ধোঁয়া উঠা ভোরে রাজপথে গলিপথে
মুষ্ঠিবদ্ধ হাতের ক্রমপ্রসারিত মিছিলে
জাগে সুরের গর্জন
হেনরীর হাতুড়ির সুর–হো হো হো হো– হেনরীর
হাতুড়ির সুর।
সহসা চমক ভাঙে ‘নাম তার ছিলো হেনরী’ শুনে,
মহান মে দিবসের জয়ধ্বনি..!
একি! ভুলে গেছি আমি?
যখন দেখি আট থেকে বারো বছরের শিশু;
পথের ধারের গুমটি ঘরগুলোতে
আমার এঁটো সাফ করে আধপেটা খেয়ে,
কাক ডাকা ভোর থেকে নিঝুম রাত অবধি..
কি করে মনে রাখি বল..!,
ভোরে উঠে সেই যে বহু দূর দূর থেকে
তোমার আমার সবার বাড়ি আসে যে মেয়েটি
সবেতন দেবো কী তাকে ছুটি?
দেখি যখন ক্লান্ত শ্রমিকের,
নুন্যতম মজুরির রোদে পোড়া ঘামে ভেজা
চ্যাটচ্যাটে দেহের সব শক্তি
নিংড়ে নেয়, শুষে নেয় মহাজন;
বড় বড় অট্টালিকা আর টাওয়ারের ভাঁজে ভাঁজে
হোঁচট খায় দিনরাত আমার মতো বহুজন..!!
পেয়েছে কী আট ঘন্টা শ্রমের সঠিক মূল্যায়ন
নাকি কর্পোরেট যক্ষা কুড়ে কুড়ে খায় প্রতিক্ষণ ?
শ্রমের মজুরী কী সমান?
মসনদে বসা রাজা আর দরিদ্র শ্রমিকের মান.!!
পেটোয়ার নিশান ওড়ানো আস্তানায়-
খিস্তির বাতাসে আকাশটা তাদের
তেলচিটে ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন..!!
দীর্ঘশ্বাস আর কোনমতে বেঁচে থাকা
কবরের দিকে পা ফেলে এক এক করে হতাশার দিন…
বিপ্লবের সেই বীজমন্ত্র ‘দুনিয়ার মজদুর এক হও’
লোভী দানবের কুক্ষিগত দুনিয়ার ভিৎ কাঁপানো মন্ত্র
আধুনিক সভ্যতার কারাগারে অবরুদ্ধ;
আমি তুমি আমরা সবাই আজ নির্বিকার;
ভুলে গেছি আগস্ট স্পীজের সেইসব কথা, সেই দিন…..
অর্থ হারিয়ে মহান মে দিবস
শুধুই একটা সাধারণ ছুটির দিন!!
হুল্লোড়ে মাতা, ফাঁকা মাঠে সভা সমাবেশের আয়োজন..!
….প্রশ্ন শুধুই প্রশ্ন…
দিতে কে পারে উত্তর?
তুমি বলবে! এই নোনা জলের পাঁকে তুমিও আছো
সত্যিই তো নেই আমার কাছেও কোন উত্তর..
নেই নেই নেই….
অকপট হৃদয় বলে গান্ধারী-ই বেশ ছিলো;
হস্তিনাপুরে অন্ধ রাজার দেশে সবাই ছিলো অন্ধ….