মাসীর বাংলিশ
#বৌদি ও বৌদি ।
*মাসি আস্তে কথা বলো।দেখছতো পড়াচ্ছি।
#ঠিক আছে ফিসফিসিয়ে বলে,আজ কি কুক করব।
*ফিক করে হেসে বলি… ভাত ,মাছ,ছেলের পাতলা করে সবজি দিয়ে মুরগির মাংস।
#আচ্ছা বৌদি তোমার একটু অসুবিধা হবে।
*আমি বলি কিসের অসুবিধা??
আর কামাই করিস না।
#এই আমি একটু ইংরেজি বলি।
আমারতো এসটাটাস আছে।
*কি স্ট্যাটাস রে।
#দেখো মাই হেয়ারব্যান্ড ওয়াক ডু বিলাতি মদের শোপে।
*আরেকবার বল।ওরে “হেয়ারব্যান্ড” কি??
#আরে ‘মুনিয়ার ফেদার ‘।
*দম নিয়ে বলি ওটা “হ্যাসব্যান্ড”।ওয়াক মানে হাঁটা।ওয়ার্ক হবে।
ভুল ইংরেজি বলতে বলতে ইংরেজি বলা শিখে যাবি।
#দেখি হাজার স্বপ্ন গো বৌদি।বিদেশ যাবার কথা চলছে।
*যা রান্না কর।তোর ইংরেজি শুনলে আমি ইংরেজি ভুলে যায়।
# ঘরে এসে বলে বৌদি দুধ হট করেছি #কমিকস কই?
*কমিকস কে পড়বে?
# দুধে মিশিয়ে যেটা খাও।
*ও কর্নফ্লেক্স।তাই বল।
রান্না করে মাসি চলে যায়।কিছুক্ষণ পর ফোন।
#বৌদি আমি মুরগির স্টুলটা ঢেকে
আসেনি।
*কি বলছিস…বলে ফোনটা কেটে দিই।
কিছুক্ষণ পর ছেলেকে খাওয়াতে যাব ..দেখি সবজি- মাংসের বাটির ঢাকনাটা আলগা..তখন ভাবছি মাসি এটায় ফোন করে বলল কি??।
“মুরগির স্টুল”!
আমার ছয়বছরের ছেলের কি হাসি!
* এইভাবে মাসির ইংরেজি শুনে আমাদের শরীর মন ভালো থাকে।লাফিং ক্লাসে কাউকে যেতে হবেনা।
#একদিন দেখি মাসি হোয়াটস আপে মেসেজ পাঠিয়েছে।
* বাবা এইতো দুইদিন আগে বলল বৌদি “এসমার্ট ফোন “কিনেছি।এর মধ্যেই লিখেছে।
#”ও বদি নট কাম।
বড -ই হট।
পরদিন সকালে মাসি এল কাজ করতে।
#বৌদি “মিজমিজ “কোথায় পাওয়া যায় ??
* কি কিসমিস??
#না মিজমিজ।তারপর আমার ফ্রিজ থেকে মেউনিস বার করে বলে এটা ।
#আচ্ছা জানো বৌদি বাজারে ব্রুসলি পাওয়া যায়।কি করে রান্না করে নেট দেখে বলে দেবে?
*ব্রুসলি কি গো!
ঠিক করে বলো??
# ধুস তুমি এত ছেলে পড়াও জানো না
*কুস্তিগীর ব্রুসলির কথা জানি।
#দেখলে আমি ভুল করিনি।
*আরে মাসী তুমিতো রান্না করে খায় বলছ?
আমিতো কুস্তিগীর ব্রুসলির কথা বলছি।
#না বৌদি রান্না করে খায়। সবুজ ফুলকপি।অনেক ক্যাকরি আছে।
*কপাল চাপড়ে বলি ও—-
ব্রকোলি বলছ?
যেমন করে কপি রান্না করো ..ঠিক একই ভাবেই করবে।
তারপর ক্যাকরি শুনে আমার আর হাসি বন্ধ হয় না।ক্যালরি বলে গো মাসী।
#তারপর বলে বৌদি কোমোটার এসেছিল কাল।বলেছে ওর যে টালির বাড়ি সমেত এক কাটা জমি আছে,তাতে ফিলাট করে দেবে।
*আমি কোমোটার শুনে আরো হাসতে হাসতে বলি ,ও আচ্ছা।
#তুমি বৌদি বড্ড হাসো।শোনো বিচিং পাউডার দাও।
*না গো মাসি বাচ্চা আছে ব্লিচিং পাউডার রাখি না।
কি করবে গো ,হাসির রেশ টেনে বলি ।
#বাড়িতে রাখো না বললে বৌদি ,ওই যে সব সময় তো ফ্রিজে রাখো।
*তোমার মাথা খারাপ হয়েছে মাসী।ব্লিচিং এর গন্ধে আমার ফ্রিজের খাবার নষ্ট হয়ে যাবে যে।
#বাবা রে বাবা !
বেগুনি ভাজব গো..তাই লাগবে।
*আমি হাসতে হাসতে মাটিতে গড়াগড়ি ।বেকিং পাউডার চাইছে।
মাসীর রোজনামচা চলছিল বেশ।
*হঠাৎ শুনলাম সাহাবাবুর ছেলে লন্ডনে থাকে সেখানে মাসি যাবে।পাসপোর্ট করতে হবে। মাসির সব বাড়ির কাজ মেয়ে করবে।শুনে মনটা বেশ খারাপ হয়ে গেল।মাসির জন্য একটু হাসতে পারতাম।
মাসির মেয়ে মুনিয়া কাজে আসতেই বুঝলাম এ ও মায়ের কার্বন কপি।ইংরেজি কথার ফুলঝুড়ি।আমি জিজ্ঞেস করলাম তোর বাবা তো বাড়িতে কম আসে ,তোর মা চলে গেলে কার কাছে থাকবি।
বলল সাহা বাড়িতে থাকবে।
@ হঠাৎ মুনিয়ার ফোন।মুনিয়া বলছে –”ইয়েস ইয়েস জাস্ট পাঁচ মিনিট”।
আমি বললাম কেক বানাবো।ফ্রেশ ক্রিম লাগবে।এনে দিবি মুনিয়া।
@ কি কোম্পানির লাগবে মামী?
*যা হোক আন।ফ্রেশ ক্রিম বলবি।
@এক ঘন্টা বাদে গেটে দারোয়ানকে একটা ফ্রেশ ক্রিম কিনে দিয়ে বাড়ি যায়।
ফোন করে আমাকে।বৌদি পেয়েছ?আমি আর উপরে উঠলাম না।
*আমি বলি তুই খাবার জিনিস দারোয়ানের হাতে কি করে দিলি।
@না গো তাড়া ছিল।তা খাবার জিনিস বলছ কেন??
ও তুমি ক্রিম খাও।জানো মামী আমাদের পাশের বুড়ি জেঠি ছাই খায় শুনেছি।
* আমি বলি তোর মুন্ডু।ফ্রেশ ক্রিম কেকে দেব।
@মামী ঐ মুখে মাখার ক্রিম—-
কলিং বেলের শব্দ।দারোয়ান একটি ফ্রেশ ওয়াশ দিয়ে যায়।
পেয়েছো মামী??
*আই তুই ঐ কেকটা এই ক্রিম দিয়ে সাজিয়ে তোকে খাওয়াব।দেখবি পেট একদম ফর্সা হয়ে যাবে।
তারপর আর কি মুনিয়া ও হাসে আমি ও ফোন ধরে হাসতে থাকি।আমার ছয় বছরের ছেলে বলে হাসছ কেন?দিদি কি অতো জানে?তুমি গুছিয়ে বলো নি।
ভাবলাম আর মায়া বাড়াব না।এই পাখি ও ফুড়ুতহবে।যা বাংলিশ বলছে এবার এ ও মার মত বিদেশ চলে যাবে।
☺😊–
ছয় মাস বাদে মাসীকে দেখে চমকে উঠি।তুমি চলে এসেছ??
☺😊
#বৌদি ওখানে সবাই” ইংরেজিতে” কথা বলে আমার দম আটকে আসছিল..আমার মাতৃভাষা অনেক ভালো গো.. পুরো অসকিজেন।
*কি??
#”ও সরি বৌদি অক্সিজেন”।
#লিপিট করলাম তাই বুঝতে পারলে??।
*হ্যাঁ রিপিট করলে তাই বুঝলাম।