হ্যাঙারে টাঙানো দুটো, ভুল-শব্দে-ডাকা, ঝকঝকে রঙিন পোশাক :
জীবন ও মৃত্যু। জীবন, আমার ট্রাউজার; মৃত্যু, সিল্কের স্বাদভরা তারাপরা
নৈশ-পাজামা। সারাদিন পরে থাকি বাস্তবখচিত ট্রাউজার, রাত্রে স্বাদ নিই
পাজামার; এবং কখনো অ্যাভেনিউর তীব্র মধ্যে দাঁড়াই পাজামা প’রে,
সারারাত পরে রই টাওয়ার-মিনার-ব্যাংক-স্ট্রিট-জন্ম-হত্যা-বাস্তবতা-ঝলকিত
ব্যাপক ট্রাউজার। দক্ষ দর্জির হাতে শিহরণময় বৈদ্যুতিক যন্ত্রে তৈরি
বাস্তবমণ্ডিত, ঢোলা, পকেটখচিত, নাইলনের সমর্থ সুতোয় ও জিপে গাঁথা
সাম্প্রতিক, অভিনব জীবন-ট্রাউজার। কিন্তু পরার পরেই ভয়ংকর ঠাসাঠাসা
লাগে, উরুতে ক্রন্দন ও সম্মিলিত ব্যর্থতা বাজে, পাছায় ভীষণ টান লাগে, আর
রাস্তায় বেরুতে-না-বেরুতেই টাশটাশ ছেঁড়ে জিপ, তৎপর তন্তু, নাইলন ও
কার্পাসের প্রসিদ্ধ প্রতিভা। রঙিন রক্তের চাপে বাস্তবতা ছিঁড়ে দেখা দেয়
অবাস্তব, পরাবাস্তব, নীলবাস্তব, লালবাস্তব, পদ্মবাস্তব, স্বপ্নবাস্তব,
জ্যোৎস্নাবাস্তব, সোনিয়াবাস্তব আন্ডারওয়ার! ঝরে উরু, পাছা, জংঘা ও
অস্থি থেকে সূর্যাস্তের মতো বিশ্ববিদ্যালয়, সোনার স্বপ্নের মতো ব্যাংক,
বস্তুর মতো অভিনেত্রী, গায়িকার মতো পদ্য, পল্লীর মতোন রাজধানি,
সুরের মতোন নর্তকী, ও জুনকোর জাপানি ওষ্ঠের মতো একবিন্দু স্বপ্ন।
কখনো-বা পরতে চেয়েছি রাজনীতির মতো লুঙ্গি, সুনীতির হাফপ্যান্ট,
ধর্মের মতো শালোয়ার, একনায়কের ঢ্যাবঢেবে খাকি, কিন্তু সব ছিঁড়েফেড়ে
ভেসে ওঠে স্বপ্নের আন্ডারওয়ার। সাধারণত, অনভ্যাসবশত, পাজামা পরি না
রাতে, এমন কি গ্যালিক ঠাণ্ডায়ও আমি সারারাত ঘুমিয়েছি পাজামাবিহীন
সামান্য উত্তেজনায় দুই খণ্ড হ’য়ে গেছে লর্ডস-এ তৈরি পাজামা।
মৃত্যু পরার দিনেও হয়তো ফেটে পড়বে সেই শাশ্বত সিল্ক–দেখা দেবে
অমৃত্যু, লালমৃত্যু, পরামৃত্যু, জ্যোৎস্নামৃত্যু, চন্দ্ৰাস্তরাজিয়ামৃত্যু আন্ডারওয়ার