Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » এই ভুবনের মধুর দিনের পথিক যত || Premendra Mitra

এই ভুবনের মধুর দিনের পথিক যত || Premendra Mitra

এই ভুবনের মধুর দিনের পথিক যত,
আস্ ল যারা
হাস্ ল যারা
ক্ষণেক ভাল বাসল যারা,
আজকে তারা সন্ধ্যা তোমার
পাকা সোনার
গলার হারে,
গগন পারে
যে-কথাটি গেল থুয়ে,
কপোল ছুঁয়ে
গেল চলে
যাহা বলে,
হায়রে হায়,
হারিয়ে যায়
সকল কথা আসন্ন ঐ অন্ধকারে !

আর যারা সব
বইল বোঝা, সইল ব্যথা,
মনের কথা কইল না ;
ফুলের তরী বাইল শুধু, ফলের কড়ি চাইল না ;
নীড়েতে পাখ্ পুড়্ল যাদের, আকাশে হায় উড়ল না—
ঘুরল না ;
তাদেরও আজ দিবা শেষে
ভালবেসে,
জড়িয়ে বুকে মুছিয়ে আঁখি
অশ্রু-জলে অধর রাখি,
ডাক্ বে না কেউ হায়রে হায় !
জানি, জানি, সন্ধ্যারাণী, দিনের বানী সব বৃথায় !

ধূলা সে যে ধূলাই শুধু
পরশ-পাথর নাইরে নাই,
মিথ্যা বোঝা, মিথ্যা খোঁজা
বৃথা ওরে সব বোঝা-ই ;
মরমে যে মার খেয়েছে
মিথ্যা যে তার সব ওঝাই !
বুকের ভিতর যা থাকে থাক্,
ঢেকেই তা রাখ্ |
ওষ্ঠে প্রিয়ার ভণ্ডামি নাই, নাই পেয়ালায় বুজরুকি,
পরকালের পুঁথি ফেলে, আয়রে হতাশ, আয় দুখী !
আয় রে আয়
দিন যে যায় !
উপবাসী প্রাণ যে চায়
বিপুল নিদারুণ ক্ষুধায় |

যখের কড়ি আগ্ লে আছিস্ মোক্ষ-আশায় মূর্খ কে ?
অর্ঘ্য দে !
এই দেহ তোর দেবতা শুধু,
দিন দুয়েকের স্বর্গ রে !
অর্ঘ্য দে |
মর-দেহের চেয়ে মূর্খ, মোক্ষ নয় মহার্ঘ রে !
অর্ঘ্য দে |
মৃত্যু শাসায়, শুনতে কি পাস্ ?
দেখতে কি পাস্, শ্মশান পাতা সকল ঠাঁই,
বিশ্বজুড়ে চিরটাকাল কালের হাতের নেই কামাই !
ওরে অন্ধ, ওরে হতাশ !
লুট করে নে যেথায় যা পাস্ ;
আকাশ বাতাস,
প্রেমের প্রকাশ,
নারীর দেহে রূপের বিকাশ,
যেথায় যা পাস্ |

ভিখারী তুই আছিস্ ভুখা,
শিকারী সুখ নেয় লুটে,
এ কি রে তোর মনের বিকার—
রইবি খুশী চিরকুটে ?
হাঁক উঠে
মুখ ফুটে
মোক্ষ-মোহের ডোর টুটে’,
“এই জীবন মোর সাধন
স্বর্গ মোর এই ভুবন” !


দুখ যে চায়, দুখ যে পায়,
আর যে সুখের পিছনে ধায় |
দিনের শেষে সব সমান, সব সমান !
পুঁথির পাতায় ধাপ্বাবাজি, পরকালের সব প্রমাণ |

ডাকছে কবি—আয় য়ে আয়
তিলে তিলে, প্রাণ পেয়ালায়
চুমুক দেবার সময় যে যায় !
সময় যে যায় — সময় যে যায়, বাজ্ ছে কালের ডঙ্কারে,
সকল সুখের পাছে আছে সমাপ্তির-ই শঙ্কারে !
শিবের সাথে শ্বস্ ছে রে শব,
সৃষ্টি সাথে ধ্বংসোত্সব
কাল-ভৈরব হুঙ্কারে |

যৌবনের ও মউ-বনে সব মউ-মাছিদের মর্ম্মরে
শুন্ ছি বাজায় বিসর্জ্জনী কঙ্কালেরা পঞ্জরে ;
বাজায় ফুলে বাজায় পাতায়
পাখীর পাখায় লাজুক লতায়,
মুখে, আশায়, ভালবাসায়
সব ভরসায়
বাজায় বাজায় কেবল বাজায় !
—বসন্তেরি রঙিন্ খাতায়
রঙের সাথে কালো কালি-ই লিখছে শমন পাতায় পাতায় |

ওরে তাই—
চোখের জলের সময় যে নাই !
রূপের মেয়াদ দু’দিন মোটে
দু’দিন মেয়াদ যৌবনের ;
প্রিয়ার ঠোঁটের গুল্ বাগে ভাই
ইজারা যে দুই দিনের !
ঠিকানা নেই ঠিকানা নেই
আশার ফানুষ কখন ফাঁসে ;
জীবন স্বপন ভাঙরে তোর
মহাকালের অট্টহাসে !
ভাব্ বি কি আর, করবি বিচার
বৃথা কি আর খাটবি বেগার ?
কালকে প্রিয়ার মুখে পাবি
হয়ত চিহ্ন বলি-রেখার !

আজ দরজায়
তাই ত কবি ডাক দিয়ে যায়—
ফাগুন ফুরায়—
আগুন জুড়ায়—
মধু-মাসের মহোত্সবে দস্যু হয়ে লুটবি কে আয় |
ছিনিয়ে নেবার সাহস যে চাই—
বিনিয়ে কাঁদিস্ কার ভরসায় ?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *