Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » বিষ্ণুপুরাণ || Prithviraj Sen » Page 9

বিষ্ণুপুরাণ || Prithviraj Sen

সূর্যবংশের এক বিখ্যাত রাজা নিমি। একবার তিনি সঙ্কল্প করলেন–এক হাজার বছর ধরে যজ্ঞ করবেন। যজ্ঞের আগুন জ্বলবে হাজার বছর ধরে।

কুলগুরু বশিষ্টদেবের কাছে গিয়ে জানালেন তাঁর মনোবাঞ্ছার কথা।

বশিষ্টদেব বললেন–যজ্ঞ করবে সে তো খুব ভালো কথা। কিন্তু আমি তাতে যোগ দিতে পারব না। কারণ ইন্দ্র অন্য একটি যজ্ঞে আমাকে নিযুক্ত করেছেন। তাই এখন আমার কিছু করার নেই। তবে তুমি যদি ইন্দ্রের যজ্ঞ শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা কর, তাহলে আমি যোগ দিতে পারি তোমার যজ্ঞে।

বশিষ্টদেবের কথা শুনে নিমি রাজার খুব রাগ হল। তিনি ভাবলেন আমি রাজা, আমার আশ্রিত গুরুদেব। তিনি কিনা আমার যজ্ঞে না গিয়ে যাবেন ইন্দ্রের যজ্ঞে? ঠিক আছে, আমি বিলম্ব করব না। যথাসময়েই যজ্ঞ শুরু করব অন্য কাউকে প্রধান হোতা করে।

এই চিন্তা করে গেলেন গৌতম ঋষির আশ্রমে। বললেন, যজ্ঞ করার কথা। রাজি হলেন তিনি। আরও কিছু মুনিকে নিয়ে যজ্ঞ শুরু হল। বশিষ্টদেব এ-সবের কিছুই জানতে পারলেন না।

ইন্দ্রের যজ্ঞ শেষ করে ফিরে এলেন তিনি। দেখলেন নিমির যজ্ঞের প্রধান হোত গৌতম মুনি। মনে মনে ক্রুদ্ধ হলেন তিনি। ভাবলেন কুলগুরুকে অবজ্ঞা? নিজেকে ঠিক রাখতে না পেরে চলে গেলেন নিমির প্রাসাদে। দেখলেন রাজা পালঙ্কে ঘুমাচ্ছেন। দেখামাত্রই রাগটা আরও বেড়ে গেল। অভিশাপ দিলেন- কুলগুরুকে অবজ্ঞা করে গৌতমকে দিয়ে যজ্ঞ করালে? আমার অভিশাপে তুমি বিদেহ হও। তোমার দেহ প্রাণহীন হবে।

বশিষ্টের শাপে রাজা নিমির মৃত্যু হল, আর নিমির শাপে বশিষ্টদেব নতুন দেহ ধারণ করলেন– মিত্র বরুণের পুত্ররূপে।

গৌতম মুনির দ্বারা যজ্ঞ তখনও চলছে। তাই সুগন্ধ তেল মাখিয়ে রাজার দেহকে যত্ন করে রাখা হল। এদিকে ঋষিরা যজ্ঞ শেষ করে রাজাকে আশীর্বাদ করতে গেলেন। মৃত-রাজার সামনে দাঁড়ালেন। বললেন– হে রাজন, আপনার যজ্ঞ সমাপ্ত ও সার্থক হয়েছে। সেই পুণ্যে কিবা হয় তব অভিলাষ, আমাদের কাছে তাহা প্রকাশ কর।

সবাইকে অবাক করে নিমির স্বরে কেউ যেন কথা বলে উঠল–ঋষিগণ, দেহ ছাড়া প্রাণ নিয়ে থাকা যে কত কষ্ট তা এখন অনুভব করতে পারছি। দেহের উপর প্রাণের বড় মায়া। আমি আর ঐ কায়াকে ধরে মায়ায় বন্দি হতে চাই না। কিন্তু আমি সবার কাছেই থাকতে চাই।

তখন ঋষিরা আশীর্বাদ করলেন–তুমি বিদেহ হয়েই থাক। সেই থেকে নিমি রাজা বিদেহ হয়েই থাকলেন। কিন্তু দেহ না থাকলে রাজত্ব চালাবেন কেমন করে? পুত্রও নেই, তখন ঋষিরা তাঁর মৃতদেহকে মন্থন করে এক পুত্র সন্তান সৃষ্টি করলেন। তার নাম দিলেন জনক। তিনি মিথিলার সিংহাসন বসে রাজ্য পরিচালনা করলেন। এই জনক রাজার কন্যাই সীতা, শ্রীরামের ঘরণী।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *