সন্তান
রমলাদেবী ও মাধববাবুর দশ বছরের দাম্পত্যজীবনে অনেক চেষ্টার পরও কোনো সন্তান এলো না। মাধববাবু চেষ্টার কোনো কার্পণ্য করেন নি। যখন যেখানে চেন্নাই ব্যাঙ্গালোর দিল্লী খবর পেয়েছেন দৌড়ে গিয়েছেন। রমলাদেবীও ক্রমাগত যাত্রায় পরিশ্রান্ত হয়ে পড়েছিলেন। একদিন বললেন, শুনেছি উলুবাড়ির মাতৃসদনে অনেক অনাথ শিশুদের আশ্রয়। চল না, একজনকে আমরা নিয়ে আসি আমাদের বাড়িতে। রমলাদেবী যেন মাধববাবুর মনের কথা বললেন। মাধববাবুও অনেকদিন ধরে রমলাদেবীকে কথাটা বলবেন বলে ভাবছিলেন। কিন্তু রমলাদেবীর কি প্রতিক্রিয়া হয়, ভেবে আর বলা হয়ে উঠেনি। এভাবেই ছোট্ট আভা ওদের জীবনে এসেছিলো।
‘আর কত দেরী করে করবে? এদিকে মেয়ে ফোন করে করে পাগল করে দিচ্ছে । নাতির মুখে সময়মতো ভাত দিতে হবেতো।’ মাধববাবু রমলাদেবীকে তাড়া লাগালেন।
আজ রমলাদেবীকে খুব সুন্দর দেখাচ্ছে। টিয়া রঙের একখানা জামদানী শাড়ি পড়েছেন। স্টেয়ারিং হাতে গাড়ী স্টার্ট দিতে দিতে মাধববাবু রমলাদেবীকে দেখলেন। রমলাদেবীর চোখে মুখে প্রশান্তির আভা ছড়িয়ে পড়েছে। মেয়ে হয়েছে মা অন্ত প্রাণ । শ্বশুরবাড়ী শিলংএ। জামাই বিএসএনএলে কর্মরত। দিনে দুই তিনবার ফোন করে মার কাছ থেকে সংসারের যাবতীয় খবর নেয়।আজ নাতির মুখে ভাত। মাধববাবু গিয়ার চেঞ্জ করে গাড়ীর গতিবেগ বাড়িয়ে দিলেন…