চাহিদা পূরণ – পর্ব ১৮
একটু ভোরে উঠে পড়ে সুমেধা, দেবাংশুকে ডাকতে গিয়ে মনে হয়, থাক একটু পরে ডাকবো, এতটা জার্নি করে ফিরেছে। নিচে নেমে দরজা খুলে বাগানের গাছে জল দেয়, হিমেল হাওয়ায় শীতের অনুভূতি বেশ ভালো আবেশ ঘটায় যেন মনেপ্রাণে , আশেপাশে ফুলের সুবাস ভেসে আসছে, হঠাৎ মনে হয় কাল থেকে নেট অফ করে রেখেছে, অফিস থেকে কোনো ম্যাসেজ যদি আসে, তদ্ভবের কথা মনে হতেই মনটা ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে,পর মুহূর্তে মনে হয় অকারণ দুশ্চিন্তা করছে, হঠাৎ মায়ের কথা মনে পড়ে, জীবনটা সুন্দর যদি তুমি নিজে সুন্দরভাবে বাঁচতে চাও, অন্যের দোষ ত্রুটি ক্ষমা করে এগিয়ে যেতে হবে । আজ তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে বেরিয়ে পড়তে হবে। কিছুটা সময় বাগানে গাছের পরিচর্যা করে বাথরুমে স্নান সেরে নিয়ে চা করে দেবাংশু, জোজোকে ডাকে, জোজোকে স্কুলের জন্য রেডি করে দেয় সুমেধা, দেবাংশু বলে আমি জোজোকে স্কুলবাসে দিয়ে আসছি। দেবাংশু জোজোকে নিয়ে বেরোলে নেট অন করে সুমেধা,তদ্ভব এর ম্যাসেজ,আমায় ক্ষমা করিস,আর কোনোদিন বিরক্ত করবো না। সুমেধা কোনো রিপ্লাই দেয় না। ব্রেকফাস্ট সেরে দেবাংশু, সুমেধা রওনা দেয়। গাড়িতে দেবাংশুর পিসি ফোন করে তোরা নার্সিংহোমে আয়, অবস্থা সংকটজনক, রোহন ফিরছে। নার্সিংহোমে পৌঁছতে ঘন্টা দুয়েক লাগে। পিসি দেবাংশুকে বলে কাল রাতে খুব বাড়াবাড়ি হলে, আমরা নার্সিংহোমে চলে এসেছি। দেবাংশু: তুমি আমাদের একবার জানাতে পারতে, আমি চলে আসতাম। পিসি: তুই অতটা জার্নি করে ফিরেছিস,এই বয়সে স্ট্রৌক সামলে উঠতে হয়তো পারবেন না, যাবতীয় চেষ্টা ডাক্তারবাবু করে চলেছেন, দেখা যাক। একটু পরে রোহনের হবু স্ত্রী হেনা এসে পৌঁছালে, পিসি আলাপ করিয়ে দেয় সুমেধার সঙ্গে। কথায় কথায় সুমেধা জানতে পারে হেনা অফিস থেকে ছুটি নিয়ে এসেছে , বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান। বেশ প্রাণচঞ্চল মেয়েটির আচরণ ভালো লাগে সুমেধার।যদিও হেনা সুমেধাকে বলে বাবা মা দুশ্চিন্তা করছে ওদের বিয়ে নিয়ে, বাবা কয়েক বছর শয্যাশায়ী,তাই মা একটু বেশি টেনশন করছে।কার্ড ছাপা হয়েছে, এখন যদি কিছু ঘটে, কি হবে! দেবাংশু শুনে বলে, চিন্তা করো না, আমরা আধুনিক যুগে বাস করছি, সেক্ষেত্রে দোষ কাটিয়ে নিতে হবে। ঘন্টা খানেকের মধ্যে রোহন পৌঁছে যায়। বিকালে রোহনের ঠাকুমা ইহলোকের মায়া ত্যাগ করে চলে যান। সুমেধা বাড়িতে ফোন করে শাশুড়ি মাকে জানায়।রোহন, পিসেমশাই,দেবাংশু শ্বশ্মানে চলে গেলে সুমেধা পিসিমাকে নিয়ে গাড়িতে রওনা দেয় পিসির বাড়িতে। রাস্তায় পিসি বলেন ভুগ ছিলেন মুক্তি পেলেন কিন্তু এখন বিয়ের দিন ঠিক হয়ে আছে, কি করবো ভাবতে পারছি না। সুমেধা: দোষ কাটিয়ে নিতে হবে, আমাদের এক আত্মীয়ের এই রকম সমস্যার সন্মুখীন হতে হয়েছিল, তুমি ঐ সব নিয়ে চিন্তা করো না।