Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।

আবার এক সেকেন্ডের জন্য

মিটমিটে হয়ে গেছে রাস্তার বাতিগুলো, কুয়াশা না ধোঁয়াশা এত গাঢ়। লাল ল্যান্ডরোভার আস্তে এগোচ্ছিল শরৎ বোস রোড ধরে। সত্যিই কি আলেয়ার পেছনে দৌড়চ্ছেন? কর্নেল ভাবছিলেন। কিন্তু বারবার মনে ভেসে উঠছিল বিমলকুমারের ঘরে দেখা প্রকাণ্ড চৌকো ক্যানভাসে আঁকা বিমূর্ত ছবিটা। ছোরাবিদ্ধ মানুষের হুমড়ি খেয়ে পড়া, দু চোখে বিস্ময়।

নাকি ছবিটাতে ভুল দেখা দেখেছেন? বিমূর্ত চিত্রকলা বড় গোলমেলে। সাপ দেখতে ব্যাং দেখা যায়। দ্রষ্টার নিজের মনের চিন্তাভাবনা, অবচেতন কোনো ধারণা সবসময় কোনো বিমূর্ত চিত্রকলায় প্রতিফলিত হতে পারে, এও সত্য। দেখছি একটা মানুষ অথচ চিত্রকর মানুষই আঁকেননি আদতে। এঁকেছেন হয়তো নিজেরই টুকরো-টুকরো ভাবনা দিয়ে অন্য কিছু। কিংবা নিছক রঙের ছোপে অর্থহীন উদ্ভট যা-খুশি এঁকেছেন। একবার ইউরোপে কোন বিমূর্ত চিত্র প্রদর্শনীতে শিম্পাঞ্জির আঁকা ছবি নাকি প্রথম পুরস্কার পেয়েছিল!

কর্নেল হাসলেন। বিমূর্ত চিত্রকলার মধ্যে চালাকিও থাকে বৈকি! যে সঠিকভাবে একটা দেশলাই আঁকতে পারে না, সেও সহজে বিমূর্ত চিত্র এঁকে আজকাল তাক লাগিয়ে দেয়। কট্টর কলা-সমালোচকও মনের মাধুরী মিশিয়ে সেটি দেখে প্রশংসায় উচ্ছ্বসিত হন।

হুঁ, টেকনিকাল বিচার বলে একটা কথা আছে। কিন্তু সমস্যা হলো, কোনো রীতির কাঠামো তৈরি হয়ে গেলে সেই কাঠামোর অনুকরণ সহজ হয়ে যায়। কবিতায় যেমনটি হয়েছে। একটা স্ট্রাকচার তৈরি হয়ে গেছে। এখন তার নকল করে অসম্বন্ধ শব্দের আঁক সাজিয়ে তোলা স্কুলের বালকের পক্ষেও সহজ।

সত্যিই কি ছোরাবিদ্ধ মানুষের ছবি দেখেছেন বিমলকুমারের ঘরে? আবার একবার যাওয়া দরকার ওখানে। দিনের বেলায় গিয়ে ভাল করে দেখতে হবে এবং চিত্রকরের কাছে প্রশ্ন করে জেনে নিতে হবে ওটা কিসের ছবি।

সার্কুলার রোডে ঢুকলে ব্যাকভিউ মিররে চোখ রেখে একটু নড়ে বসলেন কর্নেল। তাঁর এক মন চিন্তা করে, অন্য মন চারদিকে লক্ষ্য রাখে। এটা অভ্যাসের ব্যাপার। দেশপ্রিয় পার্কের ওখান থেকে একটা জিপ তার পেছনে আসছে। সার্কুলার রোডেও সেটা তাঁর অনুগামী। বাঁদিকে না ঘুরে সোজা সার্কাস এভিনিউতে ঢুকলেন। দুধারে ঘন গাছ। ল্যাম্পপোস্টের আলোগুলো ঢাকা পড়েছে। রাস্তাটা অন্ধকার হয়ে আছে প্রায়।

এবার দেখলেন পেছনের গাড়িটা গতি বাড়িয়েছে। কামানের একজোড়া গোলার মত হেডলাইট দেখতে দেখতে মুহূর্তে কাছে এসে পড়ল। ইনটুইশন! দ্রুত গিয়ার চেঞ্জ করে অ্যাকসিলেটরে চাপ দিয়ে ল্যান্ডরোভার বাঁদিকের গলিতে ঢুকিয়ে দিলেন। জিপ গাড়িটা পিছলে সোজা চলে গেল। মাত্র এক সেকেন্ডের জন্য প্রচণ্ড দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে গেল লাল ল্যান্ডরোভার।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress