ত্যাগ স্বীকার
উমা আজ টিচার্স হোস্টেলে চলে এলো। জিনিসপত্র রেখে জানলা খুলে বসে প্রকৃতির দিকে তাকিয়ে নিজের অতীতে ডুবে গেল। ছোটবেলায় মা মারা গেলে বাবা আবার বিয়ে করে। সৎমা ভালোবাসে, আদর যত্নও করে। তারপর সীমা হলো। দুইবোন মায়ের আদরে বড় হয়।
কলেজে যাওয়ার পথে শান্তনু নামে একটি ছেলের সঙ্গে উমার আলাপ হয়। দুজন দুজনকে পছন্দ করলেও প্রকাশ করতে পারেনি। কলেজ পাশআউট হলে উমা শান্তনুর সাথে যাতে যোগাযোগ থাকে তাই সীমাকে পড়ানোর জন্য শান্তনুকে অনুরোধ করে।
শান্তনু আগ্ৰহী হয়ে সীমাকে পড়াতে আসে। উমা সীমাকে জানায় সে শান্তনুকে ভীষণ ভালোবাসে, বিয়ে করলে ওকেই করবে। মনে ভাবে, বোন নিশ্চয় কথাটা শান্তনুর কানে পৌঁছে দেবে।
কিন্তু না , সীমা শান্তনুকে কাছে পাওয়ার জন্য দিদির নামে বানিয়ে মিথ্যা বলে শান্তনুর মন ভাঙিয়ে নিজেই প্রেম নিবেদন করে। প্রায় প্রতিদিনই বায়না করে শান্তনুর বাইকে ঘুরে বেড়ায়।
উমা স্কুলে চাকরি পেয়েছে। বোনকে এভাবে ঘুরে বেড়াতে দেখে মা’কে সব খুলে বলে।
মা বলে, শান্তনু ওকে ভালোবাসে। সীমা বলেছে, শান্তনুর বাড়িতে গিয়ে ওদের বিয়ের কথা বলতে।
উমা অবাক। মনকে বোঝালো, শান্তনু তো ভালো ছেলে, হোক সীমার সাথে বিয়ে। বিয়ের পর সীমা পছন্দ করেনা উমা শান্তনুর সঙ্গে কথা বলুক। আচরণে বুজিয়ে দেয়।
একদিন উমা স্কুল থেকে ফিরবার পথে শান্তনুর সঙ্গে দেখা হলে শান্তনুর অনুরোধে বাইকে চড়ে ঘরে আসে। সীমা দেখে মায়ের কাছে অশান্তি করে বলে, আর কোনোদিনও এ বাড়ি আসবেনা। উমা কাছে যেতেই শুনলো, মা বলছে ওতো সৎবোন, হিংসা করতেই পারে। আমিই বলে দেবো শান্তনুর সঙ্গে কথা না বলতে।
উমা মনে ব্যথা পেলো। বাবাও গত হয়েছেন। বুঝলো এখানে তার আপন বলতে কেউ নেই। তাই সিদ্ধান্ত নিলো বাপের বাড়ি ত্যাগ করে মান নিয়ে হোষ্টেলে থাকবে।