টেরাকোটার দেবদেউল কালাতীত মৃৎশিল্প
বাঙালী স্হাপত্য শৈলীর অসাধারণ নিদর্শন বিষ্ণু পুরের টেরাকোটার দেব দেউল গুলি। সপ্তদশও অষ্টাদশ শতক জুড়ে এই মন্দির গুলি তৈরী হয়ে ছিল মল্লরাজ দের পৃষ্ঠপোষকতায় ॥ শিখর…চালা…ও রত্ন এই তিন টি রীতি ই বাংলার মন্দিরের প্রধান নির্ভর॥ গর্ভগৃহের উপর আধারিত রেখ মন্দিরের শৈলী টিই বাংলা গ্রহন করেছে!
চালা মন্দিরে তিন ধরনে র রীতি…চারচালা…জোড়বাংলা…ও আটচালা …..! এদের ওপর নি র্ভর করে বাংলার নিজস্ব স্টাইল তৈরী হয়েছে।
চালারীতির মন্দিরের ওপর শিখরমন্দিরের শীর্ষ টুকু এক বা একাধিক বসিয়ে রত্নমন্দিরের প্রচলন হ য়েছে বিষ্ণু পুরেই॥রত্নে র সংখ্যা অনুযায়ী এক থেকে পঁচিশের মধ্যে চূড়া র হেরফের হতে পারে॥
”শ্যামরায় মন্দির ” টি পঞ্চরত্ন মন্দির …১৬৪৩এ তৈরী হয়!১৬৫৬. প্রথম একরত্ন মন্দির …..”কালাচাঁ দ” তৈরী হয়…..কি অবাক করা ঘটনা …..যে তের ব ছর আগেই পঞ্চ রত্নমন্দির তৈরী হ য়ে গেছে! এই অনামী শিল্পীরা মসজিদের গম্বুজ ওচারপাশের চারটি মিনা রের মতই পঞ্চ চূড়া র মন্দির ! শুরু হয় রত্ন মন্দিরের জয়যাত্রা॥ প্রথম শ্যামরায় মন্দিরের দেওয়ালেই প্রথম বৈষ্ণ বীয় মধুররসের মোটিফ দেখা যায় !১৬৫৫তে রঘুনাথ সিংহের উদ্যগে তৈরী হয় ”কৃষ্ণ রায়’ ‘ মন্দির যা লোকমুখে ”জোড়বাংলা মন্দির ‘ ‘ না মে পরিচিত। এখান কার প্রথম এক্ রত্ন মন্দির হল ”কালাচাঁদ”মন্দির যা মাকড়া পাথরে তৈরী॥
বিশুদ্ধ টেরাকোটা ছাড়া ও আরও তিন ধরনে র মন্দির এখানে দেখা যায় …..পোড়া মাটির মন্দিরে পংখ
মাকড়া পাথরেরওপরেপংখ আর
ফুলপাথর ॥
এই মন্দির গুলির অলংকরনের জন্য যে মিহিবালি ও শামুকের খোলপোড়া বা কলি চুন তাই পংখ না মে পরিচিত॥ পংখের প্রলেপ রীতি ও প্রাচীন অলংকরন পদ্ধতি॥ পরবর্তী কালের লাল জী ….মদন মোহন,রাধেশ্যাম,রাধামাধব ….সব মন্দির ই একরত্ন মন্দির ॥
১৬০০ সালে বিষ্ণু পুরের প্রথম উল্লেখযোগ্য স্হাপত্য….”রাসমঞ্চ ” তৈরী হয় মল্লরাজ বীর হাম্বিরের উদ্যগে। এর মুল আকর্ষণ হল অজস্র খিলানে র অসাধারণ ব্যবহার। গৌড়ে র বড় সোনা মসজিদের মতই মূল ইমারতের কাঠামোর মাথায় সার সার ছোট গম্বুজের মতই রাসমঞ্চের মাথায় ছোট চার চালা বা দোচালার বিন্যাস॥ মন্দি রের গায়ে ফুলেল লতার অলংকরন ॥
মাটির মত অতি সাধারণ উপাদান কিংবা সহজলভ্য মাকড়া পাথরের নি র্মাণ শৈলী সেই অনামী শিল্পী দের অসামান্য শিল্পশৈলী ও দক্ষতা কে প্রকাশ করছে॥