চাহিদা পূরণ – পর্ব ২৪
বাড়ি এবং অফিসের মধ্যে সামঞ্জস্য রেখে চলতে অভ্যস্ত সুমেধা, দেবাংশু না থাকলে একটু মন খারাপ হলেও ব্যস্ততায় সময় এগিয়ে চলে। রোহনদের বাড়ির ঘটনার পর থেকে শাশুড়িমার মধ্যে কিছু পরিবর্তন এসেছে,সব কাজে আলোচনা করতে পছন্দ করে। দুদিন রিক্তা আসে নি, কম্পানির কাজে বাইরে। অফিসে কাজ করছে সুমেধা,বস এসে দাঁড়ান, সুমেধা অপ্রস্তুত হয়ে উঠে দাঁড়িয়ে বলে, আমাকে ডাকতে পারতেন স্যার, আপনি এলেন কেন? বস(হাসি মুখে): সবসময় একা একা কাজ করতে কি ভালো লাগে, তাই এখানে এলাম, তোমরা কাজ করছো দেখে ভালো লাগলো। একটা ভালো খবর আছে, তুমি, রিক্তা,সুবল তিনজনের সহযোগিতায় যে প্রোজেক্টের কাজ আমরা এগিয়েছি তা ক্লায়েন্টদের খুব পছন্দ হয়েছে, একটু আস্তে অবশ্য তোমার বন্ধু ছিল বলে হয়তো কিছুটা সুবিধা আমরা পেয়েছি ওদের কম্পানির থেকে, thanks a lot। হঠাৎ যেন তটস্থ হয়ে যায় সুমেধা, তদ্ভবের সঙ্গে হোটেলের মুহূর্ত মনে পড়ে যায়, কিন্তু নিজেকে সামলে নিয়ে বলে, আমরা সবাই একসাথে কাজ করেছি,তাই ভালো হয়েছে কাজটা। সুবল দা এগিয়ে এসে বলে যাক আপনার টেনশন কমলো।বস হেসে বলেন ঠিক বলেছো, হঠাৎ ফোন আসায় নিজের কেবিনে ফিরে যান। সুবল দাকে সুমেধা বলে রিক্তা আজকে বোধহয় সল্টলেকে ভিসিট করতে গেছে। সুবল দা:আমায় বলছো কেন,সেতো কোনো কথাই আমাকে বলবার প্রয়োজন মনে করে না, সকালে অফিসে পৌঁছে ফোন করেছিলাম, ধরে নি,পরে ম্যাসেজ করেছে মিটিং এ আছে,যেন ফোন না করি। চাকরি করতে এসেছি, বাড়িতে মা বাবার দায়িত্ব, তাই আর কোনো কিছু ভাবতে চাই না। সুমেধা চুপ করে থাকে, কিছু বলতে পারে না,সুবল দা ভালো মানুষ, রিক্তা যেন দিন দিন উগ্র স্বভাবের হয়ে উঠছে, চড়া মেকআপ নিয়ে অফিসে আসে, ছেলেদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে অদ্ভুত আনন্দ পায়, তবে সুবল দার প্রতি একটা দুর্বলতা রিক্তার আছে, দুজনকে একসাথে মানায় বেশ, কিন্তু দুজনের দূরত্ব যেন বেড়ে যাচ্ছে… মনে মনে দীর্ঘশ্বাস ফেলে সুমেধা কাজ এগোতে থাকে।সেদিন বাড়িতে ফেরার পথে নেট অন করে দেখে তদ্ভবের ম্যাসেজ,আজ তোকে খুব কাছ থেকে দেখতে পেলাম কিন্তু সামনে আসার সাহস নেই , ভালো থাকিস, রবিবার ফিরে যাচ্ছি, জীবনের এই ক্ষত সময়ে বিলীন হবে হয়তো, কম্পানির রিপোর্ট আমি তৈরি করে কাল পাঠিয়েছি, বসের থেকে জেনেছিস হয়তো,যতটা খারাপ ভাবিস, ততটা খারাপ নয় আমি,যে ভালোবাসা আমি রক্ষা করতে পারি নি, এখন আফশোস করা ছাড়া উপায় নেই, ভালো থাকিস। সুমেধা কোনো উত্তর দেয় না, নেট অফ করে দেয়।