সনেট ১
যে শান্তি গৃহের কোণে স্নেহ স্নিগ্ধ ছায়া
মেলি’ রচে ধরাতলে অমরার মায়া,
পরিজন প্রীতিপুষ্প অম্লান সৌরভে
ভরি’ দেয় এ-জীবন আনন্দ-গৌরবে,
দিন হ’তে দিনান্তের অনাহত গতি
নীরবে তটিনী-সম খোঁজে পরিণতি
অন্তহীন প্রশান্ত সে কোন সিন্ধুবুকে—,
সে নহে আমার লাগি’ |
নিয়ত সম্মুখে
বৈশাখ ঝটিকা যবে দুর্নিবার বেগে
বারি-বজ্র-অগ্নিগর্ভ ঘনকৃষ্ণ মেঘে
হেলায় ভাসায়ে চলে — আসন্ন ঝটিকা
বক্ষে করি’ তবু জ্বলে যেই দীপশিখা
তারি চিত্তে শঙ্কাকুল সেই শান্তি-সম
শান্তিতে ভরিয়া যাক এ জীবন মম |
সনেট ২
শুনিনু নিদ্রার ঘোরে অযোধ্যার নাম |
হেরিলাম স্বর্ণপুরী | পথে-পথে তার
শত-শত নরনারী কাঁদে অবিরাম,
আর্তকণ্ঠে নভোতলে ওঠে হাহাকার |
তরুণ দেবতা সম কিশোর কুমার
যৌবনে সন্ন্যাসী সাজি’ চলিয়াছে বনে,—
সীতার বিরহ-ভয়ে পুরী অন্ধকার,
গগন শ্বসিয়া ওঠে নিরুদ্ধ ক্রন্দনে |
চমকি’ উঠিনু জাগি’ | তপ্ত নিদাঘের
মূর্ছিত ভূবন ভরি’ রৌদ্রানল জ্বলে |
স্টেশন-অঙ্গনে ডাকে গ্রীষ্মাতুর স্বরে
অযোধ্যার নাম | ধূসর ধূলির ‘পরে
বসে আছে বানরের দল | দূরে ঝলে
সূর্যালোকে স্বর্ণচূড়া ভগ্ন মন্দিরের |