জ্যামিতিক ছন্দে বাঁধা শরীর , বৃত্তের চারপাশে শকুনের পাল
শরীরটা কি মৃত নাকি শ্বাস পরছে এখনো ও !?
বৃত্তের মাঝে এসে জমা হয় বহু জোড়া চোখ এই মধ্যরাতে।
এখনও কণ্ঠনালীর কাছটাতে কিছু ওঠাপড়া–
তাহলে প্রাণ আছে বাকি!? বিদ্রুপ হাসি খেলে যায় কিছু চোখে ।
প্রমান হাওয়া করতে হবে — বলে ওঠে একজন
কিন্তু কিভাবে? — প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয় কেউ —-
আছে আছে উপায় আছে— সমস্বরে উল্লাস তখন আকাশ স্পর্শ করেছে ।
আকাশ তখন নাম না জানা হাজার তারার মালায় সেজেছে
নবান্নের ঘ্রানে সিক্ত অঘ্রানের কুয়াশা ঢাকা সে রাত—
একটা অস্ফুট গোঙানির শব্দ উঠে আসছে বুক বিদীর্ণ করে ঐ অর্ধমৃত শরীর থেকে ।
সে শব্দ পৌছবেনা সভ্যতার জানলা ফুঁড়ে নরম বিছানায় — যেখানে চলছে যৌনতার মধু পান ,
ওরা কাল জানবে , খবরের কাগজে, টিভিতে অথবা লোকমুখে ।
মুখে থাকবে “আহারে ” সূচক শব্দ, তার পর নাকে মুখে রুমাল চাপা দিয়ে বাজারের থলি হাতে ব্যস্ততার দিন যাপন ।
ভাবটা যেন এমন — ” আমার ঘর তো বেঁচেবর্তে আছে , বেশি মাথা না ঘামানোই ভালো ,
না হলে পিছনে রাজনীতির গুপ্তচরেরা আছে ।
নিজের মেয়ে কে আদর করে কাছে টেনে নেয় বাবা ,
কিন্তু সত্যি ই কি বাঁচবে ওরা ?
এই নিশ্চছিদ্র আঁধার রাতে — সকলেই এখন নিদ্রা মগন , নেই কোনো চঞ্চলতা ।
শুধু একটা গোঙানির শব্দ শুকনো পাতায় তোলে মর্মর ধ্বনি—- বড় নিশ্চুপে
মাটি শুষে নেয় রক্ত শ্রাবণ ধারা — যেন কোনো পিশাচিনী —
পৃথিবীর বুকে লালোসার জন্ম হয় , জন্ম হয় রক্তবীজের। এমনই রাত ওদের বড় প্রিয় ।
সবুজ পাতারা শ্রান্ত হয়ে একটু যেন জিরিয়ে নিচ্ছে গাছের অঙ্গে লেপটে ।
শুধু শরীর টা আর লেপটে নেই ঘরের সাথে , ঘরের মানুষের সাথে ।
আরে , এই কি এত ভাবছিস– গম্ভীর স্বর ভেসে এলো চতুর্ভুজের চৌহদ্দি থেকে
হাতে ধরা রঙিন পানীয় ঢেলে দিল একজন ঐ অর্ধমৃত শরীরটার মুখে
কেউ পায়ের আঘাতে উল্টে দিল শরীর,,,,,, পরনের বস্ত্র তখন জঙ্ঘা ছুঁয়েছে
সরীসৃপেদের হাত যেন আরও একবার– শেষবারের মত শরীর লতিয়ে উঠতে চায় ।
সাক্ষী কেবল আকাশের তারা আর নীরব মধ্যরাত , হতে পারে দেখেছিল ঝিম ধরা ঐ চাঁদ
ওরা পেট্রল নিয়ে এলো — নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে শরীরটার
অস্ফুটে কি যেন বলতে চাইলো একবার , ঠিক বোঝা গেলো না ।
ছিন্নভিন্ন শরীরটা নিয়ে আরও একবার বাঁচার আকুতি !
কি জানি হতেও পারে , অথবা বলতে চাইল — আর কেনো কষ্ট দিচ্ছ ,,,, এবার শেষ করে দাও চিরতরে ,,,,,
শকুন গুলো হয়তো বুঝেছিল সে কথা , শুধু একটা দেশলাই কাঠি জ্বলে ওঠার দূরত্ব—
আর তারপর হাত সেঁকে নেওয়া ঐ আগুনে
পরের দিন মানুষের দলে ভিরতে হবে তো—–