Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » চক্ষুদান || Rana Chatterjee

চক্ষুদান || Rana Chatterjee

চক্ষুদান

“কি রে ভাই কাঁদছিস !আমার কাছে আয়…” বলে মৌ হাত বাড়িয়ে ভাই রণিতকে খোঁজার চেষ্টা করলো। ভাইয়ের ফোঁপানোর কান্না মোটেও ভুল শোনেনি সে যতই জন্মান্ধ হোক,ঘ্রাণ শক্তি বেশ প্রখর। মা ঘরে ঢুকে জানালো ভাই স্কুলের স্পোর্টসে চ্যাম্পিয়ন হয়ে বড়ো ট্রফি পেয়েছে।গোটা গ্রাম ঘুরে হিপ হিপ হুররে করে বাড়ি ফিরতেই কান্না, প্রিয় দিদি তো দেখতে পাবে না   উপহার। যে দিদি সকাল সন্ধ্যা তাকে উৎসাহ দেয় তার কিনা এত কষ্ট-এটা ভেবেই  নিজেকে সামলে রাখতে পারে নি রণিত।

মৌ জানে তাকে নিয়ে ভাইয়ের উদ্বেগের কথা।যখনই আক্ষেপ “ইস দিদি যদি দেখতে পেত “-প্রতিবারেই মৌ ভাইকে স্বান্তনা দিয়েছে ,”তুই বড় হয়ে ডাক্তার হয়ে না হয় আমার চোখে আলো ফেরাবি।”

আচমকা একটা সুযোগ আসতেই হাসপাতালের বেডে উৎকন্ঠায় সারাদিন শুয়ে মৌ। চোখের জটিল অপারেশন তার সফল হয়েছে ।এ এক দারুন তৃপ্তির খবর। আজ কিনা সে প্রথম পৃথিবীর আলো ,মা,বাবা,ভাইকে দেখবে! এ আনন্দানুভূতি কাউকে সত্যই বোঝানো দুস্কর।

এতদিন শুধুই অন্ধকার চোখে ভালোবাসা,স্নেহের অনাবিল স্রোত,দারিদ্রতার পাঞ্জা লড়াই ,তাচ্ছিল্য,বাবাকে হারানোর যাবতীয় কষ্ট  সব লিপিবদ্ধ আছে ।প্রবল শব্দে কড়া নাড়ছে ইচ্ছেরা,এতগুলো বছরের অনুভূতি,স্পর্শ  আক্ষেপ,আঁধার যাপন যেন এক লহমায় বানভাসি হবে আজ !

বুট জুতোর আওয়াজ।তবে কি ডাক্তার কাকু এলেন,এই বুঝি আসন্ন শুভ মুহূর্ত!শরীরটা কেঁপে উঠলো মৌয়ের। “চোখ খোলো, তাকাও-বলো কাকে প্রথম দেখতে চাও ?”

বাপরে ,ঝলমলে পৃথিবী,এত্ত সুন্দর!এত কাল অন্ধকার জগতে বিচরণ,কল্পনায় এই আলোর জগৎ সম্পর্কে ভাবনার অবসান। আলোর দ্যুতি যে কি জোরালো তা দেখেই শিহরিত মৌ।একি মা, উনি কে কাঁদছেন এভাবে?

অঝোর ধারায় এক মহিলা কেঁদেই চলেছেন তখনো।উদ্বিগ্ন মৌ,মা তুমি বলো উনি কাঁদছেন কেন?

গর্ভধারিনী মা মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন “উনি তোমার আর এক মা। দুর্ঘটনায় নিজের মৃত সন্তানের চক্ষুদানের আলোয় তুমি আজ উদ্ভাসিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress