জেগে ওঠা শৈশব
ছুটে চলে যায় বহুদূর–
যেখানে ছিল প্রতিটি
ধূলিকণাতে আনন্দের রোল,
খেলার সাথী,আম কাঁঠাল পাতার
জড়ানো মুকুট, মালা, ছিন্নশির কত
বাসনা আজো উঁকি মারে–
বহু কাছে আসে, বহু দূরে থাকে
সরে যায় কিছু,
হারিয়েছে আরো কিছু–
বাঁশবাগানে ছোটাছুটি
ক্ষ্যাপা দাদুকে নাচানো
একসময় বড়ো ভালো লাগত
ভালো লাগতো কিছু সুর
যার কোন সা-রে-গা-মা নেই
নেই কোন পরিচিত গণ্ডী।
অসীম অনন্ত কৈশোর,
ছিল না কোন বাঁধন
একটি হৃদয় ছিল আরেকটি হৃদয়ের
বড় কাছাকাছি।
ভালোবাসতো ভ্রমর ফুলকে
একটি জগত ছিল প্রাণের ভিতর
যেখানে ছিল হাসি গান
আনন্দ উচ্ছ্বাস,
কিছু তরঙ্গ, ভালোবাসার অগাধ
সাগর হতে উত্থিত।
তাই ভাবি বাস্তব জগৎ ছেড়ে
আজও কি পাড়ি দেয়
কাগজের জাহাজ অজানা সমুদ্রে–
নতুন পুরীর সন্ধানে
যেখানে রাজকন্যা ঘুমিয়ে আছে
সোনার পালঙ্কে
শুধু প্রতীক্ষার অন্তরা–
অজানা দ্বীপের রাজপুত্রের স্পর্শের
ঘুম ভাঙ্গানোর তরে।
আম গাছের বকের ডিমগুলো ফেটে বাচ্চাগুলো
নীলাকাশে শাদা পাখা মেলেছে–
জামরুলের অধরে ফুটেছে মিষ্টি হাসি
বকুল বীথির গন্ধে বাতাস মাতোয়ারা।
শুধু কতগুলো ডানা ভাঙা পাখি কাঁদে,
গুমরে কাঁদে ; কাঁদে কতগুলো বাসনা–
জ্বালা করে অন্তর–ফিরে যেতে চায়
যেখান থেকে হয়েছিল শুরু।
চার দেওয়ালের আবদ্ধ জীবনটা
একটু লাফাতে চায়,
চায় একটু আলো একটু বাতাস।
কৃত্রিমতা বিষাক্ত করে দিয়েছে
ও মন প্রাণকে
বাউলের কণ্ঠে তাই আর জাগে না
সেই হারানো প্রভাতী সুর।
শৈশবের আলোর জগতের স্মৃতি আঁকছি
বসে অন্ধকারে, তবুও কৃত্রিম–
তাই হয়তো হারিয়েছে বহু স্মৃতি
কাছে আসে না, মনে বাজে না
রিক্ত জীবনটার কোন পরিচয় রাখতে চায় না
তবুও কাঁদায় —