Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » বটুকবুড়োর চশমা || Shirshendu Mukhopadhyay » Page 6

বটুকবুড়োর চশমা || Shirshendu Mukhopadhyay

বুড়ো বয়সের একটা লক্ষণ

বুড়ো বয়সের একটা লক্ষণ হল, ইন্দ্রিয়াদি একে একে বিকল হতে থাকে। চোখ যায়, কান যায়, নাক যায়, বোধবুদ্ধি গুলিয়ে যেতে থাকে। এখন যেন সেই রকমই হতে লেগেছে নিমচাঁদের। একচন্দ্রদাদার যখন কানের দোষ হল তখন একদিন তাকে বলেছিল, “বুঝলি নিমে, যখন কানে..সব সময়, দিনমানে কি রাতদুপুরে কেবল ঝিঝিপোকার ডাক শুনবি তখনই জানবি যে, তোর কানের দোষ হয়েছে। ওই শব্দের ঠেলায় অন্য সব আওয়াজ আর কানে ঢুকবার পথই পায় না।‘

কথাটা অক্ষরে অক্ষরে মিলে যাচ্ছে। বুড়ো বয়স এসে অন্য সব ইন্দ্রিয় ছেড়ে তার কানটাকেই যেন আগে পাকড়াও করেছে। সেই রকমই শুনেওছে নিমচাঁদ। বার্ধক্য এসে আগে কানের উপরেই চড়াও হয়। তারপর সেখানে থানা গেড়ে বসে অন্যসব যন্ত্রপাতি বিকল করার কাজে লেগে পড়ে।

জলার ধারের জঙ্গলের পাশ দিয়ে বুড়োমানুষদের মতোই টুকটুক করে হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ কানে ঝিঝির ডাকটা শুরু হল। ভারী জ্বালাতনের ব্যাপার। প্রথমটায় ভেবেছিল, সত্যি ঝিঝিই ডাকছে বুঝি। তা বনে-জঙ্গলে ঝিঝিরা ডেকেও থাকে। কিন্তু নিমাদ খেয়াল করে দেখল, এই ঝিঝি যেন ঠিক সেই ঝিঝি নয়। শব্দটা অনেক বেশি জোরালো, আর তাতে বেশ একটা ওঠা-পড়া আছে। গান বাজনা সে জানে না, সুরজ্ঞানও নেই। কিন্তু তার যেন মনে হল, এই ঝিঝির ডাকের মধ্যে যেন একটু সুরেলা মারপ্যাঁচও আছে। কানের দোষ হলে বোধহয় এরকমই সব হয়।

বাঁ ধারে জলা, ডান ধারে জঙ্গল। মাঝখানে নিরিবিলি পথ ধরে খুব আনমনে হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ থমকে দাঁড়াতে হল নিমাদকে। জলা থেকে তিড়িং করে লাফ দিয়ে ডাঙায় উঠে একটা ভেজা, লম্বাপানা, সবুজ রঙের বিটকেল লোক যেন শাঁ করে রাস্তা পেরিয়ে জঙ্গলে ঢুকে গেল।

নাঃ, কানের সঙ্গে সঙ্গে কি চোখটাও গেল? বিশুজ্যাঠা যেন বলছিলেন, চোখে চালসে ধরলে বা ছানি পড়লে লোকে ভুলভাল দেখে। মানুষের রং তো সবুজ হওয়ার কথাই নয়। তবে কি হোলি ছিল আজ? তাই বা কেমন করে হয়? আশ্বিন গিয়ে সবে কার্তিক পড়েছে, এ সময় তো হোলিখেলা হওয়ার কথা নয়!

বুড়ো বয়সে মাথারই গন্ডগোল হচ্ছে নাকি? দোনোমনো করে একটু পঁড়িয়ে পড়ল নিমচাঁদ। তারপর বুক ঠুকে জঙ্গলে ঢুকে পড়ল। জঙ্গল তার হাতের তালুর মতো চেনা। ছেলেবেলা থেকে যাতায়াত। বনকরমচা, বুনো কুল, মাদার ফল কত কী ফলত। ভিতরে একটা ভাঙা মনসা মন্দির আছে, একটা ভুতুড়ে নিলকুঠিও।

ভিতরবাগে ঢুকে জঙ্গলের ছায়ায় প্রায় অন্ধকার জায়গায় একটু দাঁড়াল নিমাদ। অন্ধকারটা চোখে-সওয়া হয়ে এলে ধীরেসুস্থে এদিক-ওদিক সাবধানে এগোতে থাকল। বেশ খানিকটা যাওয়ার পর একখানা জব্বর মোটা শিশুগাছের গুঁড়ির আড়ালে লোকটাকে দেখতে পেল নিমাদ। খুব জোরালো ঝিঝির শব্দ হচ্ছে নিমচাঁদের কানে। সে এমন শব্দ যে কান ঝালাপালা হয়ে যাওয়ার জোগাড়! নিমচাঁদ ভুল দেখছে কি না তা বুঝতে পারছে না, তবে তার ঠাহর হচ্ছে, লোকটার গায়ের রং শ্যাওলার মতোই গাঢ় সবুজ। আর লোকটা গাছের গুঁড়িতে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে, আর লোকটার হাতখানেক দূরে একটা প্রকাণ্ড দুধগোখরো ফণা তুলে হিসহিস করে দুলছে। ছোবল মারল বলে। কিন্তু লোকটা নড়ছেও না, চড়ছেও না।

নিমাদ এক পলকও সময় নষ্ট না করে ছুটে গিয়ে লোকটার একটা হাত ধরে হ্যাঁচকা টান মেরে সরিয়ে আনার চেষ্টা করল। কিন্তু খুবই অবাক হয়ে দেখল, লোকটাকে এক চুলও নড়াতে পারেনি সে। বরং লোকটাকে ধরতেই তার সর্বাঙ্গে কেমন যেন একটা শিরশিরে ভাব হচ্ছিল। আর দুধগোখরোটাও এই ফাঁকে একটা চাবুকের মতো ছোবল বসিয়ে দিল লোকটার ঊরুতে।

সাপটা যে তাকে কামড়েছে এটা যেন লোকটা টেরই পেল না। মুখ ঘুরিয়ে নিমচাঁদকে একটু দেখে নিয়ে তাকে একটা ছোট্ট ধাক্কা দিয়ে পিছনে ঠেলে দিল। সেই ধাক্কায় প্রায় তিন হাত ছিটকে গিয়ে মাটিতে পড়ে গেল নিমচাঁদ। এবং পড়ে গিয়েও দেখতে পেল, সবুজ লোকটা ভারী যত্ন করে নিচু হয়ে প্রকাণ্ড ভয়ংকর সাপটাকে তুলে নিয়ে কোমরে একটা জালদড়ির মতো জিনিসের থলিতে ভরে নিল।

নিমচাঁদ অতি কষ্টে উঠে বসে ভারী অভিমানের গলায় বলল, “বাপু হে, মানছি যে, আমার গায়ে আর আগের মতো জোর-বল নেই, বুড়োও হচ্ছি। কিন্তু সাপটা যে কামড়াল তার একটা ব্যবস্থা করো। এক্ষুনি দড়ির বাঁধন না দিলে মরবে যে!”

লোকটা তার দিকে আবার তাকাল মাত্র। কথার জবাব দিল না। “ওটা যে দুধগোখরো হে, ওর সাংঘাতিক বিষ!” লোকটা কথাটাকে গ্রাহ্যই করল না। অবশ্য অবাক কাণ্ড হল, লোকটার মধ্যে বিষক্রিয়ারও কোনও লক্ষণ দেখা গেল না।

দুধগোখরো কামড়ালে এতক্ষণে তো ওর ঢলে পড়ার কথা! লোকটার বাঁ হাঁটুর মালাইচাকির উপরে ক্ষতস্থানটা এই আবছায়াতেও দেখতে পাচ্ছে নিমচাঁদ। সাপের ছোবল নিমচাঁদ ভালই চেনে। পাকা গোখরোটা পুরো বিষ ঢেলেছে লোকটার শরীরে। লোকটার শরীরে বিষটা হয়তো একটু দেরিতে কাজ করবে। কিন্তু রেহাই পাওয়ার উপায় নেই।

নিমষ্টাদ একটা হাঁক ছেড়ে বলল, “কথাটা কানে যাচ্ছে না নাকি হে! বাঁধন না দিলে কী দুর্দশা হবে তোমার জানো?” বলে দাঁত কড়মড় করে নিমচঁদ উঠে লোকটাকে শক্ত করে ধরে একটা ঝাঁকুনি দিয়ে বলল, “পাগল নাকি তুমি?”

লোকটাকে ছুঁতেই আবার কেমন একটা শিরশিরে ভাব টের পেল নিমাদ। এসব কী হচ্ছে বুঝতেই পারছে না সে।

লোকটা হঠাৎ নিমাদের মতো দশাসই একটা মানুষকে তার দুটো লিকলিকে হাতে তুলে মাথার উপর এক পাক ঘুরিয়ে গদাম করে ছুঁড়ে মারল। কোথায় লাগল কে জানে, নিমাদ মূর্ছা না গেলেও ঝিম ধরে খানিকক্ষণ পড়ে রইল। ওরকম লিকলিকে রোগা একটা লোকের গায়ে এত জোর হয় কী করে? তার উপর সদ্য সদ্য একটা বিষগোখরোর কামড় খেয়েছে!

একটু পরে যখন নিমষ্টাদ একটু ধাতস্থ হয়ে পিটপিট করে চাইল, তখন লোকটা মুখোমুখি একটা গাছে হেলান দিয়ে বসে আছে। একটা পা সামনে ছড়ানো, আর-একখানা পা ভাঁজ করে বুকের কাছে ভোলা। হাবভাব তেমন মারমুখো নয়, বরং তার দিকে একটু করুণার চোখেই চেয়ে আছে।

নিমাদও উঠে বসল। কানে এখনও সেই প্রচণ্ড ঝিঝির শব্দ হচ্ছে বটে, কিন্তু নিমাদের এখন আর শব্দটা তো অসহ্য মনে হচ্ছে না। দম নেওয়ার জন্য নিমচাঁদও মুখোমুখি গাছের গুঁড়িটায় ঠেস ৭২

দিয়ে বসল। লোকটা যে কেন এখনও বিষক্রিয়ায় ছটফট করছে না, মুখ দিয়ে গাজলা উঠছে না তা ভেবে পেল না নিমচাঁদ। লোকটা কি সাপের বিষের ওষুধ জানে?

ঝিঝির ডাকটার ভিতরে হঠাৎ নিমচাঁদ যেন একটা কিছু বুঝতে পারতে লাগল। ঠিক শোনা গেল না বটে, কিন্তু বোঝা গেল। যেন বলা হল, “সাপের বিষে আমাদের কোনও ক্ষতি হয় না।

নিমাদ সোজা হয়ে বসে বলল, “কথাটা তুমিই বললে নাকি বাপু? কিন্তু কীভাবে বললে? কোনও কথা তো শুনতে পেলুম না!”

“তুমি যে ঝিঝির ডাক শুনতে পাচ্ছ সেটা ঝিঝির ডাক নয়। ওটাই আমাদের কথা।”

“ও বাবা, কিন্তু ঝিঝির ডাকের কথা আমি বুঝলুম কী করে?”

“কথা নয়, তুমি ভাবটা বুঝতে পারছ।”

“ও বাবা! এ তো সাংঘাতিক ব্যাপার! তা ওরকম একটা গোখরোর বিষ তুমি হজম করলে কী করে?”

“আমাদের শরীরে এমন জিনিস আছে যাতে এসব বিষ কাজ করে না।”

“তুমি লোকটা তা হলে কে বাপু? কোথা থেকে আসছ?”

“আমি অনেক দুরের লোক।”

“তোমার গায়ের রং ওরকম সবুজ কেন?”

“তোমার গায়ের রং কেন বাদামি?”

“আহা, মানুষের গায়ের রং তো এমনধারাই হয়।”

“আমাদের রংও আমাদের মতোই।”

“আমাকে তো বাপু তুমি গায়ের জোরে হারিয়েই দিলে। অবশ্য আমিও বুড়ো হয়েছি।”

“তুমি মোটেই বুড়ো হওনি।”

“হইনি! বলো কী? কানে শুনছি না, চোখে দেখছি না, পায়ে জোর-বল কমে গিয়েছে।”

“তোমার বয়স মাত্র সাঁইত্রিশ। তোমার চোখ, কান, গায়ের জোর সবই ঠিক আছে। তবে আমাদের শরীরে যে শক্তি আছে তার একশো ভাগের এক ভাগও তোমাদের নেই।”

নিমাদ খানিকটা ভরসা পেয়ে বলল, “আমার বয়স তুমি কী করে জানলে?”

“যে-কোনও মানুষ, জীবজন্তু বা গাছপালা দেখে আমরা তাদের নির্ভুল বয়স বলে দিতে পারি। এই ক্ষমতা তোমাদের নেই। তোমরা মানুষের প্রজাতি হিসেবে অনেক ব্যাপারে পেছিয়ে আছ।”

নিমাদের কেমন যেন গা শিরশির করছিল। কথাগুলো ভারী আজগুবি ঠেকছে তার কাছে, কিন্তু অবিশ্বাসও করা যাচ্ছে না। ভুতুড়ে কাণ্ড কি না তাই-বা কে জানে?

কথাটা ভাবামাত্রই জবাব এল, “না, ভুতুড়ে কাণ্ড নয়।”

“কিন্তু আমি যে বড় ঘেবড়ে যাচ্ছি বাপু, তুমি ভাল লোক না খারাপ লোক সেটাই তো বুঝতে পারছি না। তোমার মতলবখানা

কী?”

“সেটা বললেও তুমি বুঝতে পারবে না। তবে আমরা খারাপ লোক নই। তোমাদের কিছু উপকারও করতে চাই।”

“কীসের উপকার?”

“সেটা খুব জটিল বিষয়। তুমি একজন সরল সাধারণ মানুষ, তো জ্ঞানী নও। তোমার পক্ষে সব কিছু বুঝতে পারা সম্ভব নয়। তবে আমি তোমার কাছে একটু সাহায্য চাই।”

“কী সাহায্য?”

“আগে এই জিনিসগুলো নাও।”

বলে লোকটা নিমাদের দিকে দু’খানা চ্যাপটা মতো ধাতুর চাকতি ছুঁড়ে দিল।

নিমাদ কুড়িয়ে নিয়ে দেখল, দুটো তেকোনা সোনালি রঙের জিনিস। বেশ ভারী। সোনাদানা সে বিশেষ চেনে না, তাই সোনা কি না বুঝে উঠতে পারল না। বলল, “এ কি সোনাটোনা নাকি রে বাবা?”

“হ্যাঁ, সোনা।”

“এর যে অনেক দাম!”

“হ্যাঁ। আর এটা তোমার পারিশ্রমিক।”

“তা কী করতে হবে বাপু?”

“কিছু লোক আমাদের সম্পর্কে জানতে চায় বলে খোঁজখবর নিতে আসছে। তারা আমাদের ক্ষতিও করতে পারে। তুমি একজন শক্তিশালী এবং সাহসী লোক। তুমি আজ রাতটা এই জঙ্গলে লুকিয়ে থেকে পাহারা দেবে। পারবে না?”

“পারব। তারা এলে কী করতে হবে?”

লোকটা ছোট্ট একটা চার আঙুল লম্বা নলের মতো জিনিস তার দিকে ছুঁড়ে দিয়ে বলল, “এটা একটা বাঁশি। ফুঁ দিলে কোনও শব্দ হবে না। কিন্তু আমরা সংকেত পেয়ে যাব।”

“তা তোমরা কোথায় থাকো বাপু?”

“এই জঙ্গলের মধ্যেই, আরও গভীরে এবং মাটির নীচে।”

“তা শুধু বাঁশি বাজিয়েই খালাস! একটা লাঠিটাঠি হলে আমি একাই দশটা লোকের মহড়া নিতে পারি।”

“তার দরকার নেই। আমরা হিংস্র মানুষ নই, মারপিট পছন্দ করি না।”

“তা বললে হবে কেন বাপু! এই যে একটু আগে আমাকে তুলে রাম আছাড় মারলে?”

“সেটা তোমাকে মারার জন্য নয়। তুমি সত্যিই একজন শক্তপোক্ত লোক কি না সেটা পরীক্ষা করার জন্যই আছাড় মেরেছিলাম।”

নিমষ্টাদ একটু নাক কুঁচকে বলল, “শুধু পাহারা দেওয়া সার, বাঁশি বাজানোটা তেমন গা-গরম করা কাজ নয়। একটু লড়ালড়ি হলে বড় ভাল হত।”

“না, ওদের কাছে বন্দুক-পিস্তল আছে। হয়তো শিকারি কুকুরও থাকবে।”

“ঠিক আছে বাপু, সন্ধের পর-পরই আমি না হয় খেয়েদেয়ে চলে আসব। তা বাপু, এই সামান্য কাজের জন্য এত সোনাদানার কী দরকার ছিল?”

“সোনাকে তোমরা খুব মূল্যবান মনে করো তা আমরা জানি। কিন্তু তোমাদের এই পৃথিবীর মানুষরা নির্বোধ। তারা কখনও ভেবেই দেখেনি যে, সোদানার চেয়ে অনেক বেশি মূল্যবান হল কাদামাটি, কেঁচো, পোকামাকড়, গাছপালা এবং অনেক বর্জ্য পদার্থ, আর জল। মানুষ যেদিন সেটা বুঝবে, সেদিনই সে সত্যিকারের সভ্য হবে।”

“তুমি বাপু কেবল গোলমেলে কথা বলো। যেগুলোর কথা বললে সেগুলো কি দামি জিনিস নাকি?”

“ওসব বুঝতে তোমাদের অনেক সময় লাগবে। কোন জিনিসের কী দাম সেটা বুঝতে পারাটাই বিচক্ষণতা।”

লোকটা টক করে উঠে দাঁড়াল। নিমচাঁদ দেখল, ঢ্যাঙা লোকটার মাথা এত উঁচুতে যে, সে পঁড়িয়ে হাত বাড়িয়েও নাগাল পাবে না।

স্তম্ভিত এবং বাক্যহারা নিমচাঁদ জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এসে আর বুড়োদের মতো হাঁটা ধরল না। বরং কমবয়সি চনমনে একটা মানুষের মতো বড় বড় লম্বা পা ফেলে হাঁটতে লাগল। সে স্পষ্ট বুঝতে পারছে, তার বুড়ো বয়সটা তাড়া খেয়ে পালিয়ে গিয়ে গা ঢাকা দিয়েছে। আর সহজে এদিকপানে আসবে বলে মনে হয় না।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress