ত্রিধারা -2
দুদিন রূপমের আর কোন খবর নেই।আমিও সংসারে কাজের চাপে রূপমের কথা ভুলতে বসেছিলাম।আজ আবার রূপমের হোয়াটস অ্যাপে মেয়েটার ছবিটা দেখলাম।
বেশ ভালো।খুব সুন্দর দেখতে।
তাই সে কথা জানাতে রূপমকে ফোন করলাম।
ফোন বেজে থেমে গেল। ফোনটা ধরল না।আমি
আমার নিজের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম।খানিক
পড়ে ফোনটা বেজে উঠল। দেখলাম রূপম রিংব্যাক করেছে।আমি হ্যলো বলতেই।সে বলল,তুমি ফোন করেছিলে? আমি বাথরুমে ছিলাম,কিছু বলবে।
হ্যাঁ বলবইতো। মেয়েটা দেখতে সুন্দর। ভালোই
বাগিয়েছো।
ওপার থেকে খুশির হাসি হেসে সে বলল,সত্যি
বলছো? হ্যাঁ গো সত্যি।
রূপম ওপার থেকে বলল কাল আমরা দুজনে ঘনিষ্ঠ হয়েছিলাম।
সে কি? কি বলছ গো? বিয়ে না করেই দুজনে
অন্তরঙ্গ মেলামেশা! মেয়েটা আপত্তি করল না?
হ্যাঁ দুজনের ইচ্ছায়।
মেয়েটার বাবা ও মা?
ও আর ওর ছেলে ফ্ল্যাটে থাকে। বাবা মা ঘোষাল পাড়ায় আলাদা বাড়িতে থাকে।
তুমি কি আবার বিয়ে করতে চাও?
ভাবছি নেক্সট ইয়ারে চেষ্টা করব।
তোমার আগের বিবাহিত জীবনের সব কথা
ও- কি জানে?
হ্যাঁ সে সব বলেছি। গোপন কিছুই নেই।
কেন দুই মহিলা তোমাকে ছেড়ে গেল সে কথা
সে জানতে চায় নি?
সবই বলেছি গো বৌদি।
আচ্ছা ওকে ওর স্বামী ডিভোর্স দিল কেন?
ওর বর ছিল খুব কামাসক্ত।
মহিলার প্রথম সন্তান প্রসবের সময় ওর ডিম্বাশয় বাদ দিতে হয়েছিল। ডক্টর বেশ কিছু দিন তাকে বিশ্রামে থাকতে বলেছিল।কিছুদিন শারিরীক মেলামেশা বন্ধ রাখতে বলেছিল কিন্তু কামনার
তাড়নায় ওর স্বামী ওকে সেই সুযোগ দিতে চায় নি।সেই থেকে অশান্তি শুরু । প্রতিদিনই প্রায় খিটিমিটি লেগে থাকত। পরে সেই অশান্তি পেকে ওঠে, ডিভোর্স দেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না।কাউকে বোলো না প্লিজ। কেউ এখনো এসব জানে না।
এই রে! এ আবার কি শোনালে! তুমি তৃপ্তি পাবে
তো?
বেশী তৃপ্তি লাগবে না।
ওর নাম কি? নাম নিরুপমা।
ওর বর কি করে?
চাকরি।
কোথায় করে?
কোথায় করে জানি না।
কতদিন ডিভোর্স হয়েছে?
সেও জানি না।
ডিভোর্স না দিয়ে পুরুষটি অন্য মহিলাকে
বিয়ে করে অন্যত্র ঘরভাড়া করে থাকে।
সে আবার কি? ডিভোর্স না দিয়ে আবার বিয়ে!
কি করে সম্ভব?
হ্যাঁ,চলছে এইভাবেই।
মেয়েটা তবে তো খোরপোষ পায় না?
না, পায় না।
চাকরিও করে না?
না,তাও করে না।
ওর তবে চলে কি করে?
ওর বাবার পয়সায়।
সে কি?
হ্যাঁ গো
ওর বাবা কি করেন?
চাকরি করতেন। এখন অবসর প্রাপ্ত। একটাই মেয়ে।
আর কেউ নেই?
হ্যাঁ ভাই আছে।
তোমার সাথে ওর বাবার কথা হয়েছে?
না হয় নি।
তবে ভাই-এর সাথে যোগাযোগ করেছো?
না প্রয়োজন মনে করি না।তাই তার সাথেও
কোন যোগাযোগ করিনি।
ভাই চাকরি করে কি না তুমি জানো?
না তাও জানি না।
তার খোঁজ তুমি করনি?
তার খোঁজ খবরও নিইনি।
কেন?
আমিও জানতে চাই না।
সব না জেনে এভাবে তুমি এগিয়ে গেলে?
হ্যাঁ এগিয়ে তো গেছি।