Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » মায়াবী || Panchkari Dey » Page 85

মায়াবী || Panchkari Dey

ঠিক সেই সময়ে সেখানে অরিন্দম আসিয়া উপস্থিত। বোধ হয়, তিনি এতক্ষণ অন্তরালে দাঁড়াইয়া ছিলেন। তাঁহাকে দেখিয়া সেই নবীনা দ্রুতপদে সোপানারোহণ করিয়া সলজ্জবাবে চলিয়া গেল, এবং দেবেন্দ্রবিজয় একান্ত অপ্রতিভের ন্যায় এদিক্-ওদিক্ চাহিতে লাগিল। অরিন্দমের মুখের দিকে চাহিতে আর তাঁহার সাহস হয় না।

অরিন্দম তাহা লক্ষ্য করিয়া বলিলেন, “চল, এখন আর মাছ ধরা হইবে না—এখনই পাড়ার মেয়েরা এ-ঘাটে আসিবে—সন্ধ্যার পর যাহা হয় হইবে।”

দেবেন্দ্রবিজয়ের মনে দারুণ উৎকণ্ঠা। তিনি অরিন্দমকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “যে এখন চলিয়া গেল, উহাকে আপনি জানেন্ কি?”

অরিন্দম বলিলেন, “কেন বল দেখি?”

দেবেন্দ্রবিজয় চুপ করিয়া রহিলেন।

অরিন্দম বলিলেন, “ঘাটে পাড়ার কত মেয়ে আসে, আমি তাহাদের কেমন করিয়া চিনিব? তবে আমাদের বাড়ীর স্ত্রীলোকেরা কাহাকে-কাহাকেও চিনিতে পারে।”

দেবেন্দ্রবিজয় বলিলেন, “আমি যাহাকে এখানে দেখিলাম, সে ঠিক রেবতীর মত দেখিতে—সে রেবতী।”

অরিন্দম উচ্চকণ্ঠে হাসিয়া উঠিলেন, বলিলেন, “বটে! তাহাকে তাহার নাম জিজ্ঞাসা করিয়াছিলে?”

দেবেন্দ্রবিজয় বলিলেন, “নাম জিজ্ঞাসা করিবার আবশ্যকতা নাই। আমি ঠিক চিনিয়াছি—সে রেবতী। সেই মুখ, সেই চোখ, সেই ভাব, সেই সব—আমার কখনও ভুল হয় নাই।”

অরিন্দম সহাস্যে বলিলেন, নিজের ভুল নিজে কেহই দেখিতে পায় না। বিশেষতঃ এ সব বিষয়ে ভুল হওয়া বড়ই দোষের কথা। যাই হ’ক্, তোমাকে কোথায় মাছ ধরিতে এখানে পাঠাইলাম, আর তুমি কিনা একেবারে একটা আস্ত মেয়েমানুষ গাঁথিয়া ফেলিয়াছ—বাহাদুরী আছে বটে।”

দেবেন্দ্রবিজয় বলিলেন, “আপনি সকলই জানেন—আপনি আমার নিকটে গোপন করিতেছেন। আমি এখন যাহাকে দেখিলাম, বলুন, সে রেবতী কি না?”

অরিন্দম বলিলেন, “রেবতী! আমি তোমার নিকটে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হইয়াছিলাম, যেমন করিয়া পারি, রেবতীর সন্ধান করিয়া দিব;কিন্তু সেই প্রতিজ্ঞার পূর্ব্বেই আমি রেবতীকে উদ্ধার করিয়াছিলাম, একজন পুলিসের লোককে রেবতীর মাতামহ সাজাইয়া রেবতীকে অর্থপিশাচ যদুনাথের হাত হইতে বাহির করিয়া আনি। তাহার পর রেবতীকে আমি এখানে পাঠাইয়া দিই। সেই অবধি রেবতী এখানে আমাদের বাড়ীতেই আছে। প্রত্যহ রেবতী এই সময়ে বাগানে একা আসিয়া থাকে। তাহার সহিত দেখা হইবে বলিয়াই আমি তোমাকে মাছ ধরিবার ছলে বাগানে পাঠাইয়া দিই। তুমি এখন রেবতীকে স্বচক্ষে দেখিয়াছ—আর ত সন্দেহের কোন কারণ নাই?”

দেবেন্দ্রবিজয় বলিলেন, “যেদিন ফুলসাহেব ধরা পড়ে, সেইদিন আপনি রেবতীকে খুন না করিবার কারণ তাহাকে জিজ্ঞাসা করায় ফুলসাহেব আপনাকে বলিয়াছিল, “আপনি তাহার মুখের অন্ন কাড়িয়া লইয়াছেন।’ তখনই একবার আমার মনে সন্দেহ হইয়াছিল যে, রেবতীকে আপনি কোন নিরাপদ স্থানে লুকাইয়া রাখিয়াছেন।”

অরিন্দম বলিলেন, “যাই হ’ক্ রেবতীর নিকটে এখন তাহার ভগিনীর খুনের কথা প্রকাশ করিবার আবশ্যকতা নাই। যতদিন গোপন থাকে, ভাল। রেবতীর মনের অবস্থা এখন ভাল নহে, বড় ভয়ানক এবং দুশ্চিন্তায় শরীরও একান্ত দুর্ব্বল; এসময়ে কোন একটা শোকের আঘাত লাগিলে হয় ত তাহার ফল পরে শোচনীয় হইতে পারে। বিশেষতঃ রেবতী—রোহিণী-অন্ত-প্রাণ। তাহার কাকার সম্বন্ধেও এখন তাহাকে কোন কথা না বলাই ভাল। আর একটা কথা হইতেছে, দেবেন্দ্রবাবু! রেবতীর বিবাহে আমিই কন্যাকর্তা হইবার আশা রাখি।”

দেবেন্দ্রবিজয় বলিলেন, “সেটা আপনার অনুগ্রহ।”

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57 58 59 60 61 62 63 64 65 66 67 68 69 70 71 72 73 74 75 76 77 78 79 80 81 82 83 84 85 86

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *