বৈঠকী আড্ডা রোজ সন্ধ্যে সাতটায়,
বসতো পাড়ার মোড়ে চায়ের দোকানটায়।
গুণীজনের সমাবেশ কবি ও সাহিত্যিক,
নবীন প্রবীণে মেল পুরোনো ও আধুনিক।
বাচিক শিল্পী ছিল পাড়ারই নবীন দা,
কবিতা আওড়ে যেত থমকাতো জনতা।
সাহিত্য চর্চায় ছিল মইদুল ও গুপী দা,
বগলেতে খাতা নিয়ে আসতো যোগেন দা।
অফিসের শেষে সব জড়ো হতো দোকানে,
চর্চা চলত খাসা প্রবীণে ও নবীনে।
জমাটিয়া সে আড্ডায় কত কিছুর আলোচনা,
রবি ঠাকুর, শরৎচন্দ্র, বঙ্কিম সাহিত্যের সমালোচনা।
গান, রসিকতা সবেতে পটু গঙ্গারাম,
গানের কলির সুরে করত মজা অবিরাম।
তোতলা যোগেন দা তাঁর লেখা শোনাত,
মন দিয়ে সকলেই শুনত আর ক্রুটি সংশোধন করত।
রাজনীতির আলোচনা হতো না যে তা নয়,
তর্জনী উঁচিয়ে আড্ডা তখন দ্বিধাবিভক্ত হয়।
ঘন ঘন চা অর্ডার সিগারেটের ধূম্রজাল,
বৈঠকী আড্ডায় তর্ক তখন বেসামাল।
এত সবের মাঝেও ছিল গভীর অন্তরঙ্গতা,
আজ সে সবের দেখা নেই ঘিরেছে নিঃসঙ্গতা।
মোবাইল টেলিভিশন কম্পিউটার কেড়েছে সকল মনন,
বদ্ধ সব এদের জালে হারিয়েছে এই আড্ডা জীবন।