মামন : শেষ পর্ব (Mamon)
হোটেল “ওবেরয় ক্লার্ক ” সিমলার অভিজাত হোটেল। বিশাল কাঁচের জানলার ধারে মামন আর মহেশ । মহেশ কফির কাপ নিয়ে আর মামনের হাতে ব্লাডি মেরির গ্লাস । টুকরো কথা চলছে দুজনের। অঙ্কিত বর্ষাকে নিয়ে ঘুরছে ম্যালে। মামনের বিয়ের এগার বছর হল, তাই সিমলাতে সেলিব্রেশন। মহেশ বলল -মামন দিন বেশি নেই , তাই আমিও নেই, তুমিও জান। এখন থেকে গোছানো শুরু কর। অঙ্কিত আমার বাবার অঘোষিত সন্তান, কিন্তু আমার ভাই তো ? তুমি আমার পাটরাণী , জানোই তো কেন বিয়ে করলাম না , অনেক কষ্টে তোমার দরজা আটকেছি মামন, তুমি প্লিজ অঙ্কিতকে সময় দাও। জানোই তো কাল মহেশের চিতা জ্বলবে। প্লিজ মামন আই লাভ ইউ। । মামন আর পারল না, মহেশের বুকের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল। চুমুতে চুমুতে ভরিয়ে দিল মহেশকে। মহেশের ব্লাড ক্যান্সার, মামন জেনেছে অনেক পরে ,প্রতিবছর ব্লাড ট্রান্সফিউন করে। তারও একটা সময়সীমা বরাদ্দ। ধীরে ধীরে ক্ষয় হয়েছে মহেশ, কেউ একটুকরো খবর পায় নি, মামনও ব্যতিক্রম ছিল না। তাই রাকার বিয়ের পরে অঙ্কিতকে এনেছিল মহেশ, ওর বাবার অঘোষিত সন্তান। মহেশ উদ্যোগ নিয়ে ভাইকে দাঁড় করিয়েছিল। বিমলা দেবীও সব জানত ,উনিও অঙ্কিতকে ছোট ছেলে হিসেবে মেনে নিয়েছিলেন। আজ অঙ্কিত মহেশের ব্যবসা সামলাচ্ছে। অঙ্কিত দেখতে অত্যন্ত সুন্দর। মামন তবুও রাজি হয়নি ওকে বিয়ে করতে, মহেশের সব কথা শুনে অবশেষে মামন অঙ্কিতকে বিয়ে করলেও মন পড়েছিল মহেশের কাছে। মহেশ মামনকে ঠেলে বলল, ভুলে যেও না তুমি আমার ভায়ের বৌ, আমার সঙ্গে তোমার এই কাজ সাজে না মামন। মহেশ মামনের জন্য প্রচুর করেছে। অঙ্কিতের সাথে বিয়ে দেবার আগে রাণাকে টাকা দিয়ে কিনে মিউচুয়াল ডিভোর্স এনেছে, রূপালী,পিঙ্কি এদের নামে সম্পত্তি ট্রান্সফার করেছে অর হাভেলি ও জমজমা সব বর্ষার নামে, মামন তার কেয়ারটেকার, যতদিন না বর্ষা সাবালিকা হয়ে ওঠে।
সাদা চাদরে মোড়া মহেশের দেহ, সবাই কাঁদছে, মামন পাথরের মুর্তি। বর্ষার আঙ্কেল নেই , হাপুস নয়নে কেঁদে চলেছে। অঙ্কিত এদিক ওদিক দৌড়ে অবস্থা সামাল দিচ্ছে। মামন শুধু একটা কথাই ভেবে চলেছে যতই বিয়ে হোক অঙ্কিতের সঙ্গে, সে কেন মেনে নিতে পারছে না ?