জন্মভূমি মাতৃভূমি (Janmabhumi Matribhumi) : 03
আজ বিকেলে ব্যালে স্কুল আছে। সেটা বাঙ্ক করতে হচ্ছে! অ্যারাবেস্কে পৌঁছে গেছি, খুব মজা! মাদাম বলে আমার বালোঁ না কি খুব ভালো। অর্থাৎ বেশ হালকা ভাবে অনায়াসে হাত পা ছড়াতে পারি। এটা-ওটা বাঙ্ক করা আমার হ্যাবিট হয়ে যাচ্ছে, বলছিল ব্যাথশেবা। লট্স্ অফ্ বিগ-সিসটারিং করে রিয়্যালি! আসলে, আই লাভ টু টেক ইট ইজি। সব সময় রোলার স্কেটে চড়ে আছি, গোয়িং প্লেসেজ—এইটা আমার আসে না। আজ সকালে বিগ ডিস্যাপয়েণ্টেমেণ্ট, প্রথমে দেখি বারে! মেপল গাছে চেরি ব্লস্ম্ এসেছে, কি সুন্দর! ফ্রস্ট! লাস্ট থার্সডে রিসেস আওয়ারে স্টীভ, আমি আর ব্যাথশেবা স্নোবলিং করেছিলাম। আজ বেরিয়ে দেখি যাঃ, সব বরফ গলে গেছে। গত বছর এ সময়ে স্প্রিং এসে গিয়েছিল। তানিদের বাড়ি গিয়ে দেখি বাগানটা ওভারনাইট গজার্স হয়ে গেছে। ক্যামেলিয়া, কারনেশন, পিওনি, রেড ক্লোভার। বরফ সরতেই সব টুক টুক করে মাথা তুলে ফেলেছে। আমাদের হিউসটনের বাগানে বেশ বড় বড় গাছ ছিল—গার্ডেনিয়া, ওলিয়েণ্ডার। মা বলত, গন্ধরাজ, করবী। ব্লু বনেট ফুটে নীল হয়ে থাকত বাগানের ডান দিকটা। আমি দাদা দুজনে বাগানে মাটি কোপাতাম, জল দিতাম, ঘাস ছাঁটতাম, লনে বসা হত বসন্তকালে, গরমকালে। বাবা খেত রাম উইথ কোক, ক্র্যাকারের সঙ্গে, আমাদের হনিডিউ কি ক্যান্টালুপ হাফ করে দিত। এখানে বাগান নেই বলে স্প্রিং বা সামার পুরোপুরি এনজয় করা যায় না। আমরা সেন্ট্রাল পার্কে যাই চেরি-ব্লস্ম্ দেখতে। মা বলেছে আজ আমার বন্ধুদের ডাকবে না। কি রকম মিস্টিরিয়াস গলায় বলল মা। কাকে কাকে ডাকছে আমি জিজ্ঞেস করিনি। দীপালি-মাসি জ্যোতিকাকু তো আসবেই। তানি, বুলেট, অ্যাটম। তানি পঞ্চাশ, বুলেট অ্যাটম দুজনে দু’শ। দীপঙ্কর কাকুরাও আসবে। প্রিয়াঙ্কা মার হট ফেভারিট। শশাঙ্ক জেঠু না এলে তো পার্টি জমবেই না। পারেখদের, মেহরাদের বলেছে কিনা সেটা মা’র ব্যাপার। গ্রোন-আপদের পার্টি যখন। ওই মিস্টিরিয়াস গলাটার জন্য ভাবছি কিছু একটা থ্রিল মা সার্ভ করবে নিশ্চয়। ড্যাড টু হ্যাজ সামথিং আপ হিজ স্লীভ। ভাঙছে না, খালি অন্যমনস্ক হয়ে আছে। অক্টোবরে ব্যাথশেবার জন্মদিনের পার্টিতে ওরা ড্রিঙ্ক করেছিল। বেশিরভাগই আউট। আমরা প্রচণ্ড নেচেছিলাম। সেটা অবশ্য ড্রিঙ্ক করবার আগে। না হলে মুশকিল ছিল। ব্যাথশেবাদের পলিশড্ পার্কে ফ্লোরের ওপর সবগুলো ঠ্যাং ভাঙত। আমি কোন কথা মা-বাবাকে লুকোই না। এসে বলে দিই। সেদিন যা মজা হয়েছিল বলার নয়। তবে স্টীভ আমাকে বিশ্রীভাবে চুমু খেতে আমার গা বমি করেছিল। ভীষণ ভীষণ। স্কুল ড্যান্সে তো ওরা এরকম করেই। আমি যাই না। এটা, মানে স্টীভের এই ব্যাপারটা আমি মা-বাবাকে বলে দিইনি। এটা আমি নিজেই ট্যাকল করতে পারব। কাউকে আঘাত দিতে আমার খারাপ লাগে, স্টীভকে দিতে হল, উপায় নেই। বললাম, ‘স্টীভ, তুমি ব্যাড ব্রেথের অ্যাডটা দেখেছো?’ ও কিন্তু আঘাত পেল না। বলল, ‘সরি, আমি রোজ ব্রাশ করি, হানি, তবে আজকে চেন স্মোক করেছি তো, তাইতে হয়ত টোব্যাকোর স্মেল এসে থাকবে। ওয়াজন’ট ইট ম্যাস্কুলিন?’ কি পাকা! অ্যান্ড্রু জ্যাকসন বলে সিনিয়র ছেলেটা আমাদের জেমির সঙ্গে স্টেডি যাচ্ছে। জেসির বাড়ির কাছে গাড়ি নিয়ে এসে বসে থাকে রাত ন’টার পর। রোজ। জেসি আর ও ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাড়িতে বসে কী এতো বলে! হাসাহাসি করছিলাম আমরা। ব্যাথশেবা গম্ভীর হয়ে বলল, ‘ওরা কী করছে সেটা ওদের ব্যাপার। উই শুডন’ট ইনটারফিয়ার।’ আমি আর আবলাফিয়া বললাম, ‘আমাদের মা বাবা আমাদের মেরে ফেলবে।’ ব্যাথশেবা অবাক হয়ে বলল, ‘বাবা-মায়ের এ ব্যাপারে বলার কী আছে? ডোন্ট দে লিভ দেয়ার ওন লাইফ!’
হার্ড ড্রিঙ্কস্-এর কথা বলতে বাবা খুব পার্টাব্ড্ হয়ে পড়ল। আমি বুঝতে পারছিলাম। মা বলল, ‘তুমি খেয়েছ! আরাত্রিকা?’ রেগে গেলে মা আমাকে মণি বলে না, বলল, ‘দেখি হাঁ করো, নিঃশ্বাস ছাড়ো!’ মা এমন সুইট না! সুইটি পাই। আমি বললাম, ‘আমি একটা এত বড় মেয়ে যদি ড্রিঙ্ক করে সেটাকে তোমাদের থেকে লুকোতে চাই, তাহলে নিশ্চয়ই পেরে যাবো।’ বাবাকে সাক্ষী মানতে গেলাম, দেখি কি বাবা নেই। নিজের ঘরে চলে গেছে। মানে সাংঘাতিক রাগ এসেছে। এমন সময় দাদার ফোন এলো, মা বাবা দুজনেই ব্যস্ত হয়ে পড়ল, তাইতেই তখনকার মতো ব্যাপারটা চাপা পড়ে গেল। কিন্তু বাবা যে মোটেই ভোলবার মানুষ নয়, সেটা বোঝা গেল রাত্রে। ডিনারের পর বাবা বলল বাবার ঘরে যেতে, মাকে বলল, ‘আজ তোমাকে হেল্প করছে না মণি, অসুবিধে হবে না তো?’ মা বলল, ‘ইউ গো অ্যাহেড।’ হাসছে মা। দুজনে ষড় করেছে। বাবা খুব সফ্ট-স্পোকন। অনেকক্ষণ খালি স্মোক করেই যেতে লাগল, শেষে বলল, ‘আচ্ছা মণি, তুই এটা অ্যাপ্রুভ করিস?’
‘কোনটা বাবা?’ আমি ‘কাটার ওন্ট মেল্ট ইন হিজ মাউথ।’ বাবা আবার স্মোক করছে, করেই যাচ্ছে। শেষকালে আমার খুব দুঃখ হল সুইট ড্যাডটার জন্যে, বললাম, ‘তুমি কেন অত নাভার্স হয়ে যাচ্ছো বাবা? আমি ড্রিঙ্ক করিনি, করবও না।’
‘কিন্তু একটা কথা। অনেক সময় দলে পড়েও তো তোরা অনেক কিছু করে ফেলিস!’
ঠিক এই কথাটা আমি বাবাকে বুঝিয়ে পারি না। বাবা আমাকে স্যাডি হকিন্স ড্যান্সে যেতে দিল না, বলল, ‘তুই যেতে চাস? সিরিয়াসলি?’ স্যাডি হকিন্সে মেয়েরাই পার্টনার চুজ করে। বাবা বলল, ‘ধর তুই যে ছেলেটাকে পছন্দ করলি, সে যদি তোকে রিফিউজ করে? এসব ফর্ম্যাল ব্যাপারে সাদারা সাদাদের প্রেফার করে, কালোরা কালোদের, তাছাড়া মনে কর ছেলেটা তোর সঙ্গে নাচলও, এদিকে অন্য যে সাদা মেয়েটার তাকে পছন্দ সে গেল তোর ওপর চটে। প্রতিদিনকার স্কুল-লাইফে তার রিফ্লেকশন পড়বেই। তুই অপমানিত হোস বা শুধু শুধু মুশকিলে পড়িস আমি চাই না।’
কথাটা অবশ্য ভাববার। নিউ ইয়র্ক সেন্ট্রালের ছেলেমেয়েগুলো দারুণ স্নব। এগিয়ে এসে আলাপ জমায় না। আমার একটা ছোট্ট সেট হয়েছে অবশ্য। কিন্তু বেশিরভাগ ছেলেমেয়ের সঙ্গে কোনও টার্মস নেই। আগে থেকে স্টীভকে বলে কয়ে অবশ্য যাওয়া যেত। কিন্তু আমি ডাকবার আগেই যদি কেউ স্টীভকে ডেকে নিত! বাবার কথায় আমার কনফিডেন্স নষ্ট হয়ে গেল। আমি তো এমনিতে একটা স্কুল বলেও যাই না। ক্রিসমাস বল, প্ল্যানটেশন বল, সব বাদ। হিউসটনে ড্রামা স্টেজ করল আমাদের ওয়েস্টবেরি হাই। আমাকে ওরা কাউণ্টেস ড্র্যাকুলার রোল দিয়েছিল। বাবা কিছুতেই করতে দিল না। স্কুল এক্সকার্সন গেল ফ্লোরিডায় ডিজনিওয়ার্ল্ড দেখতে। বাবা বলল, ‘আমি কি তোমায় ডিজনিল্যান্ড দেখাইনি আরাত্রিকা!’ আগে আগে কারণটা আমি বুঝতাম না। এখন বুঝি, বাবা আমাকে ছেলেদের কনট্যাক্ট-এ আসতে দিতে চায় না। কিন্তু স্কুলে সবাই যে রকম চলছে আমি যদি সেই রকম না চলি তো ওরা আমাকে আরোই কাট করবে না? স্যাডি হকিন্সে যাইনি বলে অনেকেই আমায় জিজ্ঞেস করেছিল। পরে আমার মনে হয়েছিল বাবার ভয়টা একেবারে বেসলেস। গ্রুপ-অ্যাকটিভিটিতে যোগ না দেবার অসুবিধের কথা বলতে বলল, ‘তোরা এখন সবে জীবন আরম্ভ করেছিস মণি, যা কিছু দেখছিস সবই তো তোদের কাছে নতুন, একসাইটিং। এখনই যদি তোরা হার্ড ড্রিঙ্কস-এর কৃত্রিম উত্তেজনায় অভ্যস্ত হয়ে পড়িস তো পরে কী করবি? বন্ধুদের বোঝাতে পারিস না?’
বন্ধুদের বোঝানো? মানে সার্মন দেওয়া? ওরে বাবা! প্রথমত ওদের ‘ব্যক্তিস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ’ করা হবে। দ্বিতীয়ত ওরা বলবে, ‘জানো তো বড়রা নিজেরা সবরকম মজা করবে। আমাদের বেলাতেই খালি ট্যাবু।’ ওরা খুব খারাপ খারাপ কথা বলে। সেইজন্যেই স্টীভকে আমার আজকাল একদম ভালো লাগে না। ব্যাথশেবার সঙ্গে সেদিন কথা হচ্ছিল ওকে বাবার কথাগুলো বললাম। ও বলল, ‘আঙ্কল কিন্তু ঠিকই বলেছেন। বীয়িং গ্রোন আপ ইজ নো ইজি জব। দেখো না আমার কাজিন জ্যাকি অ্যাট দা এজ অফ সেভেনটিন একটা বেবির জন্ম দিয়ে কী রকম পস্তাচ্ছে। ওর বর স্যাম তো দিব্যি মজা করে এ কোর্স ও কোর্স পড়ে চলেছে। এদিকে ওকে চাকরি করতে হচ্ছে, আবার বাচ্চাটাকেও দেখতে হয়, ওর মুখে রিঙ্কল্স্ এসে গেছে। বেচারি! আই ডোণ্ট ওয়াণ্ট টু বি গ্রোন আপ।’
ব্যাথশেবার কাছে নাকি পাঙ্করা অ্যাপ্রোচ করেছিল। একদিন আমায় বলছিল, ‘পাঙ্ক হয়ে গেলে কেমন হয়?’
আমি বললাম, ‘তুমি এরকম উল্টোপাল্টা চিন্তা করছ কেন?’ ব্রোক্ন্ হোমের ছেলেমেয়েরা এইরকম চিন্তা করে ওর কি প্রবলেম! ও তো জু। ওর বাবা মা খুব কনজারভেটিভ।
আসলে ও একটু বোর্ড্ হয়ে যায় চট করে। মুডিও আছে। যখন ক্লাস অফিসার ইলেকটেড হল কি খুশি! কিন্তু স্কুল অর্কেস্ট্রায় ওকে নিল না, ওর চেয়ে ভালো ভায়োলিনিস্ট আমাদের ক্লাসেই রয়েছে তো! ও ড্যাম্প হয়ে গেল। যাই বলুক আর তাই বলুক, ও গ্রোন আপই হয়ে যেতে চায় চট করে। গ্রোন-আপ হয়ে যাওয়া ব্যাপারটা যে কি! চাকরি করা, নিজে নিজে জিনিস কেনাকাটা করা, একা একা বেরোনো, বেড়ানো, বিয়ে-করা, বাচ্চা হওয়া, এ ছাড়াও বোধহয় কিছু আছে। আমরা ঠিক ধরতে পারি না ব্যাপারটা। বাবাকে জিজ্ঞেস করব। সব কথার উত্তর বাবার কাছে আছে। মা-ও জানে, কিন্তু বলে না। ড্যাড ইজ রিয়্যাল গেম। হি হ্যাজ অ্যান আনসার ফর এভরিথিং। আজ জন্মদিনে আমার বন্ধুদের ডাকা হয়নি বলে আমি একরকম খুশিই হয়েছি। বেশিরভাগই রাউডিজ। বাড়িটা যেন জিম। বেসবল খেলা হচ্ছে! এমনি চেঁচাবে, হুল্লোড় করবে। সাম হাউ আই ফীল অকওয়ার্ড বিফোর ড্যাড। তারপর ওরা এক্সপেক্ট করবে ওদের বাড়িতে বার্থডে পার্টির যেমন হয়, আমাদেরটাও তেমনি হবে। বড়রা স্রেফ বাড়িটা ছেড়ে দিয়ে চলে যাবে। আমাদের বাড়ির অ্যাটমসফিয়ার আলাদা ওরা জানে, কেউ কেউ অ্যাপ্রিসিয়েটও করে, কিন্তু ওয়ান্স দে আর ক্যারেড অ্যাওয়ে দেয়ার্স নো নোয়িং∙∙∙। এই টানাটানিতে আমার আনন্দটা মাঝখান থেকে মাটি হয়ে যাবে। তারপর আর একটা কথা। দাদা তো নিশ্চয়ই আসবে। দাদা হ্যাজ পুওর ওপিনিয়ন অ্যাবাউট মাই প্যাল্স্। আর দাদাকে আমি ভীষণ অ্যাডমায়ার করি। দাদার যদি খারাপ লাগে ওদের তো আমি ভীষণ হার্ট হবো। বন্ধুদের বলেছি পরে একদিন হবে। ওরা আ বিট ডিস্যাপয়েণ্টেড। সে কিছু না। নো প্রবলেম। পরে সব ঠিক হয়ে যাবে। মায়ের হাতের রসগোল্লা আর সামোসা খেলেই ওদের সব অভিমান জল হয়ে যাবে। রসগোল্লার পোকা একেবারে। তাছাড়া এবার থেকে আমি ঠিক করেছি সেট একটু পাল্টাবো। স্টীভ, রকহার্ট, ইভন ব্যাথশেবা সামহাউ আমাকে আজকাল অ্যাপীল করে না। আমি জানি এটা দাদার ইনফ্লুয়েন্স। গতবার যখন দাদা এসেছিল তখন ব্যাথশেবা ডে স্পেন্ড করেছিল আমাদের বাড়ি। চলে যাবার পর বলল, ‘হু’জ দ্যাট জাঙ্ক?’ প্রথমটা আমার খুব রাগ হয়ে গিয়েছিল। পরে যতবা ব্যাথশেবার সঙ্গে দেখা হয় ব্যাথশেবা অ্যান্ড হার ট্রিঙ্কেটস, কানে ঝুলছে, গলায় ঝুলছে, চুলে ঝুলছে, দাদার কথাটা মনে পড়ে যায় ‘হু’জ দ্যাট জাঙ্ক?’ স্টীভ আর রকহার্টকে তো ও স্ট্যান্ড করতেই পারে না। সোজাসুজিই বলে, ‘তোর এই প্লে-বয় বন্ধুগুলোকে ছাড় তো মণি! ডোণ্ট য়ু এভার মিট এনিবডি ওয়ার্থ মিটিং!’ প্রথমটা রাগলেও দাদার কথাগুলো আমার মাথার মধ্যে ঘোরাফেরা করতে থাকে। ইনফ্লুয়েন্সড হয়ে যাই। সব বাজে, সিলি লাগতে থাকে। কী করব! দাদাটা এমন! এইট্টিতে স্কুলে স্প্রিং-ক্লীনিকের সময় মিশেল, স্যারা, এমিল, যোয়ান এদের সঙ্গে খুব আলাপ হয়ে গিয়েছিল। আমি ওদের কালটিভেট করিনি। স্যারাকে খুব ডাউডি মনে হত। এখন দেখি ও আসলে ভীষণ ইনটেলিজেণ্ট। কোয়াণ্টাম থিয়োরির ওপর একটা বই পড়ছিল একদিন। অ্যাডভান্সড ম্যাথস্ নিয়েছে। সবগুলোই প্রায় জু ওরা। নিউইয়র্ক সেন্ট্রালের বেস্ট স্টুডেন্টস। টেম্পারামেণ্ট আলাদা। ফিজিক্যাল এডুকেশন যেটুকু করতে হয় করে। আমাদের মতো জিমে গিয়ে হুড়োহুড়ি করে না। আমারও অবশ্য খেলা অত আসে না। টীমে চান্স পাওয়া তো দূরের কথা। কিন্তু চীয়ার্স তো দিতে পারি! ব্যাথশেবা, লরা, আমি আর নাওমি মিলে চীয়ারলীডার্স গ্রুপ তৈরি করেছি। যখনই কোনও টুর্নামেন্ট কি অ্যাথলীটস্ মীট হয় আমরা ফ্যান্সি ড্রেস পরে চীয়ার্স দিই। চীয়ারিং, লিয়ারিং, লীপিং, লিফটিং, গ্র্যাবিং, গ্রিপিং, ফ্লাইং, ফ্লিঙ্গিং সিঙিং, গ্লীমিং, যা মজা হয় না! মাদামের কাছে শেখা পিরুয়েৎ আতিতিউদ, কাব্রিওল গুলো ওই সময়েই কাজে লাগে আমার। নিউ ইয়র্ক ব্যালে গ্রুপ-এ কি আর বাবা কোনদিন নাচতে দেবে?