বাদামের জন্য দাঁত
সেদিন বইমেলা চলেছি। দত্তপুকুর থেকে ট্রেন। গন্তব্য শিয়ালদা। ওখান থেকেই মেট্রো চেপে বইমেলা। পতিদেব ছিলেন, জেনারেলেই উঠেছিলাম। পরিচিত একজনের সঙ্গে দেখা। জমিয়ে গল্প করছি। হঠাৎ চোখ গিয়ে আটকালো একজনের দিকে। মধ্যবয়সী, সঙ্গে থাকা ওনার বয়সী একজনের সঙ্গে কথাবার্তা বলছেন। হাসছেন মাঝে মাঝে। একটাও দাঁত নেই। কথাবার্তা সুস্পষ্ট না হওয়াটাই স্বাভাবিক। আমি দেখছি ওনাকে, আর উনি দেখছেন আমাকে।
বাদাম উঠলো ট্রেনে। বাদাম আমার ভীষণ প্রিয়। যাতায়াতের পথে খেতে আরো ভালো লাগে। যাইহোক, চারটে কিনলাম। ছেলে, আমি, পতিদেব ও আমি যার সঙ্গে কথা বলছিলাম ওনাকে দিলাম। পয়সাও মিটিয়ে দিলাম বাদাম ওয়ালাকে। বেশ আয়েশ করে খাচ্ছি। ভদ্রলোক দেখছিলেন। পরের স্টেশন আসছে। বাদাম ওয়ালা নামবেন। ঐ দাঁতহীন লোকটি চেঁচিয়ে বলছেন, বাদাম, ও বাদাম। আমাকে দুই প্যাকেট দাও, বলে কুড়ি টাকা দিলেন। আমি অবাক চোখে দেখছি উনি কি করেন। ওনার সঙ্গে যিনি, তাকে একটা দিলেন।অপর প্যাকেটটা ও ধরালেন ওনার হাতে। ব্যস্ত হয়ে ব্যাগ ঘেঁটে কিছু একটা বের করলেন। দেখি একটা বাক্স। খুললেন যত্ন করে। দিলেন মুখে পুরে। সেট করে নিলেন দুপাটি দাঁত। আমার দিকে তাকিয়ে হাসলেন। এবার শুরু করলেন বাদাম চিবানো।