Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।

ভাঙা জাহাজে কঙ্কাল

নিঝুম দুপুর । ডক্টর চার্লস বাড়ি নেই । সেই সুযোগে একবার বাইরে ঘুরে এলে হয় । ভাবলো হ্যারি । যেমনি ভাবা তেমন ই কাজ হ্যারির ।ইসাবেলাকে নিয়ে চলে এল ভাঙা পাঁচিলের কাছে ।
ইসাবেলা ভয়ে বলল-এ দিকে তো সমুদ্র । কি করে বাইরে ধরা যাবি ?
হ্যারি বলল- চল, আর একটা দিক আছে । সেই দিক দিয়েই বের হব ।

শ্যাওলা ধরা পাথরে র ওপর দিয়ে বুনো পথে নেমে চলে গেছে সমুদ্র পথে । সেই পথেই নামল ওরা । আগে বুঝি এ পথে লোক চলাচল ছিল । এখন ঝোপ ঝাড়ে ঢাকা পড়েছে সে পথ । সেই ঝোপ ঝাড়ের পথেই ইসাবেলার হাত ধরে চলতে লাগল হ্যারি ।

ইসাবেলা- কোথায় যাচ্ছি হ্যারি ?
হ্যারি- এটা পথ ছিল । বুঝতে পারছিস না?
ইসাবেলা ভয়েই বলল- দু’শো বছর আগের? পুরো পথ টা পাথুরে । কোথাও সাদা আবার কোথাও কালো পাথরের।
হ্যারি- দেখ ইসা, একটা ফেরি এপার ওপার করছে। ইস্, আমরা ওপারে যেতে পারলে ভাল হত।
ইসা- আমরা ওপারে যেতে পারব না । আমরা তো এই পারে ! ইসা, দেখ একটা ভাঙা জাহাজ ।
হ্যারি- চল ইসা,জাহাজ টা ঘুরে দেখি । দুজনেই এগোল সেই ভাঙা জাহাজের দিকে ।
হ্যারি বলল- ইসা, কী লেখা রয়েছে দ্যাখ্ । ” ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি” । চল ভেতরে ঢুকি ।
ইসাবেলা- হ্যারি দ্যাখ, নিচে লেখা “ব্ল্যাক মোর’স রেজিমেন্ট ” লেখা আছে নিচে । তুই আরশোলা ছেড়েছিস ঘোস্ট এর গায়ে । ঘোস্ট তোকে ধরবে ।
হ্যারি বলল- ওকে একটা ডান্ডা মেরে দেব । জাহাজের চারদিকে জং ধরা লোহা লক্কর ছড়িয়ে আছে । কাঠের মেঝে বেশ শক্ত পোক্ত ।একটা দরজায় হাত দিতেই দরজা খুলে গেল । ঘরের ভেতর নানা রকম অস্ত্র সাজানো । এগিয়ে গেল ওরা আরো ভেতরে । একটা দরজায় ধাক্কা দিতে ই খুলে গেল দরজা। কেউ যেন কথা বলছে গুন গুন করে । একজনের ফিস ফিস করে কথা শোনা গেল।

হ্যারি বলল- এই ঘরে লুকিয়ে থাকি,চল।
ইসাবেলা- আমার ভয় করছে ।

হ্যারি ঈষাড়ায় ওঁকে ঠোঁটে আংগুল তুলে ইসা কে চুপ করতে বলে। সিঁড়ির থেকেই ওরা উঠল একটা ঘরের ভেতর যেটা ছিম ছাম । ঘরে ঢুকে একটু একটু করে এগিয়ে গেল ওরা । সামনে একটা কাঠের সিড়ি। হ্যারি ইসাবেলার হাত ধরে তর তর করে এগিয়ে গেল ওপরে । হ্যারি ,ইসাকে কথা বলতে মানা করে । এখন ওরা যে ঘরে ঢুকেছে সেখানে লোক জনের যাতায়াত আছে বলে মনে হয় । অনেক বন্দুক জমা করে রাখা হয়েছে । মাঝের পর্দার ওপাশে কে যেন বসে আছে । হ্যারির ঘাড় শির শির করে ওঠে । তখনই আলোর ঝলকানি তে চেয়ারে দেখলো একটা কঙ্কাল। তার শরীর বলে কিছুই নেই ।শুধুই কঙ্কাল ।তাতে মোটা চেন এ তালা মারা । ভয়ে হ্যারি ইসবেলা কে নিয়ে দৌড়তে লাগল । গম গম শব্দ কানে এলো—-“-টেল ইয়র ফাদার দ্যাট দিস ইজ দা এন্ড অফ ব্ল্যাক মোর।”

ডক্টর চার্লস ও স্ত্রী ইসাবেলার চিন্তার শেষ নেই। দুপুর থেকে বেপাত্তা দুই ছেলে মেয়ে। নেভি তৎপর হয়ে তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছে। সন্ধ্যা নেমেছে এখন কার ডলফিন নোজ এ।রাত বেড়েছে সারা রাত ঘুম নেই ছেলে ও মেয়ের চিন্তায় । নেভি আর পোর্ট এক সাথে খোঁজ করছে । অন্ধকারে দূরে দেখা গেল একটা জাহাজ। এগিয়ে আসছে । এখানে তো জাহাজ ঢুকতে পারে না । দুর্গের ভাঙা অংশ দিয়ে উঠছে হ্যারি ও ইসা । দূরে থেকে নাবিক উইশ করছে তাদের । এমিলি বলে–এখনই কিছু বলবে না । পর দিন ঝলমল করছে চার দিকে সূর্যের আলোয় ।

ইসা বলে- ড্যাড্,আমরা কাল ব্ল্যাক মোর এর জাহাজে তাকে দেখেছি ।
– হোয়াট?
হ্যারি- হ্যাঁ ,একটা চেয়ার এ বসে ।কংকাল । মোটা চেন দিয়ে তালা মারা।
ইসা বলল- হ্যাঁ । আমরা গ্রেট গ্র্রাউন্ড ফাদার কে দেখেছি। ডক্টর চার্লস মেয়ের রেসপেক্ট দেখে খুশী হয়েছেন ।
– তার মানে ব্ল্যাক মোর এর ঘোস্ট তোমাদের পৌঁছে দিলেন । তাই তো,ভাবি ঐ জায়গায় কি করে জাহাজ এলো ?

– ইসা বলে, ওখানে অনেক বন্দুক জমা করা রয়েছে । ওখানে বাজে লোকের আনা গোনা আছে। ওরা খারাপ কাজ করে । পর দিন নেভি ও পোর্ট মিলে ঘিরে ফেলে সেই জাহাজ। বোঝা গেল কার জন্য ব্ল্যাক মোর কে বন্দি করে রাখা হয়েছিল। এই ভাবে ই তার মৃত্যু। কারণ,টেবিল এ একটা কাগজ এ লেখা ছিল– “ইট’স দ্যা স্পাই অফ ফ্রান্স হু ট্রিকড মি”–“ফরাসী স্পাই ছল করে বন্দী করেছে।” চিঠি টা অসমাপ্ত রেখেছেন। জাতীয় মিউজিয়ামে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে সেই জাহাজ। সমাজ বিরোধী বিশাল দলকে ধরা হলো ।

লন্ডনের বাস ভবনে দুশো, বছর পরে ব্ল্যাক মোর এর দেহ সমাধিস্থ করা হয় । কফিন এ মাটি দিলেন ডক্টর চার্লস, এমিলি হ্যারি ও ইসাবেলা । ইসা দেখতে পাচ্ছে,সাদা বিছানায় শুয়ে হাসছে “গ্রেট গ্র্যান্ড ফা”। বলছে—-সুইট নাতনি,এবার ঘুমাতে যাই? মাথা নেড়ে সায় দেয়—“–ইয়েস গ্রেট গ্র্যান্ড ফা”. চোখ এর জল টপ করে পড়ল কফিন “এর ওপরে।

Pages: 1 2 3 4 5
Pages ( 5 of 5 ): « পূর্ববর্তী1 ... 34 5

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress