তুমি এসেছিলে লিসবন আর আমি দূর ঢাকা;
আমাদের দেখা হয়েছিলো গ্র্যান্টস হাউজের উষ্ণ রান্নাঘরে;
রাঁধছিলে তুমি পোর্ক ও পোটেটো; আমার শুঁটকি রান্না দেখে
চেয়ে রয়েছিলে দুই নীল চোখ বিস্ময়ে পুরো ভ’রে।
‘হাই’, তুমি বলেছিলে, ‘কোথা থেকে যেনো তুমি?’
‘বাঙলাদেশ; আর তুমি?’–বলেছিলে, ‘আমি পর্তুগাল।’
— ‘ব্যাঙলাদেশ?’ চিনতে পারো নি- ওটি সাগর না মরুভূমি;
লজ্জা তোমার লাল গণ্ডকে করে তুলেছিলো আরো লাল।
তারপর আমরা অনেক রেঁধেছি বুঝছি রান্নায়ও আছে সুখ।
তুমি খুব সুখে খেয়েছো শুঁটকি, ভর্তা, বিরিয়ানি, মাছ, ভাত,
আমিও খেয়েছি পোর্ক ও পোটেটো; স্বাদে ভ’রে গেছে মুখ;
কথা ব’লে ব’লে বুঝতে পারি নি গভীর হয়েছে রাত।
‘নারীবাদী আমি’, বলেছিলে, ‘খুবই ঘৃণা করি প্রেম আর বিয়ে,
প্রেম বাজে কথা; বিয়ে? ওহ্ গশ! খুবই নোংরা কাজ।’
‘প্রেম বেশ লাগে’, বলেছি আস্তে, ‘কখনো বিবাহ নিয়ে
ভাবি নি যদিও; মনে হয় বিবাহের কোনো দরকার নেই আজ।’
চুমো খেতে খেতে ঘুমিয়েছি আমরা; বহু রাত গেছে সুখে,
আমাদের দেহে বেজেছে অর্গ্যান, ড্রাম, ব্যাগপাইপ রাশিরাশি;
একরাতে দেখি কী যেনো জমেছে তোমার সুনীল চোখে,
আধোঘুমে ব’লে উঠেছিলে, ‘প্রিয়, তোমাকে যে ভালোবাসি।’
কেঁপে উঠেছিলো বুক সেই রাতে; বেশি নয়, আট মাস পরে
বলেছিলে, ‘চলো বিয়ে করি, আমরা এখন বিয়ের ইচ্ছে ভারি।’
চুমো থেকে আমি পিছলে পড়েছি, ফিরেছি নিজের ঘরে;
‘চলো বিয়ে করি, চলো বিয়ে করি’, প্রতিটি চুমোর পরে
এভাবেই, প্রিয়, একদিন হলো আমাদের চিরকাল ছাড়াছাড়ি।