সমকামি – চব্বিশতম পর্ব
অন্যন্যা আর তৃণা গিয়ে নামে কৃষ্ণেন্দুর বাড়ির সামনে তারপর ক্যাবের ভাড়া মিটিয়ে সোজা গিয়ে ঢোকে কৃষ্ণেন্দুর ফ্ল্যাটে। সেকেন্ড ফ্লোরে থাকে কৃষ্ণেন্দু। লিফ্টে করে সোজা উঠে যায় সেকেন্ড ফ্লোরে। নামতেই চোখে পড়ে কৃষ্ণেন্দুর ফ্ল্যাট। ওর নামের লিফলেটটা জ্বলজ্বল করছে। ডোর বেলটা বাজতেই কৃষ্ণেন্দু এসে দরজা খোলে। ভীষণ ক্লান্ত আর বিধ্বস্ত লাগছে ওকে। অন্যন্যা বলে: দরজা আটকে দাঁড়িয়ে থাকবে নাকি ঢুকতে দেবে? আরে সরি সরি এসো ভীতরে এসো। আপনিও আসুন কি জানো নাম বলেছিলেন? ও হ্যাঁ মনে পড়েছে তৃণা। কথাগুলো বলতে কৃষ্ণেন্দুর যে বেশ কষ্ট হচ্ছে সেটা অন্যন্যা তৃণা দুজনেই বেশ বুঝতে পারে। তারপর ওরা গিয়ে ঢোকে ঘরের ভিতর।
ইসস কি অবস্থা চারিদিকে ছি এই ভাবে কেউ থাকতে পারে? বলে ওঠে অন্যন্যা। তৃণা চারিদিক ভালো করে তাঁকিয়ে দেখতে থাকে। ড্রইং রুমে একটা বড় ছবি টানানো মনে হচ্ছে কৃষ্ণেন্দু মার ছবি। তাঁকিয়ে থাকে তৃণা। কৃষ্ণেন্দু পাশে এসে দাঁড়িয়ে বলে: ওটা আমার মায়ের ছবি। এই এতো বড় ফ্ল্যাটে ওই ছবিটাই আমার একমাত্র সঙ্গী। অন্যন্যা অকস্মাৎ এসে কৃষ্ণেন্দুর কপালে গায়ে হাত দিয়ে বলে ইসস জ্বরে যে সারা গা পুড়ে যাচ্ছে। এখানে এসে বসতে হবে ধমকের সুরে বলে অন্যন্যা। তারপর সোফার উপর বসায় কৃষ্ণেন্দুকে। তারপর ওর দিকে তাঁকিয়ে জিজ্ঞাসা করে : ঘরে কি থার্মোমিটার আছে? কৃষ্ণেন্দু হা করে তাঁকিয়ে থাকে অন্যন্যার দিকে। অন্যন্যা আবার বলে: ওরকম হা করে তাঁকিয়ে কেনো আছো? থার্মোমিটার কি আছে ঘরে? কৃষ্ণেন্দু উত্তর দেয়: আছে ওই ঘরের ড্রয়ারে। অন্যন্যা গিয়ে নিয়ে এসে জ্বর মেপে দেখে প্রায় একশো তিনের উপর জ্বর। অন্যন্যা আশ্চর্য হয়ে বললো: এতো জ্বর তোমার তুমি এই ভাবে বসে আছো? ওষুধ কি খেয়েছো? ঘরে কি আছে ওষুধ? কৃষ্ণেন্দু এবার বলে: আমি আর বসে থাকতে পারছি না একটু শোবো অনু। ঘরে ওষুধ নেই আমি বেরোতে পারিনি। অন্যন্যার এবার খুব কষ্ট হয় কৃষ্ণেন্দুর জন্য। অন্যন্যা বলে: ঠিক আছে তুমি গিয়ে শোও আমি গিয়ে ওষুধ নিয়ে আসছি। ঠিক আছে বলে কৃষ্ণেন্দু সোফা ছেড়ে উঠতে গেলে আবার বসে পড়ে। অন্যন্যা বুঝতে পারে কৃষ্ণেন্দু পারছে না একা উঠে দাঁড়াতে। অন্যন্যা কৃষ্ণেন্দুর হাত ধরে বলে আমাকে ধরে ওঠো । কৃষ্ণেন্দুকে নিয়ে গিয়ে শুয়ে দেয় অন্যন্যা। তারপর এসে তৃনাকে বলে: তুই এখানে বস আমি গিয়ে ওষুধটা নিয়ে আসি। তৃণা বললো: না না অন্যন্যা, শোন তুই বরং ওর মাথায় একটু জল পট্টি দিয়ে দে। আমি গিয়ে ওষুধটা নিয়ে আসি।
অন্যন্যা কৃষ্ণেন্দুর পাশে বসে ওর মাথায় জল পট্টি দিতে থাকে। এরমধ্যে তৃণা ও চলে আসে ওষুধ নিয়ে। হঠাৎ অন্যন্যার মাথায় আসে সকাল থেকে কিছু কি খেয়েছে কৃষ্ণেন্দু? তা না হলে কি করে ওষুধ খাওয়াবে ওকে? ও আসতে করে কৃষ্ণেন্দুকে জিজ্ঞাসা করে: কৃষ্ণেন্দু সকাল থেকে কিছু কি খেয়েছো তুমি? না হলে ওষুধ কি করে দেবো তোমাকে। কৃষ্ণেন্দু অসারের মতো কোনো রকমে বলে: না কিছু খাওয়া হয়নি। অন্যন্যা দৌড়ে রান্না ঘরে যায় ও বুঝতে পারে না কি করবে এবার। কোথায় কি আছে না আছে কিছুই তো জানা নেই। তারপর ফ্রিজের কাছে যায় যে কোনো রকমে কিছু একটা খাইয়ে ওষুধটা যদি দেওয়া যায় তারপর ও দেখছে কি করা যায়। ফ্রিজ খুলে একটা দুধের বাটি ওর চোখে পড়ে। বাটি টা নিয়ে গরম বসায় গ্যাসে। তারপর বিস্কুটের কৌটো খুঁজে বের করে কোনো রকমে কৃষ্ণেন্দুকে খাইয়ে ওষুধ খাওয়ায়। গায়ের উপর চাদর টেনে শুয়ে দেয়। ক্লান্ত কৃষ্ণেন্দু ঘুমিয়ে পড়ে কিছুক্ষণের মধ্যে। অন্যন্যা উঠে যায় রান্না ঘরের দিকে। তারপর তৃনাকে উদ্দেশ্য করে বলে: ইস্ কি অবস্থা দেখ এখানে কি করে কি খুঁজে পাবো কিছুই বুঝতে পারছি না। এভাবে কি করে থাকে উনি? তৃণা হেঁসে বলে এই তো তুই এসে গেছিস এবার সব ঠিক হয়ে যাবে। আর এভাবে থাকতে হবে না ওকে। অন্যন্যা একটু মেকি রাগ দেখিয়ে বলে: আবার শুরু করলি তুই? শোন আগে রান্না ঘরটা একটু পরিষ্কার করি তারপর দেখছি কোথায় কি আছে? আর আজকের খাবার বাইরে থেকে আনতে হবে বুজলি আমাদের ও তো কিছু খেতে হবে। তৃণা কাজে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে এলে অন্যন্যা বলে: আরে না না আমি করে নিচ্ছি তুই বোস তুই না এলে আমি তো আসতেই পারতাম না। না এলে কি যে হতো এই লোকটার? তৃণা মজা করে বলে ওহ এখনই গিন্নী অন্য কাউকে তার রান্না ঘরে এ্যলাউ করছে না এরপর কি যে হবে? হয়তো ঘরেই ঢুকতে দেবে না। অন্যন্যা চোখ মুখ কুঁচকে বলে হ্যারে এতো বাজে তো তুই বক্তি না তাহলে এতো বাজে বোকা কোথায় শিখলি রে? তৃণা হাঁসে। সব পরিষ্কার করে গুছিয়ে রান্না ঘর থেকে বেরিয়ে আসে অন্যন্যা। তারপর কৃষ্ণেন্দুর জন্য একটু খিচুড়ি বসায় ওকে তো কিছু খেতে দিতে হবে। আর তৃনাকে বলে ওদের জন্য খাবার টা অর্ডার করে দিতে। তারপর কৃষ্ণেন্দুর ঘরে ঢুকে ওর গায়ে হাত দিয়ে দেখে জ্বরটা এখন নেই। তারপর ওকে আসতে করে ডাক দেয়। ” কৃষ্ণেন্দু এই কৃষ্ণেন্দু ওঠ অনেকক্ষণ ঘুমিয়েছো এবার উঠে কিছু খেতে হবে যে,কি হলো ওঠ”। অন্যন্যার ডাকে ঘুম ভাঙ্গে কৃষ্ণেন্দুর। চোখ খুলে তাঁকালে অন্যন্যা বলে: যাও ওয়াশরুমে গিয়ে দাঁত ব্রাস করে ফ্রেশ হয়ে নাও। তারপর আমি খাবার বানিয়েছি খেয়ে নেবে দেখবে অনেক ফ্রেশ লাগছে। কৃষ্ণেন্দু মন্ত্রমুগ্ধের মতো তাঁকিয়ে থাকে অন্যন্যার দিকে। অন্যন্যা আবার বলে: কি হলো যাও তিনটে বাজে অনেক বেলা হয়ে গেছে ক্ষিদে পেয়ে গেছে আমারও। তোমাকে খাইয়ে তারপর খাবো দেরী করো না। কৃষ্ণেন্দু বাধ্য ছেলের মতো অন্যন্যার সব কথা শুনতে থাকে।
কৃষ্ণেন্দু খাবার টেবিলে এসে বসে চারিদিকে তাকাতে থাকে ওর অগোছালো ঘরটাকে যেনো অনেকটাই গুছিয়ে তুলেছে অন্যন্যা। তারপর থালা সাজিয়ে খেতে দেয় অন্যন্যা। তারপর কৃষ্ণেন্দুকে উদ্দেশ্য করে বলে: তোমার ঘরে কোথায় কি আছে কিছুই তো জানি না তাই এই টুকুই করে দিতে পারলাম। তোমার কাজের দিদির নম্বরটা আমাকে দিও একটা ফোন করে দেবো যাতে আজকে চলে আসে। এই ভাবে তুমি কি করে কিছু করবে? কৃষ্ণেন্দু অন্যন্যাকে বলে: আমি তো খেয়ে নিলাম কিন্তু তোমরা? তোমরা কি খাবে? তোমরা আজ প্রথমবার আমার বাড়িতে এলে আর আমি কিছুই করতে পারছি না উল্টে যা বুঝতে পারছি এসে থেকে তোমার বসা হয়নি। আমার নিজের ঘর আমি নিজেই যেনো চিন্তে পারছি না।
তৃণা এবার বললো: কিচ্ছু চিন্তা নেই স্যার, আপনার প্রেয়সী না মানে এম্প্লয়ি, রূপে লক্ষ্মী আর গুনে স্বরস্বতী কিছু চিন্তা করবেন না একবার যখন এসে গেছে ঘর কেনো আপনার জীবনটা ও এবার সুন্দর গুছিয়ে দেবে। অন্যন্যা ধমক দিয়ে বলে তুই আবার বাচালতা করছিস? এই তোকে নিয়ে আসাটাই না আমার ভুল হয়ে গেছে। তৃণা এবার কৃষ্ণেন্দুর পাশের চেয়ারে বসে ওকে উদ্দেশ্য করে বললো দেখলেন তো কৃষ্ণেন্দু বাবু দেখুন।এতদিন কেউ ছিল না আমি ছিলাম আপন এখন নেই। মানে আপনি এসে গেলেন আমি ভুল হয়ে গেলাম। একটা গোটা রবিবার এই আপনাদের জন্য একটু বিশ্রাম পেলাম না। কোনো মায়া নেই একটু আমার জন্য। কি অদ্ভুত।!!!! কৃষ্ণেন্দু অন্যন্যার দিকে তাঁকিয়ে বললো: ও তো ঠিকই বলেছে অন্যন্যা এটা তো সত্যি ঠিক হচ্ছে না ওর সাথে। ইনফ্যাক্ট আজকে তোমার ও একটু রেস্ট দরকার ছিল আমার জন্য তোমাদের দুজনেরই খুব কষ্ট হলো আজ।
অন্যন্যা কৃষ্ণেন্দুকে বললো: আচ্ছা ও যে ফাজলামো করছে সেটা বুঝতে পারছো না তুমি? ওতো কথা না বলে গিয়ে শুয়ে পড়ো আমি আসছি জ্বরটা মাপতে হবে। এই তৃণা আমাদের খাবারটা কতো দূর দেখ না। এরপর বাড়ি ও ফিরতে হবে মা রেগে গিয়ে একটা ফোন ও করেনি এসে থেকে। তুই খাবারটা একটু দেখ কি হলো? আমি ওর জ্বরটা মেপে আসছি। অন্যন্যা কৃষ্ণেন্দুর জ্বর মাপতে মাপতে বললো কাজের দিদির নম্বর টা দিও আমি ফোন করবো। এরপর ঘরের ডোর বেলটা বেজে উঠলো। অন্যন্যা কৃষ্ণেন্দুকে উদ্দেশ্য করে বললো: ওই মনে হয় খাবার চলে এসেছে আমি খেয়ে আসছি আমি না খেলে তৃণা ও খাবে না। তুমি বিশ্রাম নাও। আমি এসে ফোনটা করছি। তবে এখন তোমার জ্বরটা নেই। কটাদিন বিশ্রাম নিলে একদম ঠিক হয়ে যাবে।
অন্যন্যা খেয়ে এসে দেখে কৃষ্ণেন্দু একটা সিগারেট ধরিয়েছে। এক টানে সিগারেটটা কৃষ্ণেন্দুর মুখ থেকে টেনে নিয়ে ফেলে দেয় অন্যন্যা। খুব রেগে গিয়ে বলে: এটা কি করছো তুমি? সিগারেটটা এখন না খেলে কি হবে? অদ্ভুত মানুষ তো। অন্যন্যা পিছন ঘুরে চলে যেতে চাইলে ওর হাতটা টেনে ধরে কৃষ্ণেন্দু। উঠে দাঁড়িয়ে মুখের কাছে মুখটা এনে বলে: কেনো করছো আমার জন্য এতো কিছু? তুমি তো আমাকে পছন্দই করো না।এরমধ্যে তৃণা ঘরে ঢুকতে গিয়ে ওই দৃশ্য দেখে চোখে হাত চেপে ধরে উল্টো দিকে ঘুরে দাঁড়িয়ে বলে: ছি ছি ছি আরে প্রেম করছেন ভালো কথা দরজাটা তো বন্ধ করে নিতে পারতেন। অন্যন্যা কৃষ্ণেন্দুর থেকে হাত ছাড়িয়ে ছুটে এসে বলে এই তুই চুপ করবি? সারাক্ষণ হাবিজাবি কথা বলে যাচ্ছিস। আর কৃষ্ণেন্দুকে বলে: কাজের দিদির নম্বরটা দাও। কৃষ্ণেন্দু ও বাধ্য ছেলের মতো নম্বরটা দিয়ে দেয়।!!!!! তারপর অন্যন্যা ফোন করে বলে: মালতি দি বলছেন? মালতি ( কৃষ্ণেন্দুর বাড়ির কাজের দিদি)। অচেনা নম্বর দেখে মালতি ধীরে ধীরে বললো: কে বলতেছেন? অন্যন্যা বললো: আপনি আমাকে চিনবেন না। আমি কৃষ্ণেন্দুর ফ্ল্যাট থেকে বলছি। উল্টো দিক থেকে মালতি বললো: দাদার ফ্ল্যাট? আপনি কে? কি হয়েছে দাদার? অন্যন্যা বললো: আমি কে সেটা তো আপনি চিনবেন না। কিন্তু দাদার শরীর খুব খারাপ খুব জ্বর। আপনি বিকেলে আসছেন তো? আসলে না আসলে শরীর এতো খারাপ যে নিজে কিছু করতে পারবে না। ওপাশ থেকে মালতি বললো: না না আমি আসবো দাদা আমাকে একবার জানতে পারতো তাহলে আমি যত কষ্টই হোক ঠিক যেতুম। অন্যন্যা তার উত্তরে বললো: ঠিক আছে আমি সকালটা করে দিয়েছি তুমি বিকেলে এসো। এখন আমি রাখছি। বলে ফোন কেটে দেয় অন্যন্যা। তারপর কৃষ্ণেন্দুকে বলে: একটু কষ্ট করে সোফায় গিয়ে বসো তারপর আমি ডেকে নিচ্ছি। কৃষ্ণেন্দু সোফায় বসে তৃণার সাথে গল্প করতে থাকে। অন্যন্যার ব্যাপারে ওর বিয়ে ওর স্বভাব ওর সম্পর্কে অনেক কথা তারপর আরো নানা কথা নিয়ে কথা হতে থাকে তৃণার সাথে। এরমধ্যে অন্যন্যা কৃষ্ণেন্দুর শোবার ঘর বিছানা সব পরিষ্কার করে চাদর পাল্টে সবকিছু গুছিয়ে কৃষ্ণেন্দুকে গিয়ে বলে: যাও তোমার ঘর বিছানা সব রেডী করে দিয়েছি। যাও শুয়ে বিশ্রাম নাও। যা অবস্থা করে রেখেছিলে সব কিছুর। যাই হোক, এখন কেমন লাগছে শরীর? কৃষ্ণেন্দু অন্যন্যার ঘামে ভেজা মুখটার দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাঁকিয়ে থাকে। অন্যন্যা আবার পাল্টা প্রশ্ন করে কি হলো কেমন লাগছে শরীর? হুমম, হ্যাঁ, ভালো আগের থেকে অনেক ভালো ফিল করছি।
অন্যন্যা বলে: ভালো ফিল করলেই ভালো। কালকে কিন্তু আবার অফিস যাওয়ার চেষ্টা করো না। কটাদিন একটু বিশ্রাম নিও। আরে না না অফিসে অনেক কাজ পেন্ডিং পড়ে আছে কামাই করা যাবে না ।
অন্যন্যা ধমকে বলে খুব যাবে। আমি বললাম তো তিন চার দিন রেস্ট নিয়ে তরপর যাবে। সেটাই হবে। কোনো উত্তর দেয় না কৃষ্ণেন্দু। ও জানে এই মেয়ের সাথে জেদ করে পারা যাবে না। তারপর অন্যন্যা তৃনাকে গিয়ে বললো: তৃণা চল এবার আমরা ও বেরিয়ে পড়ি। জানি না বাড়িতে কি অশান্তি অপেক্ষা করে আছে আজকে। মা যা শুরু করেছে না সামলানো যাচ্ছে না। তাও তুই বলে বেরোতে পেরেছি না হলে তো কোনো প্রশ্নই ছিল না। আবার কৃষ্ণেন্দুর দিকে তাঁকিয়ে বললো: তোমার ওষুধ ওই ড্রয়ারে রাখা আছে যদি বোঝো জ্বর আসছে খেয়ে নিও জ্বরটা বাড়তে দিও না কিন্তু। কাজের দিদি আসবে। এখন তাহলে যাবো আমরা।
কৃষ্ণেন্দু অসহায়ের মতো অন্যন্যার দিকে তাঁকিয়ে বললো: এখুনি যাবে গিয়ে? আর একটু থাকলে হতো না। অসুস্থ ছিলাম ওটাই ভালো ছিল একা থাকতে হচ্ছিল না। তৃণা চট করে বলে ওঠে: পার্মানেন্ট কাছে নিয়ে আসুন তাহলে আর সারা জীবন একা থাকতে হবে না। কৃষ্ণেন্দু আর অন্যন্যা একে অপরের দিকে তাঁকিয়ে থাকে। তারপর অন্যন্যা মুখ ঘুরিয়ে বলে: আমি আসছি সাবধানে থেকো দরকারে ফোন করো। কৃষ্ণেন্দু অভিমানের সুরে বলে: ফোন করলেই কি তুমি আসতে পারবে? উল্টো দিকেই মুখ করেই অন্যন্যা বলে: চেষ্টা তো করতেই পারি।