Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » হবে জয় || Kazi Nazrul Islam

হবে জয় || Kazi Nazrul Islam

আবার কি আঁধি এসেছে হানিতে
ফুলবনে লাঞ্ছনা?
দু-হাত ভরিয়া ছিটাইছে পথে
মলিন আবর্জনা?
করিয়ো না ভয়, হবে হবে লয়
আপনি এ উৎপাত,
আঙনের দুটো খড়কুটো লয়ে
লুকোবে অকস্মাৎ!
উৎপাতে তার যদি সখা তব
ফুলবনে ফুল ঝরে,
নব-বসন্তে নব ফুলদল
আসিবে কানন ভরে।
অসুন্দরের প্রতীক উহারা,
ফুল-ছেঁড়া শুধু জানে,
আগে যে চলিবে উহারা টানিবে
কেবলই পিছন পানে।
বন্ধু, ওদের উহাই ধর্ম,
তাই বলে তুমি আগে
চলিবে না ভয়ে? ফুটাবে না ফুল
তোমার কুসুম-বাগে?
অভিশাপ-শ্বাস দমকা বাতাস
প্রদীপ নিবায় বলে
আলো না জ্বালায়ে রহিবে বসিয়া
আঁধার আঙিনাতলে?
সূর্যে ঢাকিতে ছুটে যায় নভে
পায়ের তলার ধূলি,
সূর্য কি তাই লুকাবে আকাশে
আপনার পথ ভুলি?
তড়িৎ-প্রদীপ জ্বালাইয়া আস
তোমরা বরষা-ধারা,
তোমাদের জলে সব ধুলো-মাটি
নিমেষে হইবে হারা।
যে অন্তরের দীপ্তিতে তব
হাতের মশাল জ্বলে,
ফুৎকারে তাহা নিভিবে না চলো,
আগে চলো নব বলে!
পথ ভুলাইতে আসিয়াছে যারা
চাহিবে ভুলাতে পথ,
লঙ্ঘিতে হবে উহাদের রচা
মরু, নদী, পর্বত।
পিছনের যারা রহিবে পিছনে,
উহদের চিৎকারে
তুমি কি বন্দি হইয়া রহিবে
আঁধারের কারাগারে?
মাথার ওপরে শত বাজপাখি
তবু পারাবত দল
আলোক-পিয়াসি চঞ্চল-পাখা
লুণ্ঠিছে নভতলে।

বন্ধু গো, তোলো শির!
তোমারে দিয়াছি বৈজয়ন্তী
বিংশ শতাব্দীর।
মোরা যুবাদল, সকল আগল
ভাঙিতে চলেছি ছুটি,
তোমারে দিয়াছি মোদের পতাকা
তুমি পড়িয়ো না লুটি।
চাহি না জানিতে – বাঁচিবে অথবা
মরিবে তুমি এ পথে,
এ পতাকা বয়ে চলিতে হইবে
বিপুল ভবিষ্যতে।
তাজা জীবন্ত যৌবন-অভিযান –
সেনা মোরা আছি,
ভূমিকম্পের সাগরের মতো
সুখে প্রাণ ওঠে নাচি;
চাহ বা না চাহ, মোরা যুবাদল
তোমারে চালাব আগে,
ব্যগ্র-চরণ চলিবে অগ্রে
আমাদের অনুরাগে!
মৃত্যুর হাতে মরে তো সবাই,
সেই শুধু বেঁচে থাকে –
মানুষের লাগি যে চির-বিরাগী,
মানুষ মেরেছে যাকে।

বিধাতার পরিহাস –
রচেছে মানুষ যুগে যুগে তার
অমানুষী ইতিহাস।
সবচেয়ে বড়ো কল্যাণ তার
করিয়াছে যে মানুষ,
তারেই পাথরে পিষিয়া মেরেছে
মেরেছে বিঁধিয়া ক্রুশ!
যে-হাতে করিয়া এনেছে মানুষ
স্বর্গ-অমৃত-বারি,
সে-হাত কাটিয়া ধরার মানুষ
প্রতিদান দিল তারই!
দেয় ফুল ফল ছায়া সুশীতল –
তরুরে আমরা তাই,
ঢিল ছুঁড়ে মারি, ফুল ছিঁড়ি তার
শেষে শাখা ভেঙে যাই।
সেই অভিমানে ফুটিবে না ফুল?
ফলিবে না তরু-শাখে
সু-রসাল ফল? দিবে না সে ছায়া
যে আঘাত করে তাকে?
চন্দ্রে যাহারা বলে কলঙ্কী
চন্দ্রালোকেই বসি,
করুণার হাসি দেখে তাহাদেরে,
দিই না গলায় রশি!
অসম সাহসে আমরা অসীম
সম্ভাবনার পথে
ছুটিয়া চলেছি, সময় কোথায়
পিছে চাব কোন মতে!
নীচের যাহারা রহিবে নীচেই,
ঊর্ধ্বে ছিটাবে কালি,
আপনার অনুরাগে চলে যাব
আমরা মশাল জ্বালি।
যৌবন-সেনাদল তব সখা,
বন্ধু গো নাহি ভয়,
পোহাবে রাত্রি, গাহিবে যাত্রী
নব আলোকের জয়!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress