Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » ব্রহ্ম পুরাণ || Prithviraj Sen » Page 9

ব্রহ্ম পুরাণ || Prithviraj Sen

মহা বলবান হিরণ্যদৈত্য দেবতার বরে অজেয়। হিরণ্যের পুত্র মহাশনি পিতার মতই বলশালী আর যুদ্ধে ভয়ংকর।

দেবতা আর অসুরদের মধে চিরকালের দ্বন্দ্ব। মাঝে মাঝে যুদ্ধ লেগেই থাকে। একবার দেবরাজ ইন্দ্রের সঙ্গে মহাশনির ভীষণ যুদ্ধ লাগল। কখনও দেবতারা পরাজিত হলে অসুরদের জয়োল্লাস ওঠে। আবার কখনও অসুররা পরাজিত হলে দেবতাদের আনন্দ উল্লাস–এই ভাবেই চলছে সেই যুদ্ধ বহুদিন ব্যাপী।

অকস্মাৎ স্বর্গে ঘটে গেল এক বিপর্যয়। একবার সুযোগ পেয়ে মহাশনি ইন্দ্রকে ঐরাবত সহ সুকৌশলে ধরে ফেলল। দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলল ঐরাবতের ইন্দ্রকে। পাতালে নিয়ে এল বাবা হিরণ্যের কাছে। দেবসেনারা যে যেদিকে পারল ছুটে পালিয়ে গেল।

পুত্রের প্রভূত প্রশংসা করল হিরণ্য। তারপর কড়া পাহারায় ইন্দ্রকে আটকে রাখল একটি প্রাসাদের কক্ষে। সেখান থেকে ইন্দ্রের পালাবার কোন সুযোগ নেই।

স্বর্গে রাজা নেই, কি ভাবে চলবে অমরাবতী? দেবতারা মহা ভাবনায় পড়লেন। যেভাবে হোক ইন্দ্রকে উদ্ধার করতে হবে, কিন্তু কেমন করে? অসুরদের সঙ্গে লড়াই করে জেতা সম্ভব নয়। কারণ দেবরাজ ইন্দ্রই স্বয়ং অনুপস্থিত, সেখানে কে যুদ্ধ পরিচালনা করবে?

তারপর দেবতারা যুক্তি স্থির করে বিষ্ণুর কাছে গেলেন। সব শুনে বিষ্ণু বললেন–তোমাদের অবস্থা আমি সব বুঝতে পারছি। কিন্তু মহাশনিকে শাস্তি দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তথাপি চেষ্টা করে দেখি, কোনও কৌশলে ইন্দ্রকে রক্ষা করা যায় কি না।

তারপর বরুণদেবের কাছে বিষ্ণু গিয়ে বললেন–বরুণদেব! ইন্দ্রের অবর্তমানে তুমিই এখন ভরসা। তুমি যদি একটু চেষ্টা কর, তাহলে ইন্দ্রকে শনির কবল থেকে মুক্ত করা যেতে পারে। ইন্দ্রকে বন্দি করে মহাশনি যখন বরুণের পিছনে ধাওয়া করছিল বরুণ বুঝল এ যাত্রায় তার আর রক্ষা নেই, তাই সেই মুহূর্তে একটা যুক্তি স্থির করে নিজের মেয়ের সঙ্গে মহাশনির বিয়ে দিলেন। তখন মহাশনি বরুণের কোনও ক্ষতি না করে বরুণীর সঙ্গে সমুদ্রকে যৌতুক হিসেবে নিয়ে গেল।

এই কারণেই বিষ্ণু নিজেই এসেছেন বরুণের কাছে।

বিষ্ণুর অনুরোধ মানে আদেশের চেয়েও বেশি। আর কাল বিলম্ব না করে বরুণ চললেন পাতালে জামাই মহাশনির কাছে। বরুণকে দেখে তার খুব খাতির করল মহাশনি। তারপর বলল–বলুন বাবা, কি কারণে আমার পুরীতে এসেছেন?

বরুণদেব বললেন–তোমার ক্ষমতা আজ সর্বজন বিদিত। তুমি দেবরাজ ইন্দ্রকে ছেড়ে দাও। এতে তোমার সম্মানের, কোনও হানি হবে না। বরং পরাজিত শত্রুকে ক্ষমা করে ছেড়ে দিলে সম্মান বৃদ্ধি পায়।

শ্বশুরের কথায় মহাশনি বন্ধ ঘর থেকে ইন্দ্রকে বাইরে এনে ছেড়ে দেবার আগে ইন্দ্রকে লক্ষ্য করে বলল–তোমার নাম ইন্দ্র, দেবতাদের রাজা, কিন্তু সে যোগ্যতা তোমার কোথায়? কেমন করে কে তোমাকে রাজা করেছে বুঝতে পারছি না। যাই হোক, যুদ্ধে পরাজিত হয়ে বন্দি হয়ে ছাড়া পাবার জন্য যে অন্যের কাছে সুপারিশ করে, তাকে আমি কাপুরুষ ছাড়া আর কি বলব? নির্লজ্জ তুমি, ছাড়া পেয়েও স্বর্গের সিংহাসনে বসবে। যদি লজ্জা থাকে তাহলে স্বর্গের সিংহাসনে আর বস না। সব সময় সুখ ভোগ করবে এমন চিন্তা তোমার। শুধু একটা কথা মনে রেখ, যার জন্য তুমি আমার কাছ থেকে ছাড়া পেলে তিনি আমার শ্বশুর মশায়। যদি কখনও শুনি যে, তুমি তার উপর ঔদ্ধত্য প্রকাশ করেছ, তাহলে কিন্তু তোমাকে আমি আবার বেঁধে এনে এই পাতালে আটকে রাখব, যাও এখন আসতে পার।

মহাশনির কথাগুলি যেন এক একটি চাবুকের ঘা! শুনতে শুনতে অপমানে লজ্জায় ইন্দ্র যেন একেবারে মাটির সঙ্গে মিশে যেতে লাগলেন, ফিরে গেলেন স্বর্গে। সব কথা বললেন–শচীকে, কোনও কথা লুকোলেন না।

হাজার হোক স্বামী তো, তাই সমবেদনা জানিয়ে শচী বললেন–তুমি যখন মহাশনির কাছে যুদ্ধ করবার জন্য যাও, তখন আমার সঙ্গে একবারও পরামর্শ করলে না। যদি করতে, তাহলে এভাবে তোমাকে বিপদে পড়তে হতো না। তুমি তো আগে ভাগে কিছু জানার চেষ্টা করনা। তাই এখন লজ্জায় অপমানে দুঃখ ভোগ করছ।

ইন্দ্র বললেন–সবই বুঝলাম, কিন্তু এখন কেমন করে আমার অন্তরের জ্বালা মেটাব তাই ভাবছি। কত বড় বড় দৈত্য দানবকে নাশ করলাম! আর এখন কিনা সামান্য মহাশনির কাছে আমার এমন লাঞ্ছনা। যতক্ষণ না এই মহাশনিকে শেষ করতে পারছি, ততক্ষণ আমার মনে কিছুতেই শান্তি হবে না।

শচী বললেন–স্বামী তুমি একটু শান্ত হও। আমার কথা একটু মন দিয়ে শোন, দানব হিরণ্য সম্পর্কে আমার কাকা। কাজেই মহাশনি আমার ভাই। আমি দানবকুলের অনেক গোপন রহস্য জানি। মহাশনি ব্রহ্মার বরে দৈত্যগণের অজেয়, কিন্তু অবধ্য নয়। কাজেই তাকে বধ করতে হলে কোনও কৌশল অবলম্বন করতে হবে। আমি বলি কি, তুমি তপস্যা কর দণ্ডকারণ্যে গোদাবরীর তীরে বসে, মহাদেবকে তপস্যায় তুষ্ট কর। দেখবে, তিনিই মহাশনির বধের কোনও উপায় বলে দেবেন।

শচীর কথা ইন্দ্রের মনে লাগল। সঙ্গে সঙ্গেই চললেন দণ্ডকারণ্যে। মহাদেবের উদ্দেশ্যে তপস্যা শুরু করে দিলেন। কঠোর তপস্যা, প্রসন্ন হলেন শিব, দিব্যরূপ ধারণ করে ইন্দ্রের সামনে উপস্থিত হয়ে বললেন–কি চাই তোমার ইন্দ্র।

ইন্দ্র বললেন–আমি মহাশনির দ্বারা লাঞ্ছিত। সেই অপমানের কথা আমি কখনই ভুলতে পারছি না। আমি ওর নিধনের কোনও উপায় জানতে চাই।

মহাদেব বললেন–ব্রহ্মার বরে সে অজেয়, ওকে বিনাশ করা আমার একার শক্তিতে সম্ভব হবে না। বিষ্ণুর শক্তিরও প্রয়োজন হবে। তুমি শচীকে সঙ্গে নিয়ে বিষ্ণুর আরাধনা কর। তিনি তুষ্ট হলে তোমার অভীষ্ট সিদ্ধ হবে।

শঙ্করের কথা মত ইন্দ্র শচীকে নিয়ে বিষ্ণুর আরাধনায় রত হলেন। ধ্যান করলেন। প্রসন্ন হলেন বিষ্ণু, দেখা দিলেন চতুর্ভূজ মূর্তিতে। বললেন–ইন্দ্র তোমাকে কৌশল করে বরুণের দ্বারা মহাশনির কবল থেকে উদ্ধার করলাম। এখন আবার কি প্রয়োজন হল আমাকে আহ্বান করবার?

ইন্দ্র বললেন–হে প্রভু, আপনার অগোচর কিছুই নয়। আমি মহাশনির বিনাশ দেখতে চাই। যেভাবে সে আমাকে অপমানিত করেছে, তাতে আমি মর্মাহত। আপনি আমাকে শক্তি দিন, যাতে আমি মহাশনিকে বধ করে আমার অন্তরের জ্বালা জুড়াতে পারি।

বিষ্ণু বললেন–তাই হবে। আমার শক্তি, মহেশের শক্তি একত্র মিলিত হয়ে মহাশনিকে নাশ করবে। তোমাকে নিজের এই কার্যে কিছুই করতে হবে না। শুধু দেখ, কেমন করে মহাশনির নাশ হয়।

বিষ্ণু চলে গেলেন। তখন ইন্দ্র দেখল, গঙ্গার জলের ভেতর থেকে এক অদ্ভুত ভীষণাকার মূর্তি উত্থিত হল, এক হাতে চক্র আর এক হাতে ত্রিশূল। বিষ্ণু আর শিবের শক্তিতেই তার সৃষ্টি।

তারপর ভয়ংকর রবে গর্জন করতে করতে ছুটে চলল পাতালে, অল্পক্ষণের মধ্যেই মহাশনিকে বিনাশ করে দিল। ইন্দ্রের অন্তরের জ্বালা মিটল, আর দেবতারাও শান্তি পেলেন।

রাজা শর্যাতি সুপুরুষ ও বীর ছিলেন। তার রানির নাম সৃষ্টিকা। অসাধারণ রূপবতী এবং গুণবতী তিনি। বিশ্বামিত্রের পুত্র মধুছন্দা। যুবাকালেই হয়ে উঠেছেন ব্রহ্মর্ষি। তিনি একাধারে রাজ পুরোহিত আবার রাজবন্ধুও।

একদিন রাজা স্থির করলেন দিগ্বিজয় করতে যাবেন। সেই সঙ্গে দেশ ভ্রমণও করবেন। সঙ্গে নিলেন মধুছন্দাকে। একটার পর একটা দেশ তিনি জয় করতে থাকেন, অল্পদিনের মধ্যে পৃথিবীর প্রায় অর্ধেক রাজ্য জয় করলেন রাজা শর্যাতি কিন্তু তার বন্ধু মধুছন্দার মনে কোনো আনন্দ নেই। তাই দেখে একদিন শর্যাতি তাঁকে বললেন–এত দেশ জয় করে আমার মনে খুব আনন্দ হচ্ছে, কিন্তু আপনাকে দেখছি যেন ক্রমশ বিমর্ষ হয়ে যাচ্ছেন, কি হয়েছে আপনার মনে কোনও আনন্দ নেই কেন?

মধুছন্দা বললেন–কিছু মনে করবেন না, বহুদিন হল বাড়ি থেকে বেরিয়েছি, গৃহে ভার্য্যা একা রয়েছে। তার জন্যই মনটা কেমন করছে।

রাজা বললেন–সে কি কথা? আপনি না ব্রহ্মর্ষি? স্ত্রীর জন্য মন খারাপ করবে কেন? আপনার এই ভাবনা শোভা পায় না।

মধুছন্দা বললেন–আমার স্ত্রী যদি পতিব্রতা, সতী সাধ্বী না হত, তাহলে আমি ব্রহ্মর্ষি হতে পারতাম না, পতিসেবা না করে তিনি জলস্পর্শ করেন না, না জানি এখন সে কেমন করে কাল কাটাচ্ছে?

মৃদু হেসে বললেন–তাহলে শর্যাতি আর দেশ ভ্রমণে কাজ নেই, থাক, বরং ফিরে যাই। আপনার মন যখন চঞ্চল, তাই আর এগিয়ে কাজ নেই।

তারপর সবাই ফিরতে লাগল বাড়ির পথে। হঠাৎ রাজার মাথায় একটা বুদ্ধি খেলে গেল। এক দূতকে ডেকে বললেন–তুমি তাড়াতাড়ি রাজ্যে ফিরে গিয়ে সব জায়গায় রটিয়ে দাও যে রাজামশায় দিগ্বিজয়ে বের হওয়ার পর এক ভয়ংকর রাক্ষস অতর্কিতে এসে রাজা ও পুরোহিতকে হত্যা করে পালিয়েছে। কোথায় যে লুকলো, বহু খোঁজ করেও তার সন্ধান পাওয়া গেল না। এই কথা রটনার পর কি ফলাফল হয় আমাকে এসে জানাবে।

রাজার নির্দেশমত সেই দূত তাড়াতাড়ি এসে সেই খবর প্রচার করে দিল। সেই খবর শোনা মাত্রই মধুছন্দার স্ত্রী প্রাণ ত্যাগ করলেন। কিন্তু রাজরানির মনে সন্দেহ হল–এত সৈন্য-সামন্ত থাকতে কেবলমাত্র রাজা আর রাজপুরোহিতকেই কেন বধ করল একটা রাক্ষস, আর কারো কোনও ক্ষতি করল না? রাজরানি বিশেষভাবে খবর নিতে চেষ্টা করলেন, খবরটা কতটা সত্য।

এদিকে রাজা তখন রাজ্যের প্রান্তে এসে উপস্থিত, সেখানে সেই দূত গিয়ে খবর দিল–হে রাজন, আপনার দেওয়া মিথ্যে সংবাদে পুরোহিত পত্নী দেহ ত্যাগ করেছেন। আর রানিমা নোকজন পাঠিয়ে খবরাখবর নিচ্ছেন।

এত কাণ্ড যে ঘটে গেল মধুছন্দা কিছুই জানেন না। দূতের মুখে এই খবর শুনে রাজার মাথায় যেন বজ্রাঘাত হল। তিনি ভাবতেই পারেননি যে, কার স্ত্রী কাকে কত ভালোবাসে সেটা পরীক্ষা করতে গিয়েই এমন বিপদ হবে। দেশের রাজা হয়ে তিনি এ কি করলেন! যাকে তিনি প্রাণের চেয়েও বেশি ভালোবাসেন, যিনি সবসময় তাঁর মঙ্গল চিন্তা করেন, তারই স্ত্রীকে কিনা তিনি বিনাশ করলেন? ভাবতে পারছেন না, তিনি এখন কি করবেন? যখন মধুছন্দা জানতে পারবে যে রাজার মিথ্যা খবরের জন্যই তার পত্নী প্রাণত্যাগ করেছে কি উত্তর দেবেন তখন? রাজা অন্তরে বড়ই মর্মাহত হলেন, কোন্ মুখে তিনি রাজ্যে ফিরবেন?

তখন তিনি সকল সৈন্য সামন্তকে বললেন–আমার একটি বিশেষ কাজ আছে, সেজন্য আমি এখন নগরে ফিরছি না। তোমরা সবাই ফিরে যাও। রাজ্যে যদি কখন কোনও বিপর্যয় ঘটে, তবে আমি না ফেরা পর্যন্ত তার মোকাবিলা করবে।

তারপর রাজা চলে গেলেন গোদাবরী তীরে। বহু স্নান দান করলেন সেখানে।

এদিকে মধুছন্দা বাড়ি ফিরে দেখে যে তার স্ত্রী তার মিথ্যা মৃত্যু সংবাদ পেয়ে স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণ করেছে। পত্নীশোকে কাতর হলেন তিনি। কিন্তু রাজার নির্দেশমত তিনি পত্নীর সকার কার্য করতে পারলেন না।

ওদিকে মহারাজ গোদাবরী তীরে বহু দান-ধ্যান করার পর শুকনো কাঠ দিয়ে একটি চিতা সাজিয়ে আগুন জ্বেলে দিলেন। তারপর সেই চিতাকে সাতবার প্রদক্ষিণ করে গঙ্গাদেবীর উদ্দেশ্যে বললেন–হে গঙ্গা, আমি যদি নিষ্ঠার সঙ্গে স্নান দান করে থাকি, যদি ধর্মমতে রাজ্যপালন করে থাকি, তাহলে আমার জীবনের এখনও যে আয়ু বাকি আছে, সেই আয়ু নিয়ে পুরোহিতের পত্নী জীবিত থোক।

এই বলেই শর্যাতি সেই চিতার আগুনে ঝাঁপ দিলেন। আর এদিকে মধুছন্দা দেখলেন। তাঁর পত্নী ধীরে ধীরে চোখ মেলে তাকাচ্ছেন। তারপর উঠে বসলেন। সামনে স্বামীকে দেখে অবাক হয়ে গেলেন।

তারপর মধুছন্দা খবর নিয়ে জানলেন যে, রাজা সাতদিনের পরও প্রাসাদে ফেরেননি। রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য ধ্যানে বসলেন তিনি, সব জানতে পারলেন। অবাক হলেন রাজার চরিত্র দেখে। দেশের রাজা হয়ে সে পুরোহিতের স্ত্রীর জন্য প্রাণ ত্যাগ করতে পারে, সেই রাজাকে যেমন করেই হোক ফিরিয়ে আনতে হবে। চললেন সেই গোদাবরী তীরে। যেখানে রাজা প্রাণ বিসর্জন দিলেন। একমনে শুরু করলেন সূর্যের স্তব।

মধুছন্দার স্তবে প্রসন্ন হয়ে সূর্যদেব উপস্থিত হলেন। তার সামনে বর প্রার্থনা করতে বললেন।

মধুছন্দা বললেন–আমার পত্নীর জন্য দেশের রাজা প্রাণ দিয়েছে। আমি সেই রাজা শর্যাতির প্রাণ ভিক্ষা চাইছি। সূর্যদেব রাজি হয়ে বললেন–আরও দুটি বর চাও।

মধুছন্দা বললেন–রাজার যেন কখনো কোনো অমঙ্গল না হয়। আর শেষ বরে আমি যেন এক সৎ পুত্র লাভ করি।

তাই হবেও-বলে সূর্যদেব অন্তর্হিত হলেন। সঙ্গে সঙ্গে সেই চিতা থেকে মহারাজ হাসতে হাসতে বেরিয়ে এলেন। মধুছন্দাকে নিয়ে ফিরে এলেন নিজের প্রাসাদে।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *