মনে হয় সে এসেছে দ্বারে, আধো অন্ধকারে
আবছা দেখেছি তারে, অনিবারে মনের ভিতরে।
যখনই ভেবেছি তারে, সে এসে দাঁড়ায় দ্বারে
মনে হয় যেন কিছু চায় বলিবারে, বুঝিনি তাহারে।
অস্বীকার করিনা একেবারে স্পষ্ট দেখা যায় না তাহারে
তবু কেন বারে বারে অতুল রহস্য নিয়ে দাঁড়ায় সে দ্বারে।
একদিন চোখ মেলি বাহির দুয়ারে দিগন্তের পারে
দেখি সে দাঁড়িয়ে আছে যুগ যুগ ধরে পৃথিবীর কোলের ভিতরে
দিন রাত একাকার সূর্য চন্দ্র ওঠে বারেবারে,
মেঘ করে বৃষ্টি ঝরে অদৃশ্য হয় সে মেঘের ভিতরে।
আর দেখা যায় নাকো তারে অদৃশ্য হয়ে যায় মেঘের মিনারে
শুধু ব্রহ্ম নাদ শুনি বারেবারে আসে ফিরে ফিরে
অপার রহস্যে ভরা পৃথিবীর প্রত্যন্ত দিগন্তের পারে।
মনে হয় দেখি তারে স্রষ্টার সিংহাসন প’রে
মহাকাল ধ্বজা ধরে বসে আছে যুগযুগ ধরে।
কেউ কি দেখেছে তারে, অনেকে ই চেষ্টা করে
সে রহস্য পারাবারে একবার চিনে নিতে জগৎ স্রষ্টারে।
আদি নাই অন্ত নাই স্বয়ম্ভু বলে তারে জগৎ প্রভুরে।
সকলে কল্পনা করে সে রয়েছে বসে সিংহাসন পরে
পর্বত মিনারে, দূর থেকে অনেকে প্রণাম করে।
কতো দেশ আছে যারা তোড়জোড় করে
লোকজন পাঠায় সে দেব সভায় রহস্যের শেষ দেখিবারে।
অন্তরীক্ষ হতে কেউ উঁকি মারে, দেখে নিতে চায়
কে আছে সেথায়, অতুল রহস্য পারাবারে।
কেউ লুটে নিতে চায় অতুল বৈভব আর অমূল্য রতন
কেউ চায় গুহা মধ্যে কুবেরের ধন।
কেউ চায় নিয়ে যেতে সে পর্বত রাজারে তুলে আপনার দেশে
যেমনটা চেয়েছিল সম্রাট রাবণ, পারেনি সে অন্য কথা
তার সেই বীর গাথা লেখা আছে মহাকাব্য পৌরাণিক স্তরে।
সে রহস্য মিনার থেকে গঙ্গা প্রবাহিত হর ব্রহ্মপুত্র বহে যায়
ব্রহ্মনাদ উচ্চারিত হয়, কাছে গেলে শোনা যায়
রহস্য থেকে যায় কূলকিনারা নাহি হয় বিশ্বচরাচরে,
কেউ বলে দেখেছি তাহারে একমনে ধ্যান করে পাহাড়ের পরে।
সে নাকি ত্রিশূলী শিব, হিমাদ্রি রুদ্রাক্ষী ত্রিলোচন
কাল ভৈরব রূপে এ বিশ্ব ব্রহ্মান্ড কে করে নিরীক্ষণ।
জগতের প্রভু তিনি তার আদি নিবাস ভূমি মহা তপোবান
দেবের ও দেবতা তিনি মহাদেব আদি পিতা ভগবান।
মানস সরোবর আর রাক্ষস তাল ঘিরে আছে সে বিশাল
সোনার পাহাড়, দেব দেবী আসে যায় তীরে বসে গান গায়
সবই তো রহস্যময় সবই মনে হয় ভাবি প্রভু জগন্ময়।