পারুল আপা
স্কুল আমার কাছে দুঃস্বপ্নের মতো ছিল। স্কুলের বাইরের জীবনটা ছিল আনন্দময়। সেই আনন্দের মাঝখানে দুঃস্বপ্নের মতোই উদয় হলেন পারুল আপা। লম্বা বিষাদময় চেহারার একটি মেয়ে। চোখ দুটি অস্বাভাবিক বড়। থাকেন আমাদের একটি বাসার পরের বাসায়।
তাঁর বাবা ওভারশিয়ার। রোগা একজন মানুষ। মাটির দিকে তাকিয়ে হাঁটেন। চিকন গলায় কথা বলেন। নিজের মেয়েদের অকারণ হিংস্র ভঙ্গিতে মারেন। সেই মার ভয়াবহ মার। যে-কোনো অপরাধে পারুল আপাদের দুবার শাস্তি হয়। প্রথমে বাবার হাতে, পরেরবার মায়ের হাতে। শাস্তির ভয়াবহতা সম্পর্কে একটা ধারণা দিই। পারুল আপা একবার একটা প্লেট ভেঙে ফেললেন, সেই প্লেট ভাঙার শাস্তি হল, চুলের মুঠি ধরে শূন্যে ঝুলিয়ে রাখা। পারুল আপা পরিবারের সবচেয়ে বড় মেয়ে। তারা অনেকগুলি বোন, কোনো ভাই নেই, নিয়ম করে প্রতি বছর পারুল আপাদের একটি করে বোন হয়। তার বাবা-মা দুজনেরই মুখ অন্ধকার হয়ে যায়।
যে-সময়ের কথা বলছি তখন পারুল আপার বয়স বারো-তেরো, বয়ঃসন্ধিকাল। বাবা-মার অত্যাচারে বেচারি জর্জরিত। তার মা তাকে ডাকেন হাবা নামে। অথচ তিনি মোটেই হাবা ছিলেন না। তার অসম্ভব বুদ্ধি ছিল। হৃদয় ছিল আবেগ ও ভালোবাসায় পরিপূর্ণ। কোনো-এক বিচিত্র কারণে তিনি তার হৃদয়ের সমস্ত আবেগ ও ভালোবাসা আমার উপর উজাড় করে দিলেন। যে-ভালোবাসা না চাইতেই পাওয়া যায়, তার প্রতি কোনো মোহ থাকে না। পারুল আপার ভালোবাসা আমার অসহ্য বোধ হত। অসহ্য বোধ হবার আরও একটি কারণ ছিল। তার চেহারা তেমন ভালো ছিল না। আমার চরিত্রের বড় রকমের দুর্বল দিকের একটি হচ্ছে, মেয়েদের দৈহিক রূপের প্রতি আমার তীব্র আকর্ষণ। যে দেখতে ভালো না, সে হাজারো ভালো হলেও আমার কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। রূপবতীদের বেলায় আমি অন্ধ। তাদের কোনো ত্রুটি আমার চোখে পড়ে না। তাদের দৈহিক সৌন্দর্যই আমার সমগ্র চেতনাকে আচ্ছন্ন করে রাখে। বলতে ইচ্ছে করে, আমি তব মালঞ্চের হব মালাকর।
থাক সে কথা, পারুল আপার কথা বলি। তিনি ভালোবাসার কঠিন শিকলে আমাকে বাঁধতে চাইলেন। আমাকে ভুলানোর জন্যে তার সে কী চেষ্টা! বাবার পকেট থেকে পয়সা চুরি করে আমাকে দিতেন। স্কুলের টিফিনের জন্যে তাকে সামান্য পয়সা দেয়া হত। তিনি না খেয়ে সেই পয়সা জমিয়ে রাখতেন আমার জন্যে। এর প্রতিদানে মাঝে মাঝে তার সঙ্গে স্কুলে যেতে হত। সেটা অতি বিরক্তিকর ব্যাপার। তিনি ক্লাস করছেন, আমি বেজার মুখে তার পাশে বসে। তিনি একটা হাতে আমার গলা জড়িয়ে আছেন।
সে সময় অধিকাংশ মেয়েই ছোট ভাইদের স্কুলে নিয়ে আসত। ছোট ভাইরা অনেক সময় অভিভাবকের মতো কাজ করত। বাবা-মারা নিশ্চিন্ত থাকতেন মেয়ের সঙ্গে পুরুষ-প্রতিভূ একজন-কেউ আছে। পারুল আপার সঙ্গে স্কুলে গিয়ে একবার বিরাট সমস্যায় পড়লাম। স্কুল কম্পাউন্ডের ভেতর একজন পাগল ঢুকে গেছে। মেয়েমহলে আতঙ্ক, ছোটাছুটি। আমি পারুল আপার নজর এড়িয়ে পাগল দেখতে গেলাম। কী আশ্চর্য, পাগল আমার চেনা! শুধু চেনা নয়, খুবই চেনা। উনি হচ্ছেন সুরসাগর প্রাণেশ দাস, বাবার ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের একজন। প্রায়ই বাসায় আসেন। তখন গানের জলসা বসে। আমাদের বাসায় হারমোনিয়াম নেই, আমরা ছুটে গিয়ে লায়লা আপাদের বাসা থেকে হারমোনিয়াম নিয়ে আসি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা তিনি গানবাজনা করেন। গায়ক প্রাণেশ দাস, শ্রোতা আমার বাবা। এইসব ওস্তাদি ধরনের গান আমাদের ভালো লাগে না, শুধু বাবা একাই আহা আহা করেন।
প্রাণেশ কাকু পাগল হয়ে গেছেন আমার জানা ছিল না। এখন অবাক হয়ে দেখি তিনি বিচিত্র ভঙ্গি করে মেয়েদের দিকে ছুটে ছুটে যাচ্ছেন। মেয়েরা দিগ্বিদিক–জ্ঞানশূন্য হয়ে ছুটছে। একে অন্যের উপর গড়িয়ে পড়ছে। আমি অসীম সাহসী। এগিয়ে গেলাম পাগলের দিকে। প্রাণেশ কাকু আমাকে চিনতে পারলেন। গম্ভীর গলায় বললেন, কী রে বাবু, ভালো?
আমি বললাম, জি ভালো। আপনি এরকম করছেন কেন?
প্রাণেশ কাকু লজ্জিত গলায় বললেন, মেয়েগুলিকে ভয় দেখাচ্ছি।
ভয় দেখাচ্ছেন কেন?
মেয়েগুলি বড় বজ্জাত। তোর বাবা ভালো আছেন।
জি।
হারমোনিয়াম কিনতে বলেছিলাম, কিনেছে।
জি না।
শখানেক টাকা হলে সিঙ্গেল রীড হারমোনিয়াম পাওয়া যায়। কিনে ফেললে হয়। রোজ-রোজ অন্যের বাসা থেকে আনা-তুই তোর বাবাকে বলবি।
জি আচ্ছা।
আর আমার মাথা যে খারাপ হয়ে গেছে এই খবরটাও দিস। বাড়িতে বেঁধে রাখে। তুই এখানে চুপচাপ দাঁড়া, আমি মেয়েগুলিকে আরেকটু ভয় দেখিয়ে আসি। তারপর তোকে নিয়ে তোদের বাসায় যাব।
জি আচ্ছা।
আমি চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলাম। প্রাণেশ কাকু আরও কয়েকবার প্রচণ্ড হুংকার দিয়ে ফিরে এসে আমার হাত ধরে গেটের দিকে রওনা হলেন… তখনই হাতে লম্বা একটা লাঠি নিয়ে রণরঙ্গিণী মূর্তিতে আবির্ভূত হলে তা আপা। তাঁর মূর্তি প্রাণ–সংহারক। তিনি তীব্র গলায় বললেন, একে ছাড়েন। একে না ছাড়লে লাঠি দিয়ে এক বাড়িতে আপনার মাথা ফাটিয়ে দেব। ছাড়েন বলছি! পাগলের সিক্সথ সেন্স খুব ডেভেলপড হয় বলে আমার ধারণা। প্রাণেশ কাকু সঙ্গে সঙ্গে বুঝলেন, আমার হাত না ছাড়লে এই মেয়ে সত্যি সতি, ঘোট শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে আঘাত করবে। তিনি আমার হাত ছেড়ে দিলেন। পারুল আপা ছুটে এসে ছোঁ মেরে আমাকে কোলে করে নিয়ে গেলেন, এত প্রবল উত্তেজনা সহ্য করার ক্ষমতা তার ছিল না–পারুল আপা হাত-পা এলিয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেলেন।
পারুল আপা ছিলেন যাবতীয় নিষিদ্ধ বিষয়ে আমার জ্ঞানদাত্রী। পুরুষ এবং রমণীর ভেতর বাহ্যিক সম্পর্ক ছাড়াও যে অন্য একধরনের সম্পর্ক আছে তা প্রথম জানলাম তার কাছে। তখন আমার বয়স আট। ক্লাস থ্রীতে উঠেছি। জটিল সম্পর্কের বিষয় জানার জন্যে বয়সটা খুবই অল্প। খুবই হকচকিয়ে গেলাম-এসব কী বলছে পারুল আপা! কী অদ্ভুত কথা!
পারুল আপার কথা বিশ্বাস করার কোনোই কারণ দেখলাম না। কিন্তু উনিই-বা বানিয়ে বানিয়ে এমন অদ্ভুত কথা বলবেন কেন?
নরনারীর সম্পর্কের জটিলতা ব্যাখ্যা করার পেছনে পারুল আপার একটা কারণ ছিল। কারণ হচ্ছে, আমাদের পাশের বাসার ভদ্রলোক। ওঁদের বাড়িতে পনেরো-ষোলো বছরের সুন্দরমতো একটি কাজের মেয়ে ছিল। মেয়েটি ভদ্রলোককে বাবা ডাকত। হঠাৎ শুনি, তিনি এই মেয়েটিকে বিয়ে করেছেন। ভদ্রলোকের দুটি বড় মেয়ে কলেজে পড়ে। তারা খুব কান্নাকাটি করতে লাগল। ভদ্রলোকের স্ত্রী ঘনঘন ফিট হতে লাগলেন। ঘটনাটা চারপাশে বড় ধরনের আলোড়ন তৈরি করল। বড়রা সবাই এই ঘটনা নিয়ে আলাপ করে। সেই আলাপে আমি উপস্থিত হলে চোখ বড় বড় করে বলে-এই ভাগ!
কাজেই আমি নিজেই পারুল আপার কাছে জানতে চাইলাম ব্যাপারটা কী। তিনি গম্ভীর গলায় বললেন, বিয়ে না করে উপায় কী-ঐ মেয়ের পেটে বাচ্চা।
পেটে বাচ্চা হলে বিয়ে করতে হয় কেন?
তোকে বলা যাবে না। খুব লজ্জার কথা।
না, আমাকে বলতে হবে।
কাউকে বলবি না তো?
না, বলব না।
কসম খা।
কিসের কসম?
বল, বিদ্যা।
বিদ্যা।
বল, কোরান।
কোরান।
বল, টিকটিকি।
টিকটিকি বলব কেন? টিকটিকি আবার কীরকম কসম?
টিকটিকির যেমন লেঞ্জ খসে যায়-তুইও যদি এই কথা কাউকে বলিস তা হলে তোর জিভও খুলে পড়ে যাবে।
আমি ভয়ে ভয়ে টিকটিকির নামেও কসম করলাম—আর পারুল আপা গন্ধম ফলের সেই বিশেষ জ্ঞান আমাকে দিয়ে দিলেন। আমার মনে আছে, মনে খুব বড় ধরনের আঘাত পেলাম। চিৎকার করে বলতে ইচ্ছা হল, না, এসব মিথ্যা। এসব হতেই পারে না। ব্যাপারটা নিয়ে আমি যে কারও সঙ্গে আলাপ করব সেই উপায় নেই। টিকটিকির কসম খেয়েছি। জিহ্বা খুলে পড়ে যেতে পারে।
এই সময় পাশের বাড়ির ঐ ভদ্রলোকের বড় মেয়েটির হাসিরোগ হল। সারাক্ষণ হাসে। খিলখিল করে হাসে। গভীর রাতেও ঘুম ভেঙে শুনি পাশের বাড়ি থেকে হাসির শব্দ আসছে। গভীর রাতে সেই হাসি শুনে বড় ভয় লাগত। গা শিরশির করত। মেয়েটির কোথায় যেন বিয়ে ঠিক হয়েছিল-বাবার এই কাণ্ডে তার বিয়ে ভেঙে যাবার পরই হাসিরোগ হয়। তার কয়েকদিন পরই তারা বাড়ি ছেড়ে চলে যায়। ভদ্রলোকের স্ত্রীকে আমি নানু ডাকতাম। মেয়ে দুটিকে খালা। তারা আমাকে খুবই স্নেহ করত। প্রায়ই ডেকে নিয়ে বড়দের মতো কাপে করে চা খেতে দিত। দুনম্বর বোনটি আমাকে সবসময় জিজ্ঞেস করত—তার মতো সুন্দরী কোনো মেয়ে আমি দেখেছি কি না। এর উত্তরে আমি তৎক্ষণাৎ বলতাম, না।
সত্যিই তো?
হ্যাঁ সত্যি।
আমি বেশি সুন্দর, না আপা?
আপনি।
সত্যি-বিদ্যা-কোরান বল।
সত্যি-বিদ্যা-কোরান।
তাঁরা চলে যাবার পর পাশের বাড়ি অনেক দিন খালি পড়ে রইল। আমার বেশ কিছুদিন খুব মন-খারাপ গেল। অল্প বয়সের মন-খারাপ দীর্ঘস্থায়ী হয় না। আমার বেলায়ও হল না। তা ছাড়া মন-খারাপ ভাব কাটানোর মতো একটা রহস্যময় ঘটনাও ঘটল। একদিন খুব ভোরে দুজন বিচিত্ৰদৰ্শন লোক কোদাল নিয়ে পারুল আপাদের ঘরে ঢুকল। তারা নাকি কবর খোঁড়ার লোক। ভেতরের দিকের উঠানে তারা কবর খুঁড়তে শুরু করল। এই ঘটনা শুধু যে শিশুদের মনে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করল তা নয়, বড়রাও অস্বস্তি বোধ করতে লাগলেন। আমার মার ধারণা হল ভদ্রলোক তার কোনো-এক মেয়েকে মেরে ফেলেছেন। এখন গোপন কবর দিয়ে দেয়া হচ্ছে। বাবা মাকে ধমক দিলেন–এইসব অদ্ভুত ধারণা তুমি পাও কোথায়? নিশ্চয়ই অন্য কোনো ব্যাপার।
আসলেই অন্য ব্যাপার, তবে কম রোমাঞ্চকর না। ওভারশিয়ার কাকুর পকেট থেকে একশো টাকা চুরি করেছে তার পিওন। অথচ সে তা স্বীকার করছে না। কবর খোঁড়া হচ্ছে সেই কারণেই। পিওন একটা কোরান শরিফ হাতে নিয়ে কবরে নামবে এবং কোরান শরিফ হাতে নিয়ে বলবে-সে টাকা নেয়নি। যদি সে মিথ্যা কথা বলে তা হলে আর কবর থেকে উঠতে পারবে না। কবর তাকে আটকে ফেলবে।
সেই ভয়াবহ দৃশ্য দেখার জন্য আমরা দল বেঁধে কবরের চারপাশে দাঁড়ালাম। দরিদ্র পিওন হাতে কোরান শরিফ নিয়ে কবরে নামল। সে থরথর করে কাঁপছে। গা দিয়ে ঘাম ঝরছে। তাকে দেখাচ্ছে পাগলের মতো। ওভারশিয়ার কাকু বললেন-এই, তুই টাকা চুরি করেছিস?
জে না।
সত্যি কথা বল। মিথা বললে কবরে আটকে যাবি।
টাকা চুরি করি নাই স্যার।
তোর হাতে কোরান শরিফ, তুই কবরে দাঁড়িয়ে আছিস-মিথ্যা বললে আর উঠতে পারবি না।
তখন এক ভয়াবহ দৃশ্যের অবতারণা হল। পিওনের হাত থেকে কোরান শরিফ পড়ে গেল। সে জ্ঞান হারিয়ে কবরের ভেতর পড়ে গেল।
ওভারশিয়ার কাকু বিজয়ীর ভঙ্গিতে বললেন, বলছিলাম না, টাকা এই হারামজাদাই নিয়েছে!
কবর বন্ধ করা হল, কিন্তু পুরোপুরি বন্ধ করা হল না। বিশাল একটা গর্তের মতো হয়ে রইল, যে-গর্তের দিকে তাকালেই ভয় ভয় লাগত। এ ছাড়াও আরও সব ভয়াবহ খবর কানে আসতে লাগল-যেমন, গভীর রাতে নাকি এই কবরের ভেতর থেকে ভারী গলায় কে ডাকে-আয় আয়। একবার কবর খোঁড়া হয়ে গেলে কাউকে-না-কাউকে সেখানে যেতে হয়। কবর তার উদর পূর্ণ করবার জন্য মানুষকে ডাকে।
আমি পারুল আপাদের বাড়ি যাওয়া ছেড়ে দিলাম। কী দরকার ঐ ভুতুড়ে বাড়িতে যাবার? পারুল আপার সঙ্গে যোগাযোগও কমে গেল, কারণ তার স্কুলের খাতায় একটি প্রেমপত্র পাওয়া গেছে। সম্বোধনহীন সেই প্রেমপত্রে তিনি একজনকে অনুরোধ করেছেন তাঁকে চুমু খাবার জন্যে। কেন জানি আমার মনে হয় ঐ প্রেমপত্রটি তিনি আমাকেই লিখেছিলেন। কারণ আমি ছাড়া অন্য কোনো ছেলের সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ ছিল না। এবং একবার তাকে চুমু খাবার জন্যে লাজুক গলায় আমাকে অনুরোধও করেছিলেন। আমি এই অদ্ভুত প্রস্তাবে হেসে ওঠায় খুব লজ্জাও পেয়েছিলেন। তার স্কুলে যাওয়া বন্ধ। জানালার শিক ধরে মাঝে মাঝে তাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। আমাকে দেখলেই তিনি চিকন গলায় ডাকেন। আমি পালিয়ে যাই। তার বাবা-মা তাকে বন্দি করে রাখায় আমি একধরনের স্বস্তি বোধ করি। এখন আমাকে বিরক্ত করার সুযোগ তার নেই। পারুল আপার বন্দিজীবন আমাকে বেশিদিন দেখতে হয়নি। তারা মীরাবাজারের বাসা বদলে কোথায় যেন চলে গেলেন। হারিয়ে গেলেন পুরোপুরি।
মানুষ দ্বিতীয়বার শৈশবে ফিরে যেতে পারে না। পারা গেলে আমি অবশ্যই এই অসহায় অভিমানী, দুখি কিশোরীর পাশে গিয়ে দাঁড়াতাম। আজ তিনি কোথায় আছেন, কীভাবে আছেন, আমি জানি না। শুধু প্রার্থনা করি—যেখানেই থাকুন যেন সুখ তাকে ঘিরে থাকে। পৃথিবী ও মানুষের কাছে সুখ তার প্রাপ্য।