়েছেন, ও আপনার কে হয়?
– কেউ হয় না স্যার, রাস্তায় পড়েছিল, ভাবলাম, মরে যাবে, তাই তুলে এনে হাসপতালে…..
– জানেন, লোকটা সন্ত্রাসবাদী?
– আমি কি করে জানব, স্যার?
– তা বললে হয়? পরিচয়ে লিখেছেন, আপনার ভাই। এক্ষুনি একবার থানায় আসুন।
– এত রাতে আবার থানায়, স্যার?
– না হলে আমরা, বাড়ি থেকে আপনাকে ধরে নিয়ে আসব।
ঘুমটা ভেঙে গেল। আমি হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম।
স্বপ্ন না হয়ে, যদি এটা সত্যি হতো?
[ ব্যাঘ্রে ভক্ষণ করিবে ভাবিয়া কি নবকুমার, কাষ্ঠ আহড়ণে যাইবে না?
নবকুমারের কোন আত্মজন সঙ্গে থাকিলে বলিত, না যাইবে না।
– আর কেউ না গেলে, ও একা যাইবে কেন আহাম্মকের মতো? ]