Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।

ছেলেকে কোলে তুলে নিয়ে সুমেধা হেসে বলে এই তো আমি এসেছি তোমার জন্য,জোজো: সেতো তুমি রোজ আসো, আমার জন্য কি এনেছ? সুমেধা ব্যাগ থেকে একটা ক্যাডবেরি বের করে দেয়। টিভিতে তখন গান ভেসে আসছে আয়রে ছুটে আয়, পুজোর গন্ধ এসেছে….
ফোনটা বেজে ওঠে, পরিচিত গম্ভীর কন্ঠ ভালো আছো? তোমায় আজ দেখলাম ওলা থেকে নেমে অফিসে যেতে, মনে হলো অনেক জন্মের অপেক্ষার অবসান হলো, ডাকতে গিয়ে থেমে গেলাম, মনে হলো যে থাপ্পড় তুমি সেদিন দাওনি, সেটা যদি আজ কপালে জোটে,তাই থেমে রইলাম, মনে হচ্ছিল সময়টাকে যদি থামিয়ে রাখতে পারতাম তবে ঐ মুহূর্ত চিরস্থায়ী হয়ে যেত এই তুচ্ছ জীবনটাতে। এখনো পাঁচ ছয় বছর আগের ঘটনা যেন মনে হয় এইসবে ঘটেছে..…সুমেধার বুঝতে অসুবিধা হয় না খুব চেনা কন্ঠস্বর কার, কিন্তু ভীষণ অবাক হয় ভেবে তদ্ভব এখানে কি ভাবে? নিজের কয়েকবছর আগের অতীত যেন সামনে এসে দাঁড়িয়ে আবার, কিন্তু সত্যি কি তদ্ভব , কিন্তু কি প্রয়োজনে? নিজেকে সামলে সুমেধা বলে কে বলছেন আপনি? একজন ভদ্রমহিলার সঙ্গে এইভাবে কথা বলতে লজ্জা করে না… অপর প্রান্তে উত্তর আসে, প্রতিদিন, প্রতিমুহূর্তে আমি লজ্জিত তোমার কাছে, নিজের কাছে নিজে ছোটো হয়ে গেছি… সুমেধার ফোনে দেবাংশুর ফোন আসে, আগের কলটা কেটে দেয়। দেবাংশু বলে ছেলে কি করছে?
সুমেধা : খেলছে
দেবাংশু: আমার ফিরতে নেক্সট উইক হবে, মায়ের শ্বাসকষ্ট বেড়েছে, একটু সামলে নিও,ডাক্তারের অ্যাপয়ন্টমেন্ট করা আছে রবিবার,দেখিয়ে নিও। তোমার কষ্ট হচ্ছে বুঝতে পারছি কিন্তু আমি হেল্পলেস ।
সুমেধা: তুমি আমার কষ্টের ব্যাপারে চিরকাল হেল্পলেস, নতুন কিছু নয়। দেবাংশু:আমায় এখন একবার ল্যাপটপে বসতে হবে, মিটিং আছে, এবার ভাবছি কম্পানি চেঞ্জ করবো।
সুমেধা (দীর্ঘশ্বাস ফেলে) : এই কথাটা আমি আগের বছর থেকে প্রায় পঞ্চাশ বার শুনেছি। দেবাংশু: রাখছি এখন। ফোনটা কেটে যায়। সুমেধা ফোনটা টেবিলে রেখে ফ্রেশ হতে বাথরুমে যআয়। শাওয়ারের জল যখন শরীর ছুঁয়ে যায় তখন ক্লান্ত শরীরে যেন প্রাণ ফিরে পায়, কিন্তু চোখ বন্ধ করতেই একটা মুখ যেন স্পষ্ট হয়ে ওঠে, সুমেধা অল্প চিৎকার করে বলে আমি ভাবতে চাইনা, কিছুতেই তোমায় ভাবতে চাইছি না। বাথরুমের দরজায় জোজো ধাক্কা দিয়ে বলে কিছু বলছো মাম্মা?জানো গোমতী আন্টি আজ পোলাও, চিকেন কারি করেছে, তুমি তাড়াতাড়ি বেরিয়ে এসো, আমি ডাইনিং রুমে যাচ্ছি। সুমেধা নিজেকে সামলে নিয়ে বলে এক্ষুনি আসছি বাবা, তুমি ঠাকুমণিকে ডাকো,আজ আমরা সবাই একসাথে ডিনার করবো। জোজো ঠাকুমণি ঠাকুমণি বলতে বলতে নিচে নেমে যায়। বাথরুম থেকে বেরিয়ে টাওয়েল হাতে বারান্দায় এসে দাঁড়ায় সুমেধা, স্নিগ্ধ জ্যোৎস্না ছড়িয়ে পড়েছে বারান্দায়, আমবাগানের ফাঁক দিয়ে চাঁদটা যেন হাসতে হাসতে বলছে, সত্যি বলোতো তুমি কাউকে ভালোবেসেছ কখনো, পুরানো প্রেমিক, স্বামী, সংসারে কে কে আছে তোমার মনে? তুমি শুধু চেয়েছ সামাজিক প্রতিষ্ঠা, নিজস্ব স্বাধীন স্বত্তা।আর এখন ছেলের সুখ। ঝিলমিল তারারা যেন খিলখিল করে হেসে বললো তবে কি জন্য এই ব্যাকুলতা, অস্থিরতা? জোজো নীচে থেকে চেঁচিয়ে উঠে মা খেতে দাও সুমেধা: আসছি বাবা,এই যে এক্ষুনি।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress