টেবিলে ছিলেন ঝুঁকে কিছুক্ষণ আগে, এখন চেয়ার ছেড়ে
পুরাণের পুরনো ট্যাপেস্ট্রি ছেড়ে আলোছায়াময়
নিজস্ব উঠোনে তিনি পায়চারি করছেন অত্যন্ত তন্ময়।
অকস্মাৎ হাঁস দুটি জব্দ পাখা ঝেড়ে
উঠলো ভয়ার্ত ডেকে। কখন যে সুনামগঞ্জের ক্ষেতে পাকা
ধান-খেতে-আসা চকলেট-রঙ হাঁসের বাচ্চাটা
(নতুন পালক তার এ শহরে হয়েছিলো ছাঁটা)
হলো ক্ষিপ্রগতি নেউলের সহজ শিকার লতাগুল্ম ঢাকা।
কিঞ্চিৎ দুর্গম কোণে, তিনি কিছুই পাননি টের
বিকেল বেলায়, পরে পাখিপ্রিয় কনিষ্ঠ কন্যার জবানিতে
জানা গেলো খুঁটিনাটি সকল বৃত্তান্ত। আত্মজার দুচোখ পানিতে
ছিলো খুব টলটলে। আকস্মিক এই হিংস্র ঘটনার জের
টেনে মনে তিনি ফের অন্য মনে উঠোনে হাঁটেন
নিরিবিলি থেকে-থেকে কখনো কাশেন।
কনিষ্ঠ কন্যার পোষা ময়নাটা দাঁড়ে বসে থাকে
বারান্দায়, ছোলা খায়, কখনো-বা তার
‘শেবা, শেবা’ ডাকে
বাড়ির স্তব্ধতা জব্দ হয় খুব এবং গোলাপ গাছটার
পাতা শিহরণে শব্দহীন গীত যেন মাঝে-মাঝে।
বসন্তের সাঁঝে
বাতি জ্বলে ওঠে ঘরে। প্রৌঢ় কবি তখনও উঠোনে;
ধাবমান যানপিষ্ট কুকুরের মতো
স্বীয় যাবতীয় অতীতের কথা ভেবে-ভেবে তিনি গৃহকোণে
আবার আসেন ফিরে অভ্যাসবশত।
অনন্তর অসমাপ্ত কবিতার চিত্রকল্প যমক অথবা
অক্ষরবৃত্তের সুর ভাবেন। উঠোনে হাস্যময়ী রক্তজবা।