মর্যাদা
সাতসকালেই খবরের কাগজে চোখ বুলিয়ে মেজাজটা খিঁচড়ে ওঠে নমিতার।আবারো সেই নারী নির্যাতনের রসালো কেচ্ছা! দূর ছাই!
রমলা বৌদি চা নিয়ে আসছিলো,
নমিতার কাগজ ছুড়ে ফেলা দেখে চোখ কুঁচকোয়,কি ব্যাপার ?
নমিতার তেতোসুর ,আর বলোনা , কোটি টাকা খরচ করে মা দুর্গার আরাধনা হচ্ছে,অপরদিকে নিত্য নারী নির্যাতন, বৃদ্ধা মাকে সন্তানের হেলাফেলা ঘটেই চলছে,দোষীরা বুক ফুলিয়ে,অপদার্থ সন্তান দায়িত্ব এড়িয়ে মাকে ঠেলে দেয় বৃদ্ধাশ্রমে । কেউবা ভিক্ষে করে বেড়ায়।
রমলা কাগজটা ইতিমধ্যেই পড়ে নিয়েছে। ক্ষুব্ধ সুরে বলে ওঠে,
সত্যি,মৃন্ময়ী মায়ের পূজার্চনায় লক্ষ টাকা ব্যয়ে সোনার দুর্গা প্রতিমা তৈরীর গর্বে তৃপ্তি উপভোগ করছে,এদিকে চিন্ময়ী মায়েরা ছেঁড়া কাপড়ে লজ্জা নিবারণ করছে।
দুরূহ বেদনায় নিগৃহীতা নারীর সূচীভেদ্য যন্ত্রণায় বিদ্ধ জীবন।
এরাও তো দশভূজা দুর্গা থেকে কম নয়
নমিতা দীর্ঘশ্বাস ফেলে,
তাইতো ভাবি,মায়েরা কোন অংশে কম? সংসারের জন্য নিজের সমস্ত সুখ,আহ্লাদ বিসর্জন দিয়েও কিনা বৃদ্ধাশ্রমে? রাস্তায় ভিক্ষে?
মৃন্ময়ী দুর্গার দশহাতে অস্ত্র।
কিন্তু চিন্ময়ী দুর্গা মায়েরা তো দুহাত দিয়েই সমস্ত গুরুদায়িত্ব সামলাচ্ছে।
রমলার চোখ ছলছলিয়ে ওঠে,ঠিক বলেছো , সত্যি কিযে দিনকাল পড়েছে বাপু, এসব দেখেশুনে হাত-পা সেঁধিয়ে যায়।
নমিতা ম্লান হাসে, মানুষ আজ মানবতার পাঠ ভুলে অমানুষ হয়ে উঠছে।
নমিতা মনে মনেই বলে ,মাগো,সংসারে নারীর বড় কষ্ট মা,তুমিতো ত্রিনয়নী,সব দেখছো,নারী যেন মর্যাদা নিয়ে বাঁচতে পারে সেটা দেখো মা-