ডুয়ার্সের পথে
দেশভ্রমণ শিক্ষার অঙ্গ। ছেলেবেলা থেকে যে বিষয়গুলোর সাথে আমরা পরিচিত হই সেই জায়গা গুলি প্রত্যক্ষ দর্শন করলে এক অনন্য অনুভূতি লাভ করি। ।সঙ্গে সেখানকার ঐতিহাসিক সামাজিক অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক প্রতিটি বিষয়ের উপর আলোকপাত করতে পারি। ভ্রমণ মানুষের নেশা। আমরা প্রতিনিয়ত ইতিহাস এবং ভূগোলে প্রচুর জায়গা সম্বন্ধে জানতে পারি। সঙ্গে অপরূপ প্রকৃতি দর্শন।০৮/০১/২০২০ পাড়ার জয়ন্ত দার ট্রাভেল এজেন্সিতে আমরা ৪২ জন ডুয়ার্স যাই। হঠাৎ করেই যাওয়ার প্ল্যান হয়। শিয়ালদা স্টেশনে সকলের সাথে একত্রিত হয়ে ট্রেনে ওঠা। নির্দিষ্ট আসনে বসার পর ট্রেন চলতে শুরু করলো, তখনো দু-একজন ছাড়া কাউকে চিনিনা। অপরিচিত মানুষ জনের সঙ্গে কয়েক দিনের যাত্রা শুরু। কিছুক্ষণ থাকার পর ধীরে ধীরে সকলের সাথে পরিচিত হলাম। আমার সিটের কাছে মালবাজারের ড্রিমা এবং ওর বাবার সাথে পরিচয় হলো। কলেজের কিছু প্রয়োজনে ওরা কলকাতা এসেছিল। হয়তো কথা বলা হতো না। ডিনার করার পর রীমাকে দেখলাম গল্পের বই নিয়ে বসে গেলো পড়তে। একটা ভালো লাগা থেকে ওর সাথে পরিচয় হলো। এখনও সে সম্পর্ক বিরাজমান। রিমা খুব সুন্দর কবিতা লেখে। ওর বাবা মালবাজারে একজন হোটেল ব্যবসায়ী। কয়েকবার বলেছিলো ওদের বাড়ি যাওয়ার জন্য। হয়তো ঠিক একদিন যাওয়া হবে। কত গল্প আমরা সবাই একসঙ্গে। এরপর আমরা যখন ডিনার করছি, এক বাউল দাদা উঠেছিলেন। কত মনের মত গান শোনালেন। সামান্য হয়তো কিছু টাকা উপহার, কিন্তু ওনার গান অনন্ত প্রেমময় হয়তো শুনতে পান। যা শুনে আমরাও কোথাও শান্তি পাই। তুমি পরিচয় হলো টুম্পা দের সঙ্গে। ওদের পরিবার আমার খুব ভালো লাগা পরিবারে পরিণত হয়েছে। তাছাড়া আরও বেশ কয়েকটি পরিবারের সাথে হাসি ঠাট্টা করতে করতে কখন পরেরদিন পৌঁছে গেলাম। জয়ন্তদা ভীষণ ভালো মানুষ। সর্বক্ষণ সকলের খেয়াল রাখছিলেন। এছাড়া কৃষাণুদের পরিবার গিয়েছিল। ওদের কথাতে মোটামুটি রাজি হয়েছিলাম। এবার পৌছালাম ডুয়ার্সে। খুব সুন্দর একটা রিসোর্ট। যেখানে সাঁওতালি নৃত্য শিক্ কাবাব সমস্ত কিছুর ব্যবস্থা ছিল। আমরা খুব আনন্দ করছিলাম। কয়েকটা দিন ঝালং বিন্দু বহু জায়গায় গাড়ি করে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ছুটে চলেছি। এখানে কিছু স্থানীয় মানুষের সাথে পরিচয়। বাচ্চাটা ঘুরে বেড়াচ্ছে। কোন চিন্তা নেই। জঙ্গল সাফারিতে হইহই করে ঘুরে আসা কয়েক ঘণ্টা। মনাষ্ট্রীতে যাওয়া। জলঢাকা বিদ্যুৎ কেন্দ্র দেখা। অপূর্ব জায়গায় ঘুরে আসা। তবে জঙ্গল সাফারিতে কোন প্রাণী দেখতে পাইনি। চারিদিকে জঙ্গল কাটা। কেবলমাত্র দুটো ময়ূর আর একটা হরিণ চোখে পড়েছিল। রান্নাঘরে গরম গরম রান্না করা হতো। ক্যামেলিয়া ফুলে চারিদিক ঢাকা। অপূর্ব সুন্দর ডুয়ার্স। ওদের কাছে গল্প শুনলাম, একবার হাতির পাল এসে সবকিছু নষ্ট করে দিয়েছিল। তবে ডুয়ার্সের সৌন্দর্য অপরূপ। বেড়ানোর পক্ষে মনোরম স্থান।