রামায়ণ : লঙ্কাকাণ্ড – শ্রীরামচন্দ্র কর্ত্তৃক দেবীর স্তব ও হনুমানের নীলপদ্ম আনয়ন
হনুমানে পাঠাইয়া পদ্ম আনিবারে।
শ্রীরাম করেন স্তব দেবী চণ্ডিকারে।।
দুর্গে দুঃখহরা তারা দুর্গতি নাশিনী।
দুর্গমে শরণি বিন্ধ্যাগিরি-নিবাসিনী।।
দুরারাধ্যা ধ্যানসাধ্যা শক্তি সনাতনী।
পরাৎপরা পরমা প্রকৃতি পুরাতনী।।
নীলকণ্ঠপ্রিয়া নারায়ণী নিরাকারা।
সারাৎসারা মূলশক্তি সচ্চিদা সাকারা।।
মহিষমর্দ্দিনী মহামায়া মহোদরী।
শিব সীমন্তিনী শ্যামা সর্ব্বাণী শঙ্করী।।
বিরূপাক্ষী শতাক্ষী সারদা শাকম্ভরী।
ভ্রামরী ভবানী ভীমা ধূমা ক্ষেমঙ্করী।।
কালীহ কালহরা কালাকালে কর পার।
কুলকুণ্ডলিনী কর কাতরে নিস্তার।।
লম্বোদরা দিগম্বরা কলুষ-নাশিনী।
কৃতান্ত-দলনী কাল ঊরু বিলাসিনী।।
ইত্যাদি অনেক স্তব করিলা শ্রীহরি।
তুষ্টা হৈলা হৈমবতী অমর ঈশ্বরী।।
কিন্তু রৈলা অদৃশ্যেতে নীলপদ্ম আশে।
রামের কমল আঁখি অশ্রুজলে ভাসে।।
এইরূপে কতক্ষণ রহে ভগবান।
ওথা নীলোৎপল তুলে বীর হনুমান।।
অষ্টোত্তর শত পদ্ম করি উত্তোলন।
পবনবেগেতে বীর করে আগমন।।
রামচন্দ্র নিকটে আসিয়া উত্তরিল।
গণনা করিয়া রামে নীলপদ্ম দিল।।
আনন্দিত হৈল রাম পেয়ে নীলপদ্ম।
দেবীভাগে বিচিত্র করিল চিত্ত-পদ্ম।।
সঙ্কল্প করিল পদ্ম করিতে প্রদান।
কৃত্তিবাস রচিলেন গীত রামায়ণ।।