লিভ ইন
একান্নবর্তী পরিবার থেকে শুভর মা একবারে ছোট্ট পরিবার তৈরি করেছিল যেখানে মা-ছেলে এবং বাবা। মানিয়ে নিতে পারছিলেন না বৃহৎ পরিবারকে, অনেক সমস্যা তৈরি হয়েছে। তাই ছোট পরিবারের মধ্যে নিজেদের সীমাবদ্ধ করে ছেলেকে মানুষ করে তুললেন। শুভ কিছুদিন আগে বিয়ে করেছিল তারই বান্ধবী অনিন্দিতা কে। এখন অবশ্য জোজো কে নিয়ে অনিন্দিতা ওর বাপের বাড়ি বালিগঞ্জে থাকে। অনিন্দিতা এবং শুভর ভালোবাসার ফসল তোজো। সন্তানকে নিয়ে ওদের খুশির অন্ত ছিল না। কি ভাবে মানুষ করবে ,কীভাবে ওকে আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবে সে স্বপ্ন দুজনেই দেখ তো। অনিন্দিতা বাড়ি ছেড়েছে কিছুদিন হল ।চলে গেছে বালিগঞ্জে বাপের বাড়ি। শুভজিৎ এর বাড়িটা একেবারেই ফাঁকা। তোজো কে নিয়ে অনিন্দিতা যখন ছিল , আনন্দের ঘর সংসার। এখন শুভ নিয়মিত বাড়িতে আসে না ,খাওয়া দাওয়া করে না। মা_বাবা অনেক বুঝিয়েছে কোনো কাজ হয়নি। ইদানিং শুভ বেলেঘাটায় একজনের সঙ্গে লিভ ইন করে। অতি আধুনিক জীবনে লিভ ইন বড্ড ক্ষতিকারক। নেই কোন সুখ শান্তি ,নেই সন্তানের ভালোবাসা ,সংসারের বন্ধন। ভোর থেকে সারাদিনটা একটা শৃংখলাবদ্ধ জীবন _এখানে বড় অভাব। কিছুদিন ভালো লাগে তারপর আবার একই রকম সমস্যা। জোজো কে দেখে কষ্ট হয়, মাঝেমধ্যে পাপার জন্য কান্নাকাটি করে। অনিন্দিতা গাড়ি দিয়ে পাঠিয়ে দেয় তাকে দেখতে। অনেক সময় ওদের দেখাও হয়না। বিবর্ণ মুখে ছেলেটা দাঁড়িয়ে থাকে। অথচ শুভর বাবা যখন একান্নবর্তী পরিবারে থাকতেন সেখানে কত আনন্দ উৎসব হত। সবকিছু হারিয়ে গেছে। একেবারে একা। শুভর মা বাবা দুজনে শুধু চোখের জল ফেলে। এখন ভাবে একান্নবর্তী পরিবার থেকে না বের হলেই ভালো হতো ।শুভ তবে এমন জীবন যাপন করত না। সবচেয়ে কষ্ট শিশুর। তোর জোজোরা বাবা অথবা মা এর ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত তাই এদের জীবনে একাকীত্ব নিষ্ঠুরতা দানা বাঁধে তোদের জন্য ভয় হয় তাদের বংশের ছেলে কিভাবে মানুষ ঠিকমতো বাচার মত বাচতে। পাচ্ছে না সে ,অনেকবার বোঝানোর পরেও পারেনি শুভর মা তাকে ফিরিয়েআনতে।। আট বছর শুভ ও আনন্দিতার বন্ধুত্ব ছিল। অল্প দিনের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয় ডিভোর্স । একান্নবর্তী পরিবারে একসাথে বেড়ে ওঠা সকলের শাসনে ভালোবাসা, আর অন্য কাউকে প্রয়োজন পড়ে না আইনি হলেও সংসার জীবনের পক্ষে লিভ ইন ক্ষতিকারক। কত সহজে ভালোবাসা ছিন্ন হয়ে যায়। সন্তান হিসেবে নিজের বাবা-মার কাছ থেকে শুভ আলাদা। ওদের দোষ কোথায়। ছেলেবেলা থেকে এইভাবে বড় হচ্ছে। সংসার টা বড় জটিল ধীরে ধীরে ফিরে আসুক আমাদের একান্নবর্তীবর্তী পরিবারগুলো। যেখানে সকলের ভালোবাসায় কখন শিশুরা বড় হয়ে যায় বাবা-মার খেয়াল থাকত না।বাবা মনে মনে থাকেনা। শিশুরা তাদের শৈশব কালকে ফিরে পাক পরিবার পরিবার পরিজনদের নিয়ে আনন্দে মেতে উঠুক।।