Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » মাসাই অবন্তিকা || Malay Roychoudhury

মাসাই অবন্তিকা || Malay Roychoudhury

দুশো বছর আগে আমার শব সেরেংগেটির শুকনো ঘাসে
নিয়ম মেনে ফেলে দিয়ে গিয়েছিল বুড়ো মাসাই কর্তারা
যাতে শকুন শেয়াল হায়নারা ছিঁড়ে খেয়ে আমার সুনাম অক্ষুন্ন রাখে
কোনো পশু খেতে চায়নি আমার মরদেহ ওই ভাবেই দুদিন পড়েছিলুম
তুই তখন একমাত্র মাসাই দেবতা এনগাদির সদাশয় কালো রূপের
থানে গিয়ে প্রার্থনা করেছিলিস যাতে এনগাদির লাল রাগি রূপ
আমাকে ছেড়ে চলে যায়, রাতে আমার শবে ভেড়ার চর্বি আর রক্ত মাখিয়ে
অন্ধকারে দেখেছিলিস চোখের আলো জ্বেলে সিংহরা আমাকে শুঁকে চলে গেল
তারপর এলো হায়নার দল, তারা আমায় ছিঁড়ে-ছিঁড়ে তোর মুখে হাসি ফোটালো
মাদি আলফা হায়নার গর্ভে ঢুকে প্রতিটি হায়নার রক্তে তারপর থেকে
আমাকে পাচ্ছে মাসাই যুবতীরা তাদের মাংস খাইয়ে রেখেছে অমর করে

দুশো বছর আগে সেরেংগেটির বুনোঘাস রোদে ন্যাড়া মাথায়
গোরুর রক্ত খেয়ে কালো ঘেমো বুক খুলে যুবতীদের সঙ্গে নাচছিলিস
তোর বুক তোর সঙ্গে আমার চাউনির মতো নাচছিল
সঙ্গিনীদের ঝুলে পড়া বুক তাদের বুকের থেকে আলাদা নাচে কাহিল
তোর ভগাঙ্কুর আর যোনির ঠোঁট তিন বছর বয়সেই
বুড়িমা কেটে দিয়েছিল তুই কেঁদে ছিলিস অনেক দিন
এমুরাতারে কাটনির ফলে পেচ্ছাপ করতে কষ্ট হতো দাঁড়িয়ে করতিস
লাল কিটেঙ্গে শায়ার ওপর নকশাকাটা লাল খাঙ্গা ব্লাউজ
তার ওপর লাল চাককাটা শুকা চাদর দুই হাতে রঙিন এনকিসোমা
রাবতা আর ব্রেসলেট কচি ভেড়ার হাড়ের ব্রেসলেট
সিংহিনীর দুপাটি দাঁত জুড়ে কন্ঠহার

আমি নতুন যোদ্ধা জটপড়া চুলে ড্রেডলকস হাতে বর্শা
চুলে নিয়মিত গোরুর চর্বি লাগিয়ে সূর্যকে ধরে রাখি
মাসাই নিয়মে পুরুষরা কখনও হাত দুলিয়ে হাঁটে না
পাঁচ বছর আগে আমার নুনুর চামড়া যখন মাসাই জানগুরু ছাড়িয়েছিল
মুখে কোনো কষ্ট-যন্ত্রণার ভাব ফুটিয়ে তুলিনি
তাহলে আমাকে কাপুরুষ বদনাম দিয়ে একঘরে করে দেয়া ্তো
তোকে পাবার জন্য একা জঙ্গলে গিয়ে সিংহ শিকার করে এনেছিলুম
সিংহের চামড়া পরে হাতে বর্শা নিয়ে নেচেছিলুম আগুনের ফিনকি ঘিরে
মাথায় পরে নিয়েছিলুম সিংহে মাথা দুলছিল কালো কেশর
আমরা সবাই সিংহের মাংস আগুনে পুড়িয়ে খেয়েছিলুম
রোজই ভেড়া ছাগল গোরুর মাংস খেয়ে মুখ বিস্বাদ হয়ে গিয়েছিল

জঙ্গল পেরিয়ে অনেক দূরের ইকোবাদের গ্রাম থেকে দশটা গুরু লুটে এনেছিলুম
তোর বাবা বলেছিলেন কুড়িটা গোরুর মালিক হলে তবে তোকে পাবো
তোকে পাবার পরও মাসাই নিয়মে প্রায়ই তোকে অতিথিদের সঙ্গে শুতে হতো
জানি না আমার কুড়িটা বাচ্চার মধ্যে ক’টা আমার
তুই বলেছিলিস সবক’টা আমার সকলে তোর যোনির হদিশ পেতো না
কালো এনদাগি বলেছেন জবজগতে গোরু বলদ ষাঁড় কেবল মাসাইদের
লাল এনদাগি বলেছেন তোর যোনি শুধু আমার

তোর জন্য গোরুর হাড়ের কানে পরার গয়না বানিয়ে দিয়েছি
ভেড়ার হার দিয়ে পুঁতি তৈরি করে দিয়েছি
খোলা বুকে নাচের সঙ্গে ওগুলোও নাচে
দুশো বছর হয়ে গেছে এখনও পুঁতির ঝমঝমানি শুনতে পাই
আমার পাশেই তোর বুড়ি শব ফেলে গিয়েছিল
শেয়াল শকুন হায়নারা তোকে খায়নি বলে মরে গিয়ে ভাবি
আমার চেয়ে বেশি অতিথিরাই আদর করেছে তোকে
তুই মাসাই সুন্দরী ছিলিস অবন্তিকা, তাই…

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress