নিশ্চিন্দিপুরের অপু ভেবেছিল বড় হয়ে সে
গুরুমশায়ের মতো একটা দোকান দেবে,
তামাকের দোকান-
পসার জমবে বেশ,
এক সুপ্ত বড়লোক হওয়ার বাসনা বাসা বেঁধেছিল তার মনে ,
অপু কি সত্যি পেরেছিল ,
সে কি তারপর ভেবেছিল আর কখনো?
এমনি আমাদের মনের মধ্যেও ছোটবেলার
অনেক স্বপ্নের ফেরিওয়ালা ঘুরে বেড়ায়
দূর থেকে দূরান্তে ,
শন পাপড়ির স্মৃতির ভিড়ে
আজ সব হারিয়ে যায় –
লাল ,সাদা ,গোলাপি হাওয়াই মিঠাই গুলো আজ চুপসে গেছে
প্রবল হাওয়ার তোপে । পুরনো ধুতি ,ময়লা ফতুয়া আর পায়ে টায়ারের
স্যান্ডেল পরা সেই যে বিহারি কাকা ডুগডুগি বাজিয়ে
দুপুরের কড়া রোদে মাঠ পেরিয়ে চলে যেত
এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে
আজ ওদের আর দেখা মেলে না,
অনেক প্রতীক্ষায় থেকেছি
অনেক শীত হেমন্ত পেরিয়ে গেছে
বাঁশির ডাক আর শুনিনি ,শোনা যায়নি সেই পরিচিত
কন্ঠস্বরের গল্পের গান -‘দিল্লি দ্যাখো ,কুতুব দ্যাখো…. ‘
আজো নিঝুম রাতে জেগে ওঠে সে সব দিনের কথা
মনে হয় এই ত সেদিনের গল্প,গরু গাড়ির নিচে স্তিমিত লন্ঠন, হরিহর সবাইকে নিয়ে গ্রাম ছেড়ে চলছে শহরের পানে
লন্ঠনের আলো দূর থেকে দূরে ছোট হতে হতে মিলিয়ে যাচ্ছে
আর এভাবেই আমরা আমাদেরকে ঠেলে সরিয়ে দিচ্ছি
কাছ থেকে দূরে ,আর এক একটা অপু গ্রাম
ছেড়ে পাড়ি দিচ্ছে শহরের দিকে
নতুন স্বপ্নের সন্ধানে !