সমুদ্র যাত্রা (Samudra Jatra) : 11
একই পুলকারে আমি আর জয়ন্তী ফিরছি আজকাল, অনিন্দ্য আর সুমিতকে নামিয়ে দিয়ে গাড়িটা আমাকে যতীন্দ্রমোহন অ্যাভিনিউয়ে নামায় তারপর জয়ন্তীকে নিয়ে চলে যায় পাইকপাড়া। শেষ নামিয়েছি সুমিতকে ওয়েলিংটন। জয়ন্তী বলল— তুমি কি মন্ত্র জানো?
—আমি?
—ওদের র্যাগিং থেমে গেছে।
—আমি তো বলেই ছিলুম কিছুদিন যেতে দাও আপনি ঠিক হয়ে যাবে।
—উঁহু, তোমার এতে কোনও ভূমিকা আছে। জানো, ওরা আমাদের বাড়ির খোঁজখবর করছিল!
—কী রকম?
—অনিন্দ্য আর আমি দুজনেই কালীঘাট সাইটে যাচ্ছি কদিন, অনিন্দ্য হঠাৎ বলল— যা হয়ে গেছে তার জন্যে কিছু মনে করবেন না। ওসব জাস্ট ফান। তারপরে বাড়িতে কে কে আছেন, কে কী করেন জিজ্ঞেস করছিল।
—তুমি কী বললে আমিও একটু শুনে রাখি।
জয়ন্তী হাসল, বলল— বলি আর কি! তারপরে সে ডেটাগুলো নিয়ে আবার কী করবে কে জানে।
—ও অফেন্স নিল না?
—আমি কি ওকে বলেছি যে বলব না। আমি বেশ ভালমানুষের মতো মুখ করে কতকগুলো উল্টোপাল্টা বকে গেলুম। বাবা রিটায়ার্ড স্কুল-টিচার, মা এখনও রাইটার্সে চাকরি করেন, ছোট ভাই আর্টস নিয়ে পড়ছে স্কটিশ চার্চে।
—সব মিথ্যে?
—সব নয়। আমার বাবা বেঁচেই নেই। অনেক দিন চলে গেছেন। মা স্কুলে হেডমিস্ট্রেস, কাছেই স্কুলটা, ছোটভাই পড়ছে, তবে এঞ্জিনিয়ারিং, খড়গপুর আই.আই.টি-তে।
ওদের ছেলেমানুষিতে আমার হাসি পেয়ে যায়। অনিন্দ্য কেন কথাটা জিজ্ঞেস করেছে আন্দাজ করতে পারি। সেদিন বলেছিলুম অনেক মেয়েদেরও সংসার চালাতে হয়, তাই গোয়েন্দাগিরি করছে। আর জয়ন্তী স্রেফ সত্যি কথা ওকে বলবে না বলেই মিথ্যে বলেছে।
—একটা সুবিধে এই যে আমি চাকরিটা পেয়ে গেলুম, তখন আমার ভাই ঢুকল। মায়ের ওপর না হলে প্রচণ্ড চাপ পড়ত। —জয়ন্তী যোগ করে।
তা হলে আমার তির লক্ষ্যভেদ করেছে ঠিকই! সাধারণ ভাবে বলেছিলুম। সেটা ব্যক্তিবিশেষের ক্ষেত্রে মিলে গেল।
—একদিন আমাদের বাড়ি যাবে?
—গেলেই হয়। কেন?
—এমনি, পুলক খুব তোমার কথা বলত। ও তোমায় খুব অ্যাডমায়ার করত। মা তোমার কথা শুনে দেখতে চায়। পুলকের বন্ধু!
—বলে কী! পুলক আমার অ্যাডমায়ারার? সর্বক্ষণ তো বকত আমাকে, উঠতে বসতে জ্যাঠামশাইয়ের মতো ধমক। ও তো আমাদের পাড়াতেই থাকে, মানে ওর ফ্যামিলি, ও দুর্গাপুরে এখন। কী রকম কাজিন তোমার? যাও না?
—আগে খুব যেতুম। আমার মায়ের মাসতুতো বোন ওর মা।
—মাসতুতো মাসতুতো?
—ঠিক, জয়ন্তী হাসল। হাসলে ওর মুখটা খুব ঝলমলায়।
—যাক ঠিক হয়েছে তবু। আমি আবার এগুলো খুব গুলিয়ে ফেলি। আমার বোনের এরিয়া এটা।
—তোমার বোন?
—হ্যাঁ ফিনকি। ও হিস্ট্রি নিয়ে পড়ছে। ওর ডাক্তারি পড়ার ইচ্ছে ছিল। আমরা অ্যাফোর্ড করতে পারিনি।
—ডাক্তারি থেকে হিস্ট্রি? খুব দূর হয়ে গেল না?
—ও তো বলে—না। ডাক্তারিটা পড়তে চাইছিল একটা ইন্টারেস্ট থেকে, হিস্ট্রিটা আবার একটা আলাদা ইন্টারেস্ট। খুব প্র্যাকটিক্যাল মেয়ে।
—প্র্যাকটিক্যাল না হয়ে আর উপায় কী বলো। জয়ন্তী যেন একটু নিশ্বাস গোপন করল—তোমার বোন ডাক্তারি পড়তে চেয়েছিল, তোমরা পড়াতে পারনি, আমার ম্যাথ্স্ নিয়ে পড়বার ইচ্ছে ছিল, মাকে ছুটি দিতে হবে, ভাইকে পড়াতে হবে বলে এটাই পড়তে হল। তাড়াতাড়ি ভাল মাইনের চাকরি পাওয়া যায়।
আমি চুপ করে থাকি।
—অথচ… একটু ইতস্তত করে জয়ন্তী বলল—পরে ভাই কিন্তু এটা মনে রাখবে না!
আমিও অভিজ্ঞতা থেকে জানি এইরকমই হয়, একেবারে এই রকম। কেউ সিঁড়ির পেছনের ধাপের দিকে ফিরে চায় না। নিজেদের কর্তব্যের কথা মনে রাখে না। মনে করে সে স্বয়ম্ভূ। তার কেরিয়ার স্বয়ম্ভূ। দাদু মাকে বলেছিলেন বাবলার থেকে তুমি বেশি কিছু আশা কোরো না। আমাকে বলেছিলেন ফিনকিই তোমাদের একমাত্র আশা।
তবু জিজ্ঞেস করলুম—এ রকম মনে হচ্ছে কেন তোমার? সবে তো ঢুকেছে। এখনও যাকে বলে ছেলেমানুষ।
—ও ঠিক বোঝা যায় সমুদ্র, একেক জন ছেলে দেখবে একটু বড় হওয়া মাত্র প্রচুর বন্ধুবান্ধব জুটিয়ে ফেলবে। আমাদের বাড়িতে মা আর আমি দুজনেই মেয়ে। কিন্তু ও ক্রমাগত একটা ম্যাসকুলিন ওয়ার্ল্ডে হারিয়ে যাচ্ছে। আমি জানি না এটা একটা উল্টো প্রতিক্রিয়া কি না।
আমি ভাবি। আমরা দুই ভাই চিরকালই পুং-জগতে ছিলুম। মায়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়নি। দাদু, দাদু, দাদু। ফিনকিই একটা ফুলকির মতো আমাদের মধ্যে ঢুকে পড়ত। কিন্তু আমাদের বর্ম কোনওদিন ভেদ করতে পারেনি। দাদার তো নয়ই, আমারও না। অথচ ফিনকি আমার খুব কাছাকাছি।
একদিন জয়ন্তীর সঙ্গে চিলড্রেন্স পার্কে যাই। চারদিকে খেলা হচ্ছে, ফুটবল, ক্রিকেট। আরও বাচ্চারা স্রেফ বল ছোড়াছুড়ি করছে। খুব প্রাণচঞ্চলতা আমাদের চারদিকে। চুপ করে বসে থাকি।
জয়ন্তী বলে—আচ্ছা সমুদ্র, তুমি কি চিরকালই এই রকম ইনট্রোভার্ট?
আমি হাসি—কেউ কি হঠাৎ ইনট্রোভার্ট বা এক্সট্রোভার্ট হয়ে উঠতে পারে? ব্যাপারটা জন্মগত, স্বভাবগত বলেই তো জানি।
—তোমার কী ভাল লাগে বলো তো? ধরো খেলা, মুভি, থিয়েটার, গানবাজনা বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা।
—ওই শেষটা ছাড়া সবই।
—আড্ডা ভাল লাগে না, এমন ইয়াং ম্যান আমি তো দেখিনি। কেন বলো তো!
—সেটা তো ভেবে দেখিনি। তবে জিজ্ঞেস করছ যখন তখন একটু ভাবা যেতে পারে। একটু ভাবি তারপর বলি—বহুজন মিলে হই-হল্লা করছে, উল্টোপাল্টা গপ্পো মানে গসিপ, কেচ্ছা—এগুলো বোধহয় আমার ঠিক…আসলে আমি বোধহয়, আমি বোধহয় একটু বুড়োটে টাইপ বুঝলে!
জয়ন্তী হেসে খুন। সেই মুহূর্তে। জয়ন্তীর সেই মজা পেয়ে হাসতে থাকার মুহূর্তটা আমার হঠাৎ খুব ভাল লেগে যায়। হঠাৎ যেন আকাশময় হালকা রোদ ছড়িয়ে পড়ল দীর্ঘ বর্ষার পড়ন্ত বিকেলে। একটু আগেও যেখানে বিশ্রী পুরনো কালির দাগের মতো মেঘ ছিল ছাপকা ছাপকা হঠাৎ সে সব অদৃশ্য। মেঘ গলিয়ে দিয়ে শেষ বেলার সূর্য, শান্ত গর্বে হাসছে। আমি আছি, এখনও আছি।
—হাসছ কেন? আমি বোধহয় একটু গোমড়ামুখোও, কী হবে বলো তো?
ওর হাসি বেড়ে গেল। হাসতে হাসতেই বলল—উঃ নিজেকে কেউ বুড়োটে বলে, গোমড়ামুখো বলে—আমি, আমি এই প্রথম দেখলুম।
—সত্যি কথাটা স্বীকার করে নেওয়াই তো ভাল, অন্য কেউ আবিষ্কার করার আগে।
আবার হাসি। তারপর কোনওমতে হাসি থামিয়ে বলল—আমি কী রঙের শাড়ি পরেছি বলো তো! না দেখে, সামনের দিকে চোখ রেখে বলো, এই একদম টেরিয়ে তাকাবে না কিন্তু। নো চোট্টামি।
—নীল—
—হল না, হয় তুমি কিচ্ছু লক্ষ করো না, আর নয় তুমি রং কানা। বেশির ভাগ ছেলেই অবশ্য সবুজকে নীল, নীলকে সবুজ বলে, খেয়াল করেছ? কেন বলো তো।
—এ খবরটা তো আমি জানতুমই না, কী করে বলব? আমার চিরকালই ধারণা নীলটা হল নীল আর সবুজটা হল গিয়ে সবুজ।
জয়ন্তীকে আজ হাসিতে পেয়েছে। বলল, তুমি কবিতা পড়ো?
—খুব কম।
—কবিরা অনেক সময়ে ঘাসকে নীল বলে থাকেন। তবে সবুজ আকাশ আমি এখনও পড়িনি। তুমি পড়েছ? যদি চোখে পড়ে তা হলে আমাকে বলবে তো, আমার থিয়োরিটা একেবারে কাঠ-সত্যি প্রমাণিত হয়ে যাবে। তুমি হয় খুব মন দিয়ে কিছু করো। নয়তো একেবারে আনমনা, মানে মনোযোগ আছে কিন্তু অন্য কোনও কিছুতে।
—তুমি তো আমাকে রীতিমতো স্টাডি করেছ দেখছি। আর কোন বিষয়টা জানলে আমার সম্পর্কে তোমার থিয়োরিটাও কাঠ-সত্যি বলে প্রমাণিত হবে বলো তো!— আমি মজা পেয়ে থেমে ওর মুখের দিকে তাকাই। জয়ন্তীর মুখটা টকটকে লাল হয়ে গেছে।
আমি নিজেও এই অপ্রত্যাশিত দৃশ্যে অপ্রস্তুত হয়ে যাই।
ভ্যাবাচ্যাকা ভাবটা কাটাতে মাথা চুলকোতে থাকি।
—থ্যাংকিউ সমুদ্র, দীপা হাত বাড়িয়ে দিল। কেন আমি বুঝতে পেরেছি, তবু জিজ্ঞেস করি—কী ব্যাপার?
—তোমার আসলে মার্কেটিং-এ যাওয়া উচিত। কিংবা এমব্যাসিতে।
—কেন?
—জানো না? ডিপ্লোম্যাসিতে এ প্লাস। কাউকে কোনওরকম ভাবে অফেন্স না দিয়ে অপ্রিয় সত্যগুলো বুঝিয়ে দেওয়া, সমালোচনা করা, এগুলো পারতে হলে বিশেষ ক্ষমতা থাকতে হয়। মাগনা হয় না।
—কাকে কী বুঝিয়ে দিলুম আবার?
—এই তো চ্যাংড়াগুলোকে? দিব্যি সামলে দিয়েছ।
—কী করে জানলে?
—জানতে হয়, তোমার যেমন ডিপ্লোম্যাসি আছে আমারও তেমন একটা থার্ড আই থাকতে পারে।
দীপা মুচকি মুচকি হাসতে লাগল। তারপর বলল—বি.ই. কলেজে আমাদের সঙ্গে মেলামেশা করতে এলে আওয়াজ খেতে। এখন তো আর সে পরিস্থিতি নেই। আফটার অল আমরা ক্লাসমেট, চলো একদিন তোমাদের বাড়ি নিয়ে চলো। খুব সন্দিগ্ধ টাইপের বাড়ি যদি না হয়।
—সন্দিগ্ধ টাইপের বাড়ি, মানে?
—এই! মেয়ে-বন্ধু নিয়ে এলেই বাড়িতে সাড়া পড়ে যায়। যাহ্, ছেলেটা হাত থেকে বেরিয়ে গেল, প্রেম-ফ্রেম করে ফেলল রে!
দীপাও হাসতে থাকে, আমিও।
—আমার বাড়ি সন্দিগ্ধ টাইপের কি না আমি জানি না। কখনও বান্ধবী নিয়ে তো যাইনি, কী প্রতিক্রিয়া হতে পারে, জানি না।
—কক্ষনও কোনও বান্ধবী হয়নি তোমার? বছর চব্বিশ বয়স তো হলই?
—তা হল। পেরিয়ে গেছে
—তা হলে? এই বয়স পর্যন্ত তুমি মেয়েদের সঙ্গে মেশোনি? অবাক করলে।
—কেন? এ রকম হয় না? আমার সে রকম সুযোগ হয়ে ওঠেনি।
—আমি কিন্তু অন্য কারণে আশ্চর্য হচ্ছি।
—অন্য কারণ? কী?
—একদম মনে হয় না। তোমার কিন্তু একদম আড়ষ্টতা নেই।
—এটা কি কমপ্লিমেন্ট?
—শিওর।
—তা হলে এক কাজ করো। তোমরা তিনজনেই একদিন আমাদের বাড়ি এসো।
—তিনজনে? তার মানে বাড়িতে দুয়ে-দুয়ে চার করবে না? তুমি একটা দুঁদে চালাক। উকিল হলে পারতে।
—যাক্, তিনটে সম্ভাবনার কথা জানা গেল। মার্কেটিং, ডিপ্লোম্যাসি, ওকালতি। আমার আর কোনও ভাবনা নেই।
কথা সেরে নিজের টেবিলে ফিরে গেল দীপা। একটু চেঁচিয়েই বলল—ডেটটা জানিয়ে দিয়ো কিন্তু।
ইচ্ছে করে করল, বুঝতে পারলুম। কী চায় কে জানে?
অবধারিত ভাবে পুং-সহকর্মীদের টনক নড়ে।
কিছুতেই আর একা পায় না আমাকে। এটাই যা রক্ষা। অফিসে থাকলে ক্যান্টিনে তিন সহকর্মিণীও এসে আমার টেবিলে বসে যায়। সাইটে যাই একা। বাড়ি ফেরার সময়ে অনিন্দ্য সুমিত দুজনেই আগে নেমে যায়।
বিজিতই একদিন ধরল।
—ডেটটা কবে?
—কীসের ডেট?
—দীপার সঙ্গে ডেট?
—ওহ্, দীপার সঙ্গে সে রকম কোনও ডেট-ফেট নেই। মানে তোমরা যা বুঝছ।
—বেশ তো কী রকমের, তুমি যা বুঝছ সেটাই শুনি না!
—ওরা তিনজনে একদিন আমার বাড়ি যাবে।
—তুমি নেমন্তন্ন করলে, না ওরা যেচে নিল?
—ওরাই।
বিজিত বাকি দুজনের দিকে তাকিয়ে বলল—কী বলেছিলুম। ঠিক নয়?
—কী বলেছিলে বিজিত?
আমি ওদের নাম ধরে ডাকলেও ওরা কেন কে জানে আমাকে সেন বলেই ডাকে। সমুদ্র নামটা কি ওদের উচ্চারণ করতে অসুবিধে হয়?
অনিন্দ্য হাত নেড়ে বলল—বিজিতই বলছিল। তুমি ডুবে ডুবে জল খাও। বেশ পটিয়ে নিলে। নিলে নিলে তিনজনকেই?
আমি ভালমানুষের মতো বলি— তিনজনকে নেওয়া সম্ভব? আইনে আটকে যাচ্ছে না? তা কাকে ছাড়লে তোমাদের সুবিধে হয়? তা ছাড়া এই অফিসের বাইরেও তো লক্ষ লক্ষ মেয়ে রয়েছে। তোমরা হঠাৎ এদের ওপরেই এমন হামলে পড়লে কেন? আশ্চর্য তো!
এই কথাটার উত্তর ওরা দিতে পারল না।
আমি জানি এটা এক ধরনের হিংসে। সেই ধরুন দুই বোনকে ফ্রক কি পুতুল কিনে দিলে একজন বলে না, ওরটাই বেশি ভাল! ওইটাই চাই। ঠিক সেই মানসিকতা। সমুদ্রের মেয়েগুলোর সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়েছে। কেন হল? আমাদেরও চাই। ওই তিনজনকেই। পৃথিবীর আর সব মেয়ে বাদ। সমুদ্রকে ওরা তিনজনে কোন পছন্দ করবে? আমরা কেন হেরে যাব। এই আর কি!
আমি বললুম— দ্যাখো অনিন্দ্য, ভদ্র আর স্বাভাবিক ব্যবহার করলে সাধারণত সেগুলোই ফেরত পাওয়া যায়। তোমরা ওদের নাজেহাল করতে, ওরা তোমাদের পছন্দ করেনি। কারণ তো পরিষ্কার। আমি ভদ্র থেকেছি, ওরা বন্ধুত্ব করতে এগিয়ে এসেছে। একই অফিসে কাজ করি। একটা মিনিমাম বোঝাপড়া তো চাই। সকলেই চায়।
—বন্ধুত্ব না পিরিত?
—এখনও পিরিতে পৌঁছয়নি, পৌঁছতেই পারে। সমস্ত রকম সম্ভাবনার দরজাই খোলা আছে।
—দ্যাখ বলেছিলুম কি না— সুমিত বলে।
—কী বলেছিলে?
অনিন্দ্য গোড়া থেকেই বলছে তুমি উদ্দেশ্য নিয়ে ওদের সঙ্গে মহান-টাইপের সাজছ সেন।
—তা তোমরাও উদ্দেশ্য নিয়েই মহান-টাইপ সাজো না! ফল পেতে পারো, আর দ্যাখো আমাকে সেন-সেন বলে ডেকো না। আমার একটা নাম আছে।
আমি বেরিয়ে আসি। হাতে একটা ওভারনাইট ব্যাগ। বম্বে যেতে হবে। একটা অল ইন্ডিয়া কনফারেন্স আছে। আমাকে আর দীপাকে পাঠাচ্ছে ফার্ম।