বি চিত্র
ছবি প্রদর্শনী চলছে। বিখ্যাত চিত্রকর মোহনের নতুন চিত্রগুলি নিয়ে এই প্রদর্শনী। দেশের বিভিন্ন আর্ট গ্যালারিতে বিভিন্ন চিত্র নিয়ে প্রদর্শনী হবার পর কোলকাতায় এই প্রথমবার।
মোহন এখানে একটি হোটেলে উঠেছে। সকালবেলায় চলে আসে এই প্রদর্শনীতে। ফিরতে ফিরতে সেই রাত।
পনেরো দিন ধরে এই প্রদর্শনী চলবে। এর মধ্যে তিন চারদিন হয়ে যাবার পর একজন দর্শক এলো অনুষ্ঠানে। প্রদর্শনী ঘুরে ঘুরে দেখছেন ভদ্রলোক।
হঠাৎ একটা ছবির সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে গেলেন। ছবিটি ছিল একটি নারীর নগ্ন দেহ বল্লরী। শরীরের প্রতিটি খাঁজ শিল্পী খুব সযত্নে এঁকেছেন। তবে মুখটা খুবই বিষন্ন। চোখ দিয়ে অবিরাম জলের ধারা বয়ে চলেছে।
এই ছবিটির সামনে এসে ভদ্রলোক আর সামনের দিকে এগোতে পারছেন না। কেউ যেন ওনার পা মেঝের সাথে শেকল দিয়ে আটকে রেখেছে। চাইলেও যেন নড়তে পারছেন না।
ভদ্রলোক অনেকক্ষণ ধরে খুটিয়ে খুটিয়ে দেখবার পর চিৎকার করে উঠলেন এই ছবিটা এখানে কেন? কে নিয়ে এসেছেন? আজ রাতেই কারুর জীবনহানী হবে। দেখছেন না এর চোখ দিয়ে অবিরাম রক্ত ঝরছে। আর ঠোঁটগুলো রক্তে ভেসে যাচ্ছে। আজ কেউ এর হাতে মৃত্যুবরণ করবে।
সবাই বিকৃত মস্তিষ্কের লোক বলে ওনার কথাটা উড়িয়ে দিল। সবাই ওনাকে প্রায় ঘাড় ধাক্কা দিয়ে একরকম হলঘর থেকে বের করে দিলো।
উনি কিন্তু শিল্পীকে সাবধান করতে লাগলেন। বললেন কেন এঁকেছেন এই ছবি। এ তো প্রতিহিংসার প্রতিমূর্তি।আমাকে বের করে দিলেই সমস্যার সমাধান হবে না। পারলে এক্ষুনি এই ছবিটা নষ্ট করে ফেলুন।
হলঘরে উপস্থিত অন্যান্য দর্শকরাও ছবিটিকে নিয়ে নিজেদের মধ্যে কাঁটাচেরা করতে লাগলেন। কিন্তু কেউ ঐ ভদ্রলোকের কথার মানে বুঝতে পারছেন না।
ভদ্রলোককে হলের বাইরে বের করে দেওয়া হলো। রাতে যথারীতি গ্যালারি বন্ধ করা হলো।মোহন ক্যাবে করে নিজের হোটেলে চলে এলেন।
পরদিন সকাল দশটা বেজে গেলেও মোহনের ঘরের দরজা আর খুলছে না। সেই সকাল ছটা থেকে রুমবয় তিন চারবার বেড টি নিয়ে এসে ডেকেও কোন ফল পেলো না যখন তখন হোটেলের ম্যানেজার পুলিশে জানালেন বিষয়টা।
পুলিশ এলো। পুলিশকে সামনে রেখে দরজা খোলা হলো। কিন্তু একি বিছানার ওপর মোহনের নিথর দেহ পড়ে রয়েছে। চোখ দিয়ে রক্তধারা। দেহ নগ্ন। ঠিক যেমনটি ছবিটিতে ছিল।
অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তারা খবরটা শুনেই হোটেলে ছুটে চলে এলো। এসে এই অবস্থা দেখে নিজেদের মধ্যে চাওয়া চায়ি করতে লাগলো এ কিভাবে সম্ভব………..!!!!!