বাড়ি থেকে পালিয়ে চার মাস বাদে মেজোভাই ফিরে এলো
সারা শরীরে ক্ষতচিহ্ন সঙ্গে নতুন ব্যাধি, কি সেই ব্যাধির নাম
ছোট বলে কেউ আমাকে বলেনি।
শুধু মা তার পুত্রকে জড়িয়ে ধরে বলতো:
ইচ্ছে করে পেট কেটে তোকে ফিরিয়ে নিই।
আমি থাকতাম আড়ালে, বৃষ্টির জন্য ছাদে উঠে দাঁড়াতাম
মাছ নয়, দুধ নয়, মাংস নয়, কুমডোর ডাঁটা সেদ্ধ খেয়ে
আমারও মনে হতো আমার শরীরে রাগ আছে, জোর আছে
একদিন মাঝরাত্তিরে হারে রেরে রেরে বলে চিৎকার করে উঠবো।
বাবা সব হতদরিদ্র ছেলেমেয়েদের ইংরেজি পড়াতেন
কি হলো তাদের পড়িয়ে? তারা কি ভারতবর্ষ পাল্টে ফেলেছে?
না কি মাথায় ইঁট নিয়ে চলেছে অযোধ্যার দিকে?
পাড়ার লোকেরা একদিন বাবাকে ডেকে বললো:
আপনার ছোট ছেলেটা খুব ভাবুক, ছাদে দাঁড়িয়ে থাকে
ওকে একটা চায়ের দোকান করে দিন।
সন্ধেবেলায় ছাদ থেকে নামিয়ে সে কি মার! জীবনে ভুলবো না ।
কোথা থেকে একদিন একটা ফুটফুটে মেয়ে এলো আমাদের বাড়িতে
আমরা তাকে কেউ চিনি না, কিন্তু সে আমাদের প্রত্যেকের নাম জানে
সে মাকে তসরের কাপড় পরালো, বাবাকে দামী সিগারেট দিলো
উচ্ছন্নে যাওয়া মেজোভাইকে ডাক্তার দেখিয়ে আনলো
আমাকে নিয়ে এলো নদীর কাছে, বললো, ‘চোখ বোঁজো
আমি সমস্ত পোশাক খুলে নদীতে নামবো’।
আজ পনেরো বছর বাদে সেই নদীর সামনে দাঁড়ালাম
কিন্তু সেই মেয়ে নদী থেকে আর কোনদিন উঠে আসেনি।