সারমেয় প্রেম
মানুষ আর কুকুরের সম্পর্ক অনাদি কাল থেকে।
আমারা জানি যুধিষ্ঠিরের সঙ্গে স্বর্গ পর্যন্ত একমাত্র একটি সারমেয় যেতে সক্ষম হয়েছিল।স্বয়ং ইন্দ্র রথ নিয়ে উপস্থিত হলে সেই সারমেয় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। সারমেয়কে না নিয়ে যুধিষ্ঠির স্বর্গে যেতে অনড়।কুকুরের প্রতি যুধিষ্ঠিরের ভালবাসায় ইন্দ্র মুগ্ধ হয়।কেরলে মালিকের প্রতি
অবলা সারমেয়র ভালবাসায় মুগ্ধ হয় এক পশুপ্রেমী দরদীমানব অজিথ।
বেশ কিছুদিন আগে ভয়ঙ্কর ধ্বস নামে। যার ফলে বেশ কিছু বাড়ি ভেঙে পরে। প্রাণ যায় অনেকের।
ঘটনাটি ঘটেছিল কেরলে। এই মৃতদের মধ্যে ছিল কুভির মালিকও।কে এই কুভি? এক অবলা কুকুর। ধ্বস নামার পর তার মালিক ও পরিবারের কাউকেই খুঁজে পাচ্ছিল না সে।
মালিকের মৃত্যু শোক যেন পোষা কুকুরটি কিছুতেই মানতে পারছিল না। সে সারাদিন ধ্বংসস্তুপের মধ্যে মালিকের ও পরিবারের অন্যদের খুঁজেছিল। প্রায় সাত দিন খোঁজাখুজির পর মালিকের প্রিয় কুকুর কুভিই প্রথম মালিকের মৃতদেহ নদীতে ভেসে থাকতে দেখে।এরপর ওই পরিবারের বাকি সদস্যদের শবদেহ খুঁজে টেনে এনে আগলে বসে থাকে কুভি।রেসকিউ সেন্টার থেকে যারা কাজ করছিলেন তারা কুকুরের এই কাণ্ড দেখে সকলে অবাক হয়ে যায়। কিন্তু মালিক আর ফিরবে না ভেবে, সে একেবারেই খাওয়া ছেড়ে মনমরা হয়ে পড়ে থাকে।
উদ্ধারকারী কর্মীরা লক্ষ্য করেছিল প্রায় সাত দিন কিছু না খেয়ে মালিকের অপেক্ষায় বসে সারমেয় একভাবে ধ্বংসস্তুপে।রেসকিউ সেন্টার থেকে যারা কাজ করছিলেন তাদের মায়া হয় কুভিকে দেখে। চেষ্টা করে কুকুরটিকে খাওয়াতে। তারাও কিছু খাওয়াতে পারেনি এই কুকুরকে।
কুভির মালিক ছিল কেরালা পুলিশের ডগ স্কোয়ারের ট্রেনার।ধ্বসের খবর পেয়ে সেখানে
ছুটে আসে সহকর্মীর খবর নিতে। সহকর্মী ট্রেনার অজিথ এসে দেখে কুভি তার নিথরমালিক সহ পুরো পরিবারকে আগলে বসে।গেল কুভির কাছে তার মন জয় করতে।যদি সামান্য কিছু খাওয়াতে পারে অসহায় সারমেয়টিকে।গায়ে মাথায় হাত বুলিয়ে সহানুভুতি জানিয়ে মুখটি তুলে দেখে অবলার চোখে জল।এখানে মালিকের প্রতি কুভির ভালবাসা দেখে অজিথ মুগ্ধ হয়। সিদ্ধান্ত নেয় অনাথ কুকুরটিকে দত্তক নেবে। কুভির প্রতি মায়া হয়। কুভিকে তার ভালো লাগে। সে তাকে ট্রেনিং দিতে চায়। সেও ডগ স্কোয়ার্ডের কুকুরদের মতোই তাকে তৈরী করতে চায়।