তিরিশ বছর দেখা নেই- এতো দিন? অথচ একদিন দেখা
হতো প্রায় প্রতিদিন সকালে বিকেলে সেই বন্ধু ও বান্ধবীরা
সম্ভাব্য সূর্যাস্তের আগে ডেকেছে পার্টি; সঙ্গীহীন, একা,
জিন্সপরা যুবকের মতো আমি যাই; গিয়েই রক্ত, চোখ, শিরা
কেঁপে ওঠে; মনে হয় আমি এদের কাউকে চিনি না।
সিএসপি সুলেমান, দুইবার বউ ভাগিয়েছে অধস্তন দুই
উপসচিবের, সাবদার ভাগিয়েছিলো নিজ মামীকেই,
তারা দাড়ি রেখে বদলে গেছে আমি এককালে ‘তুই’
ব’লে এদের ডেকেছি? কোথায় এখন তারা? কর্মে-কামে সেই
সিদ্ধপুরুষেরা? তারা পঞ্চমবার পুণ্য হজ থেকে
ফিরেছে কদিন আগে; আমাদের স্বপ্নদেবী নিতম্বিনী রীনা
এখন মাংসের স্তূপ, অদ্ভুত হিজাব ও বোরখায় ঢেকে
গুলশানে থেকে খোয়াব দেখছে জান্নাতের; যে-দিকে তাকাই
রোগা, মাংস, জরা, ভগ্নগাল, দাড়ি; ক্যানাডায় পুত্রের সাফল্য ও কন্যার
বিবাহকাহিনী, বিসমিল্লা, ধর্মের গুণগান, জান্নাতের লোভ; ভয় পাই
আমি, যেনো মুখোমুখি হই এক সীমাহীন ক্লেদের বন্যার।
ফরিদার ঠোঁট ঝুলে গেছে, যার এভিন্যুর মতো প্রশস্ত লাল ঠোঁট দেখে
কেঁপেছি আমরা; এখন অদৃশ্য রেহানার পীনোন্নত পার্বত্য স্তন;
মোঃ জমিরালি তছবি হাতে কাঁপছে বারবার, পলাশির বস্তি ছেঁকে
এককালে বেশ্যাদের সঙ্গে যে প্রতিরাতে করতো রমণ।
আমিও কি এদের একজন? এতো ভগ্ন, জরাগ্রস্ত, বৃদ্ধ ও বাতুল?
এতো রুগ্ন? এমন অশ্লীল? এতো কুৎসিত? লাশের থেকেও সীমাহীন মৃত?
মনে পড়ে বেশ শাদা আমারও দুর্বিনীত অরাষ্ট্রিক ঢেউখেলা চুল,
তবু কেনো একটি তরুণীর ঠোঁট, গ্রীবা আমাকে বারবার করেছে বিস্মৃত?