Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।

সমকামি – পঞ্চম পর্ব

এরপর তৃণা রিনা দেবীকে বাইরে ডাকেন: কাকিমা, কাকিমা একটু বাইরে এসো না। তৃণার ডাকে বাইরে যায় অন্যন্যার মা। রিনা দেবী বাইরে এলে তৃণা বলে: কাকিমা কাকুর সামনে ছবিগুলো দেখানো সত্যি সম্ভব ছিল না। তাই তোমাকে বাইরে ডাকতে হলো। রিনা দেবী মেয়ের দিকে তাঁকিয়ে বললো: তুই আমাদের ভুল বুঝিস না মা কিন্তু। অন্যন্যা মায়ের কথার কোনো উত্তর না দিয়ে ফোনটা তৃণার দিকে এগিয়ে দিল তৃণা ছবিগুলো বের করে দিয়ে বললো: কাকিমা তুমি এগুলো দেখো। অন্যন্যার মা তৃণার হাত থেকে ছবিগুলো দেখতে গেলে তৃণা বলে: আমি ফোনটা তোমার হাতে দিচ্ছি তুমি দেখো আমার হাতে করে তোমায় এগুলো দেখাতে আমার খুব লজ্জা করবে। ফোন টা অন্যন্যার মার হাতে দিয়ে দেয় তৃণা। ছবিগুলো বার বার এদিক ওদিক করে দেখতে থাকে রিনা দেবী। নিজের চোখকেই যেনো বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। এরকম ও হয় এটাও কি সম্ভব? সমস্ত শরীর গুলিয়ে ওঠে ওনার। কাউকে কিছু না বলে ফোনটা নিয়ে ঘরে ঢুকে যায় উনি। অন্যন্যা বাঁধা দিতে গেলে তৃণা বাঁধা দেয়: দাঁড়া আটকাস না কাকুকে দেখাবে তো দেখাতে দেনা। কাজটা তো তুই করিসনি তাহলে তুই এত লজ্জা কেনো পাচ্ছিস? দাঁড়া এখানে চুপ করে এতো অস্থির হোস না।

এরপর ভিতর থেকে অন্যন্যার মা ওদের ডাকে, অন্যন্যা, তৃণা তোরা আয় ঘরে। অন্যন্যা তৃণা দুজন ঘরে গিয়ে ঢোকে। অন্যন্যার মা, বাবা দুজনারই মুখ থমথমে। ওরা ঘরে ঢোকার পর অন্যন্যার ফোনটা ওর হাতে দিয়ে দেয় ওর মা। বিকাশ বাবু বলে : এরপর কি করতে চাইছিস তুই? খুব আস্তে করে উত্তর দেয় অন্যন্যা, কি করবো ডিভোর্স ফাইল করবো বাবা। এরপর আর কি ওর সাথে থাকা যায়? আমার সমস্যা ওর সাথে কোনো পুরুষের সম্পর্ক নয়, আমার সমস্যা ও অন্য কাউকে ভালোবাসে ও অন্য কারো সাথে কমিটেড। আমি এমন কারো সাথে সারা জীবন কি করে থাকবো যার আমার প্রতি কোনো অনুভূতিই নেই, আমি থাকা বা না থাক যার কাছে আলাদা করে কোনো ম্যাটারই করে না। তোমরাই বলো‌, আমি কি করবো? কি করা উচিৎ আমার? ঘরময় এক অদ্ভুত নিঃশব্ধতা। অন্যন্যার পাশে চুপ করে মাথা নীচু করে দাঁড়িয়ে আছে তৃণা ওর আর ওদের পরিবারের মধ্যে কিছু বলা উচিত হবে না ভেবে কিছুক্ষণ পরে বলে অন্যন্যা তাহলে এবার আমি যাই? কোনো দরকার হলে আমাকে জানাস আমি আর এখন থেকে কি করবো?

অন্যন্যার মা বলে, না না এখন কোথায় যাবি? এত সকালে এলি কিছুতো মনে হয় খাওয়াও হয়নি? তুই অন্যন্যার সাথে একটু থাক দুপুরে একসাথে খাওয়া দাওয়া করে যাস। বাড়িতে জানিয়ে দে নাহলে আবার তাঁরাও চিন্তা করবেন। আমি যাই রান্না ঘরে খাওয়ার ব্যাবস্থা করি। স্বামীকে উদ্দেশ্য করে বলে: কি গো তুমি আসো তো কথা আছে তোমার সাথে। অন্যন্যার বাবা, মা ঘর থেকে বেরিয়ে গেলে, অন্যন্যা তৃণাকে বলে মা, বাবার উপর বড্ডো বেশি চাপ দিয়ে দিলাম নাতো? এই সবে কটা দিন হলো বিয়েতে এতো খরচ হলো বাবার কিছু দেনা ও হয়েছে। এখন আবার উকিল। একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো অন্যন্যার ভিতর থেকে। আর তাছাড়া জানিস তো ওদের সাথে লড়ে ওঠা খুব সহজ হবে না। ওদের টাকা আছে প্রতিপত্তি আছে খুব সহজে ওরা এটাকে মেনে নেবে না। আচ্ছা তৃণা চলে এসে কি ভুল করলাম? মেনে নিয়ে থেকে গেলেই কি ভালো হতো? বাবা, মা পারবে তো সমস্ত পরিস্থিতিটা সামাল দিয়ে নিতে? আমি কিছু ভাবতে পারছি নারে, খুব হেল্পলেস লাগছে আমার। এই কারণেই এতো বড়োলোকের ঘরে আমার ইচ্ছে ছিলো না কোনো সম্পর্ক করার।

মা বাবাকে বললে তাঁরাও আমাকে নানা কথা বোঝালো। তৃণা আমি কি অন্যায় করেছি বলতে পারিস যে এতো বড়ো কষ্টটা আমাকে পেতে হলো? আমাকে এই ভাবে ঠকতে হলো? অন্যন্যার দুচোখ বেয়ে জল নেমে এলো। তৃণা ওর কাঁধের উপর হাত রেখে বললো অন্যন্যা জানি তোর সাথে যা হলো তা ভালো হলো না কিন্তু এটাও তো ঠিক যে অনেক দেরী হবার আগে তুই সব জানতে পেরে গেছিস। মন খারাপ করিস না। পরিস্থিতেকে ডেটে মোকাবিলা করতে হবে হেরে গেলে চলবে না। তুই ভেঙ্গে পড়লে কাকু কাকিমা ও ভেঙ্গে পড়বে। কষ্ট হবে জানি তাও বাবু মনকে শক্ত কর। এই ভাবে আরো কিছুক্ষণ সময় কাটে তৃণা আর অন্যন্যা নিজেদের মধ্যে কথা বলতে থাকে।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress