দারুণ দহনে আসে বৈশাখ নববর্ষের প্রাতে
নতুন খাতার উৎসব নিয়ে বাঙালী প্রথম মাতে ।
শীতলষষ্ঠী , তুলসী তলায় কলসী বাঁধি কিনে
পঁচিশে বৈশাখ পালন করি কবির জন্মদিনে ।
জ্যৈষ্ঠ মাসে জামাইষষ্ঠী আষাঢ়ে রথের মেলা
দেখতে যাবো তুই আর আমি আজকে সন্ধ্যাবেলা।
বিপদতারিণী ব্রতটাও আছে গঙ্গা পূজার পরে
দশহরাতে দশ ফল লাগে মনসা পুজোর তরে।
বর্ষা চলছে ঝরছে না বারি ইলিশের টানাটানি
ইলিশ খেতে উৎসবে যাই চড়া দাম তবু মানি।
শ্রাবণ মাসে ঝুলন আসে রাখি পূর্ণিমা সাথে
স্বাধীন ভারতে পতাকা তুলি পনেরোই আগস্ট প্রাতে ।
জন্মাষ্টমী ভাদ্রমাসে কৃষ্ণঠাকুর হাসে
চাল,তিল নাড়ু, ননী ছানা ক্ষীর খেতে বড় ভালোবাসে।
পাকা তাল পড়ে, ধুপধাপ ক’রে রুটি লুচি তালময়
তালের গন্ধে ম ম করে সব “চচ্চড়ি ” পুজো হয়।
এবার আসেন বিশ্বকর্মা হাতির পিঠে চেপে
আশ্বিন আসে শারদ উৎসবে বাঙালিরা ওঠে ক্ষেপে ।
খাওয়া দাওয়া আর কেনাকাটাতেও বাঙালী বিশ্বসেরা
চারদিন কাটে হই-হুল্লরে দশমীতে ঘরে ফেরা ।
সপ্তাহ পর কোজাগরী রাত লক্ষ্মীর আরাধনা
পল্লী গাঁয়ের মজার রাত্রি নাম “চোরা পূর্ণিমা” ।
কার্ত্তিক মাসে দীপাবলী আসে শুকপূজা ভোরবেলা
আতস বাজীর প্রদর্শনী রঙীন আলোর মেলা ।
ভাতৃদ্বিতীয়া জমে যায় খুব ভাই বোনে খুনসুটি
“যমের দুয়ারে পড়লো কাঁটা” হাসি মজা লুটোপুটি ।
জগদ্ধাত্রী আলোর রাত্রি আলোক সজ্জামালা
সারা রাত জুড়ে ঠাকুর দেখা ঘুম নেই চোখ জ্বালা।
এরই মাঝে রাসের মেলা মজায় সবাই থাকি
শিশু দিবসে শিশুদের সাথে শিশুর গন্ধ মাখি।
মাস শেষ হয় কার্ত্তিক পূজা বেশ কিছু ঘরে ঘরে
অঘ্রাণ আসে ইতুপূজা হয় কিশোরীরা পূজা করে ।
নতুন সরা পঞ্চকড়াই মান কচু ধান গাছ
সারা মাস জুড়ে নিরামিষ খাওয়া রবিবারও নয় মাছ !
পৌষ মাসে খ্রীষ্ঠদিবস কেক খাওয়া বড়দিন
যত উৎসব বাঙালীর ঘরে নাচি সবে ধিন্ ধিন্ ।
জমে পড়ে শীত খাওয়াটাই প্রীত্ পিঠে পুলি হরদম
নলেন গুড়ের পায়েসের সাথে নবান্ন মনোরম ।
এরপর আসে সেই শুভক্ষণ বাগদেবী আরাধনা
সাজগোজ ক’রে ছাত্রছাত্রী মন হয় আনমনা ।
ভীম একাদশী ভ্যালেন্টাইন বাঙালীর সব চাই
বসন্ত আসে উরু উরু মন সুজন কোথায় পাই ?
শিবরাত্রি বাঙালী নারীর উৎসব মহাব্রত
ফাগুন মাসের কালী পূজায় মানসিক্ থাকে যত !
দোল উৎসব রঙের খেলা রঙীন হয় মন
বাসন্তী আর অন্নপূর্ণা পূজায় শুভক্ষণ ।
নীলপূজা আর গাজনের মেলা চড়ক এসে পড়ে
বারো মাস জুড়ে তেরো পার্বন বাঙালীর ঘরে ঘরে ।