মনে পড়ে
নুলিয়াদের সেই নৌকো,
ঢেউএর নাগাল ছাড়িয়ে
শুকনো বালির ওপর কাঠের ঠেকো দিয়ে আটকে রাখা
মনে পড়ে
তারই ওপর গিয়ে বসেছিলাম
সেদিন প্রথম রাতে !
কৃষ্ণ পক্ষের দ্বিতীয়া কি তৃতীয়া,
চাঁদ উঠতে আর দেরি নেই |
সমুদ্রে যেন তারই অস্থির উত্তেজনা,
হু হু-করে-বওয়া হাওয়ায়
তারই উদ্দাম উদ্বেগ |
শুধু বসেছিলাম পাশাপাশি,
হাত তো ধরিনি, বলিনিও কিছু |
কিই বা বলবো সমুদ্রের চেয়ে ভালো করে !
উদ্দাম হাওয়াতেই ছিলো আমার আলিঙ্গন |
ছুঁইনি তাই |
মনে কি পড়ে,
হঠাৎ নৌকোটা উঠেছিলো দুলে,
বুঝি হাওয়ায় বালি সরে গিয়ে
কাঠের ঠেকো একটু নড়ে উঠে,
কিংবা বুঝি সমুদ্রেরই ডাকে |
একটু শিউরে উঠেছিলে
হেসে উঠেছিলে তারপর
‘যদি– ?’
একই প্রশ্ন বুঝি উঠেছিলো
দু’জনের চোখে ঝিলিক দিয়ে |
যদি নৌকো যায় ভেসে
চাঁদ ওঠার ওই থমথমে প্রহরে
তরল রাত্রির মতো নীলাগলানো এই সমুদ্রে !
যদি নৌকো ভেসে যায় হঠাৎ
সম্ভবের এই কঠিন শাসন
কাঠের ঠেকোর মতো ঠেলে ফেলে !
তা কি কখনো যায় !
জানি, জানি এ যে নুলিয়াদের জেলেডিঙি
শুধু মাছ ধরতেই জানে |
সে নৌকো থেকে নেমে এসেছি,
ফিরে এসেছি সেদিনকার সেই সমুদ্রতীরে থেকে
বাঁধানো রাস্তার এই শহরে,
দেওয়াল-দেওয়া এই ঘরে |
তবু জেনো সে নৌকো কেমন করে এসেছে সঙ্গে,
জেনো, সে নৌকো চিরদিন থাকবে তৈরি
সম্ভবের তীরপ্রান্তে
আশায় উদ্বেগে কম্পমান |