পারত যদি সাজিয়ে দিত গোলাপ দিয়ে
তোমার ঘরের শূন্যতাকে।
তোমার সঙ্গে আস্তে সুস্থে বসত গিয়ে প্রবাল রঙের
চুপ সিঁড়িতে গোধূলিতে।
তোমার হাতের রাঙা পাতায় নিরিবিলি
আঁকত কিছু স্বপ্নরেখা।
পারত যদি তোমায় নিয়ে নীলাকাশে
কাটত সাঁতার মেঘের গাঙে।
দাঁড়িয়ে ছিলে স্পষ্ট রোদে
মেরুন শাড়ির লাজুক ভাঁজের শোভায় একা;
কিয়দ্দুরে তিনটি চড়ুই চঞ্চলতায় মেতেছিল।
ঘিরে রঙের উলে-বোনা কার্ডিগানে
রোদালো শীত বাধা পেয়ে তোমার গালে
চুমো আঁকে; দৃষ্টি তোমার কিসের খোঁজে শ্যামা পাখি?
পুরনো সেই বাড়ির কত ছায়া-ছায়া স্মৃতি এখন
মধ্যদিনে হৃদয় জুড়ে শঙ্খচিলের
মতোই কেঁদে বেড়ায় ধু ধু। কেমন একটা
বাঁশির ধ্বনি বিদায়বেলার দৃশ্য কিছু ডেকে আনে।
পারত যদি বাংলা ছাঁদের একটি বাড়ি
তৈরি করে লন বানাত,
তোমায় নিয়ে বসত দবিজ সবুজ ঘাসে,
খোঁপায় দিত গোলাপ গুঁজে।
হয়ত তোমার কানে কানে গুণগুণাত
নতুন যুগের পদ্য কিছু;
সেসব পদ্যে থাকত কী-যে জানত শুধু
বড়ই ব্যাকুল দু’টি হৃদয়।
পারত যদি মগ্ন কবি তোমার সকল
সাধ মেটাত কথায় কাজে।
তোমার জন্যে যিশুর মতোই
খুন-ঝরানো পায়ে হাঁটত এই শহরে,
পরত শিরে কাঁটার মুকুট সারা বেলা,
খুনী ডাকাত চোরের পাশে বিদ্ধ হতো কালো ক্রূশে।
পারত যদি ধ্যানী কবি অর্ধাহারে, অনাহারে
তোমার জন্যে অমর গাথা লিখত জানি।
বুকের রক্তে লেখা সেসব পঙ্ক্তিমালা
দেখে সুদূর দেবদূতেরা উঠত জ্বলে
সবুজচোখে ঈর্ষা নিয়ে, দস্যুবেশে
লুটে নিতে চাই কবির ভেতর-দৃষ্টি, মেধা মনন।